v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-18 16:34:30    
ইরানের পারমাণবিক সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নমনীয় অবস্থান

cri
    মার্কিন সরকার ১৬ জুলাই ঘোষণা দিয়েছে যে, রাজনীতি বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম বার্নস ই'ইউ'র কূটনীতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধি হ্যাভিয়ের সোলানা এবং ইরানের পরমাণু আলোচনার প্রধান প্রতিনিধি সায়িদ জালিলির সঙ্গে ১৯ জুলাই জেনেভায় অনুষ্ঠেয় পরমাণু সংক্রান্ত বৈঠকে অংশ নেবেন। এতে পরিস্কার যে, ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব কিছুটা নমনীয় হয়েছে।

    ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক ছেদ হওয়ার পর থেকে দু'দেশের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হয়নি। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে শয়তানের আঁখড়া হিসাবে আখ্যা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলে আসছিলো যে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা বন্ধ করার আগে ইরানের সঙ্গে তারা সরাসরি কোনো বৈঠক করবে না এবং ইরানে বল প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিত্সা রাইসের সমর্থনে বার্নস ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কূটনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরিরও প্রস্তুতি নিয়েছেন। বার্নস এবং জালিলির বৈঠক এ দু'টি দেশের মধ্যে ৩০ বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠলে, তা হবে ৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিবিদ পাঠানোর ঘটনা।

    ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি যে বদলেছে তা শুধু দু'দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আদান-প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। গত কয়েক সপ্তায় ইরানের জন্য ওয়াইট হাউস একটি কল্যাণকর পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছে। তাতে বল প্রয়োগ না করে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধান করা, ইরানের সঙ্গে তার নিরাপত্তা সমস্যা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করা এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক ভূমিকা পালনে ইরানকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। একই সঙ্গে ইইউ ও ইরানের মধ্যে প্রাথমিক বৈঠককে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে এবং ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের একতরফা সামরিক তত্পরতারও বিরোধিতা করেছে।

    মার্কিন কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নমনীয় অবস্থানের প্রধান কারণ হলো, ইরানের ওপর অর্থনীতির শাস্তি যে তেমন কোনো প্রভাব ফেলছে না, তা যুক্তরাষ্ট্র উপলদ্ধি করতে পেরেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইরানও তার নীতি কিছুটা বদলেছে এবং কিছু সমস্যায় সমঝোতার জন্য চেষ্টাও চালাচ্ছে। গত কয়েক বছর, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আদান-প্রদান নেই । ইরানের সঙ্গে বৈঠক করা এ কার্যক্রমকে ইউরোপীয় দেশগুলোকে দেয়া হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আশা করে, ইরান সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলে তাদের কথা শুনবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্য দেশ ও জার্মানী এবং ইরানের মধ্যে বৈঠক চলাকালে বিভিন্ন দেশের স্বার্থ আলাদা বলে এ থেকে বিস্তারিত ফলাফল অর্জন করা খুব কঠিন। ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যথার্থ অবস্থান যাতে বিভ্রান্তিতে না পড়ে সে জন্য জেনেভায় প্রাথমিক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা নমনীয় হলেও তার মৌলিক অবস্থানের তেমন কোনো হেরফের হয় নি। গত দু'বছর ধরে ইরানের পারমাণবিক সমস্যায় বুশ সরকারের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গী বজার রেখেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা দ্রুত বন্ধ করার পরই কেবল আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হতে পারে বলে অনুরোধ জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেছেন, এটা যুক্তরাষ্ট্র এবং ই'ইউরের অন্য দেশগুলোর অভিন্ন অবস্থান এবং এটা এখনো পর্যন্ত পরিবর্তিত হয় নি। তা ছাড়া, হোয়াইট হাউস বার বার জোর দিয়ে বলেছে, বার্নস এবং জালিলীর বৈঠক মাত্র একবারের জন্য। এ বৈঠকে বার্নস প্রধানত জালিলির মতামত শুনবেন। এতে বোঝা যায় যে, এ বৈঠক বাস্তব ফলাফল অর্জনের বড় সম্ভাবনা নেই ।

    কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকান্ড থেকে পরিস্কার যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের প্রতি সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা বাদ দিয়েছে। সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল সামরিক অভিযান চালাতে পারে বলে সারা বিশ্ব উদ্বিগ্ন ছিল। এ পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান বাদ দেয়ার ইঙ্গিত উদ্বেগ কিছুটা কমিয়েছে। বিশ্বের প্রধান তেল উত্পাদক দেশগুলোর অন্যতম ইরান। যুদ্ধের উদ্বেগ কমে গেলে তার প্রভাব হয়তো আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের উচ্চ মূল্যের ওপরে কিছুটা পড়বে।