চলিত বছরের জুন মাসে ২০১৬ সালের গ্রীষ্কালীন অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক হওয়ার জন্য ৭টির মধ্যে প্রথম ৪টি শহরের তালিকায় থাকার প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে দোহা। কাতার জাতীয় অলিম্পিক কমিটির মহাসচিব সউদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি সম্প্রতি বলেন, দোহা অব্যাহতভাবে ২০২০ সালের অলিম্পিক গেমসের জন্য আবেদন করে যাবে। পাশাপাশি কাতার বিশ্বের ক্রীড়া শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করবে।
২০১৬ সালের অলিম্পিক গেমসের জন্য ব্যর্থ আবেদনের ব্যাপারে সউদ দুঃখ করে বলেন, কাতার অব্যাহতভাবে ২০২০ সালের অলিম্পিক গেমসের আবেদন করে যাবে।
আমরা ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেছি। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা শ্রদ্ধশীল।
তিনি আরো বলেন, দোহা অব্যাহতভাবে ২০২০ সালের অলিম্পিক গেমসের আবেদন করবে এবং ৭ আগষ্ট পেইচিং অলিম্পিক গেমস শুরু হওয়ার এক দিন আগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। তিনি বলেন,
কাতার অলিম্পিক কমিটি বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ গেমসের আগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। গত মাসে ম্যাকাওয়ে অনুষ্ঠিত ইনডোর এশীয় গেমসের সময় আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি। আমরা ৭ আগষ্ট সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করবো। এটা আমাদের অলিম্পিক গেমসের আবেদনের প্রস্তুতি কাজ। শুধু তা নয়। বরং আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীন এবং বিশ্বকে কাতারের ক্রীড়া শিল্পের উন্নয়ন সম্পর্কে জানাতে চাই।
সউদ আরো বলেন, কাতারের যুবরাজ, কাতার অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান তামিম বিন হামাদ আল-থানি এবং তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবেন। তারা বিশ্বাস করেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অলিম্পিক গেমস হবে। তিনি বলেন,
আমরা বিশ্বাস করি, চীনের অলিম্পিক গেমস কমিটি এবং সকল চীনা জনগণ সবচেয়ে সফল অলিম্পিক গেমস আয়োজনের যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবে।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসে চীন কেমন ফলাফল করবে সে সম্পর্কে সউদ বলেন,
এথেন্স অলিম্পিক গেমসে চীন দ্বিতীয় স্থানে ছিল। আমি মনে করি, এবারের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে চীনের স্বর্ণ পদকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হবে।
কাতার অলিম্পিক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে "বিশ্ব ক্রীড়া তহবিল" নামের দশ বছরমোগদী বিশ্ব তরুণ-তরুণীদের ক্রীড়া উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ পরিকল্পনা চালু করেছে। এর লক্ষ্য হলো ক্রীড়ায় অংশ নেয়ার জন্য ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদেরকে অনুপ্রেরণা দেওয়া এবং মাদকদ্রব্য ও অপরাধ দূর করা। ক্রীড়া শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ ক্ষেত্রে কাতারের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সউদ বলেন, এর আগে কাতার "স্কুলের অলিম্পিক দিবস" এবং "অলিম্পিক দিবসের দূরপাল্লার দৌঁড়"সহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করেছে। এর লক্ষ্য হলো ক্রীড়া তত্পরতায় অংশ নেয়ার জন্য তরুণ-তরুণীদেরকে অনুপ্রেরণা যোগানো, পারস্পরিক সমঝোতা, মৈত্রী ও ভালোবাসার বিকাশ ঘটানো এবং ক্রীড়ার চেতনা প্রচার করা। ফলে তরুণ-তরুণীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকশিত হয়েছে। তিনি বলেন,
আমরা কাতারসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রীড়া শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য অনেক কাজ করেছি। এর মধ্যে একটা হলো "বিশ্বের ক্রীড়া তহবিল"সম্প্রসারণ করা। কিন্তু আমাদের আরো অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো কাতারকে "বিশ্ব ক্রীড়া তহবিলের" সদর দফতর হিসেবে গড়ে তোলা। আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে ইচ্ছুক। এখন কাতার এই কার্যক্রম চালু করছে। তাছাড়া, আমরা আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছেও বিষয়টি জনপ্রিয় করে তুলছি। আমরা যে কোন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।
"বিশ্ব ক্রীড়া তহবিল" হচ্ছে কাতারের অলিম্পিক কমিটি এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘের কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত। এই তহবিল প্রতি বছর বেসরকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বিভিন্ন দেশে মোট ৭টি তরুণ-তরুণীর ক্যাম্পের আয়োজন করে প্রতি বছর তহবিলের ব্যয় এক লাখ মার্কিন ডলারের মতো। ২০০৭ সালে এই তহবিল যুদ্ধকালীন লেবাননে প্রথম বারের মতো তরুণ-তরুণীদের ক্যাম্প আয়োজন করে। বিভিন্ন পটভূমির তরুণ-তরুণীরা ক্যাম্পে অংশ নেন এবং তহবিল ভাল ফলাফল পায়। (লিলি)
|