পেইচিং ২০০৮ অলিম্পিক গেমসের আধুনিক পেন্টাথলনের কিছু ইভেন্ট আর হ্যান্ড-বল প্রতিযোগিতা পেইচিং অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।
পেইচিং অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্র ১৯৮৭ সালে নির্মিত হয়। এ কেন্দ্রে বড় ও মাঝারী আকারের স্টেডিয়াম রয়েছে। পেইচিং অলিম্পিক গেমস আয়োজনের জন্য পেইচিং অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্রকে আরো সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এ ক্রীড়া কেন্দ্রের পুব দিকের ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে প্রথমেই চোখে পড়বে অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্র স্টেডিয়াম প্রথমে। স্টেডিয়ামটির মেঝের আয়তন প্রায় ৩০ হাজার বর্গমিটার। অলিম্পিক গেমসের সময় এখানে ৫ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি দর্শক একসঙ্গে খেলা দেখতে পারবেন। স্টেডিয়ামের প্রধান ভবন সাদা রঙের। গোটা ভবনের ওপরটা চীনের ঐতিহ্যিক স্টাইলের ছাদে আচ্ছাদিত। চীনের গভীর স্থাপত্য বৈশিষ্টের কারণে স্টেডিয়ামটি অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্রের প্রতীক স্থাপত্যে পরিণত হয়েছে।
অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্র স্টেডিয়াম কেন্দ্রটির ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সময়ে এখানে অশ্বারোহণ ও দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই স্টেডিয়ামের মাঠে ম্যাট রানওয়ে, অপটিক্যাল ফাইবার টেলিযোগাযোগ ও বড় আকারের রঙিন ডিসপ্লেসহ উন্নত মানের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও টেলিযোগাযোগ সাজসরঞ্জাম বসানো হয়েছে। ১৯৮৯ সালে ১১তম এশীয় গেমসের জন্য এই স্টেডিয়াম নির্মিত হয়। তখন স্টেডিয়ামের আয়তন ছিল প্রায় ২০ হাজার বর্গমিটার এবং দর্শক আসন ১৮ হাজার। পেইচিং ২০০৮ অলিম্পিক গেমসের জন্য পেইচিং পৌর সরকার এই স্টেডিয়ামের সম্প্রসারিত অংশ নির্মাণ করেছে। নির্মাণের পর স্টেডিয়ামের মেঝের আয়তন ৩৭ হাজার বর্গমিটার এবং দর্শক আসন ৪০ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ । আয়তন বাড়ার পাশাপাশি আরো অনেক উন্নত মানের সাজসরঞ্জাম বসানো হয়েছে। যেমন বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের স্বয়ংক্রিয় পানি , অগ্নি নির্বাপন ও নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা ইত্যাদি। তা ছাড়া বিপুল পরিমাণে অতিরিক্ত কক্ষ ও বক্স নির্মিত হয়েছে।
সংস্কার কাজ সবসময়্ই কঠিন। সংস্কারের পর অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্রের স্টেডিয়ামের আয়তন আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, স্টেডিয়ামের আশেপাশের অনেক জায়গা ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এ কাজের সমস্যা অনেক ।কোনো জায়গার পুরোটা ভেঙে ফেলা খুব কঠিন না হলেও একটা পুরোনো ভবনের আংশিক ভাঙাটা খুব কঠিন। কারণ কিছু কিছু অংশ আবার স্টেডিয়ামের মূল ভবনের সঙ্গে লাগোয়া, যা ভাঙা সম্ভব নয়। ফলে এসব ক্ষেত্রে বিস্ফোরক ব্যবহার করা যায় না । এই সমস্যা সমাধানের জন্য চীনের প্রযুক্তিবিদরা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের কর্তন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। তারা স্থাপত্যের ইস্পাত কাঠামো এক টুকরো এক টুকরো করে কেটে আগের কাঠামোটি রক্ষা করেছেন।
১৯ বছরের পুরনো অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্র স্টেডিয়াম ওপর নতুন কাঠামো চাপিয়ে দিলে আদৌ টিকবে কিনা মানুষের মনে সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছিল।স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তিবিদরা স্টেডিয়ামের প্রধান কাঠামোর ওপর ১৪৪টি নাইটহেড বসিয়েছেন । এর ফলে নতুন নির্মিত স্টেডিয়াম রিক্টার স্কেল ৮ ডিগ্রি ভূমিকম্পের মধ্যেও দিব্যি টিকে থাকতে পারবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমানে এ দুটি স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পেইচিং শহরে আরো দুটি আধুনিক বড় স্টেডিয়ামের জন্ম হয়েছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
|