v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-23 19:48:29    
অলিম্পিক্স ইতিহাসের বিশ্ব বিখ্যাত নারী চ্যাম্পিয়নরা

cri
অলিম্পিক হচ্ছে অলিম্পিক গেমসের উত্পত্তিস্থান। সৃষ্টপূর্ব ৭৭৬ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রাচীন গ্রীসের অলিম্পিক গেমসের ১১০০ বছরের দীর্ঘ ইতিহাস ছিল। প্রচীন অলিম্পিক গেমস শুধু পুরুষদের গেমস, নারীরা এই গেমসে যোগ দিতে পারতো না।

১৯০০ সালে, অলিম্পিক গেমস ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়। এবার নারীরা প্রথম বারের মতো টেনিস ও গোলফ প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। চারটি দেশের ১৯জন নারী ক্রীড়াবিদ এ দু'প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। এর মধ্যে ব্রিটেনের ক্রীড়াবিদ কূপার নারীদের টেনিসের একক দফায় চ্যাম্পিয়ন হন, এবং অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসের প্রথম নারী চ্যাম্পিয়ন হন। এর পরের অলিম্পিক গেমসে নারী ক্রীড়াবিদের জন্যে আরচেরী, সাঁতার ইত্যাদি প্রতিযোগিতা সংযোজিত হয়। ১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক গেমসের কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে নারীদের প্রতিযোগিতা স্বীকার করেছে।

১৯২৮ সালে আমস্টার্ডাম অলিম্পিক গেমসে নারীদের ট্রাক আর ফিল্ড প্রতিযোগিতা প্রথম সংযোজিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর, আরো বেশি নারীদের প্রতিযোগিতা অলিম্পিক গেমসের অন্তভূক্ত করা হয়। সিডনি অলিম্পিক গেমসে নারী ক্রীড়াবিদের সংখ্যা ৪০৬৯ হয়, এতে প্রমাণিত হয় যে, নারীরা অলিম্পিক গেমসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এখন আমি আপনাদেরকে দশজন সবচেয়ে বিখ্যাত নারী চ্যাম্পিয়ন সম্পর্কে পরিচয় দেবো।

লাংফিং : লাংফিং চীনের নারী ভলিবল দলের সদস্য হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোস আনজেলেস অলিম্পিক গেমসে যোগ দেন। চীনের দল ৩:০ গোলে যুক্তরাষ্ট্রের দলকে পরাজিত করে। লাংফিং স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

১২বছরের পর, লাংফিং চীনের নারী ভলিবল দলের কোচ হিসেবে আটলানটা অলিম্পিক গেমসে যোগ দেন। তাঁর নেতৃত্বে চীনের নারী ভলিবল দল রানার্স-আপ হয়। সেজন্যে, লাংফিং দলের সদস্য আর কোচ হিসেবে অলিম্পিক গেমসে পদক অর্জনকারী প্রথম নারী ক্রীড়াবিদ হন।

তেংইয়াফিং: ১৯৯২ সাল আর ১৯৯৬ সালে দু'বার অলিম্পিক গেমসে তেংইয়াফিং নারীদের টেবিলটেনিস একক আর দ্বৈত দফায় চারটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তিনি এবং চীনা নারী ক্রীড়াবিদ ফুমিংসিয়া চীনের অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী স্বর্ণপদক অর্জন করেন। অবসর নেয়ার পর, তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক গেমসে কমিটি সদস্য হন এবং তিনিই এই কমিটিতে প্রথম চীনা অলিম্পিক গেমসের চ্যাম্পিয়ন।

রোত্তেনবার্গ: ১৯৮৮ সালে কালগারি শীতকালীন অলিম্পিক গেমসে পূর্ব জার্মানীর ক্রীড়াবিদ রোত্তেনবার্গ নারীদের এক হাজার মিটার স্পীড স্কেটিংয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন, এবং নতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেন। কয়েক মাসের পর সেউল অলিম্পিক গেমসে তিনি নারীদের এক হাজার মিটার সাইকলিংয়ে রৌপ্যপদক অর্জন করেন। তিনি ইতিহাসে একমাত্র ক্রীড়াবিদ যিনি শীতকালীন এবং গ্রীষ্মকালীন উভয়অলিম্পিক গেমসে পদক অর্জন করেন।

১৯৩৬ সালে বার্লিন অলিম্পিক গেমসে কোহেন নারীদের ৪×৪০০ মিটার রিল প্রতিযোগিতায় যোগ দেন। লন্ডন অলিম্পিক গেমসে তিনি দু'জন শিশুর মা ছিলেন। তবুও ১০০ মিটার আর ২০০ মিটার দৌড় , ৮০ মিটার হার্ডলস রেসে ও ৪×৪০০ মিটার রিলে প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। তিনি ২০ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ নারী ক্রীড়াবিদ নামে আখ্যায়িতা।

ইরেনা সেওয়িনস্কা:১৯৬৪ সাল টোকিও অলিম্পিক গেমস থেকে পোল্যান্ডের ট্রাক আর ফিল্ড ক্রীড়াবিদ ইরেনা সেওয়িনস্কা মোট পাঁচবার অলিম্পিক গেমসে যোগ দেন। তিনি ১০০ মিটার দৌড়, ৪০০ মিটার দৌড়, লাং জাম্প ও রিলে প্রতিযোগিতায় সাতটি পদক অর্জন করেন, তাতে দু'টি স্বর্ণপদক। সেজন্যে, তিনি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী বার অলিম্পিক গেমসে যোগ দেওয়া এবং সবচেয়ে বেশী দফায় পদক অর্জনকারী নারী ক্রীড়াবিদ হন।

ফু মিংসিয়া: ১৯৯২ সালে বার্সেলোনা অলিম্পিক গেমসে নারীদের ১০মিটার প্ল্যাটফর্ম ডাইভিংয়ে ১৪ বছর বয়সের চীনা ডাইভার ফু মিংসিয়া তাঁর প্রথম অলিম্পিক গেমসের স্বর্ণপদক অর্জন করেন, তিনি অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে সবচেয়ে তরুন চ্যাম্পিয়ন হন। চার বছর পর আটল্যান্টা অলিম্পিক গেমসে তিনি আবার ১০ মিটার প্ল্যাটফর্ম ডাইভিংয়ের স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তিনি তিন মিটার স্প্রীংবোর্ড ডাইভিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। সিডনি অলিম্পিক গেমসে তিনি আবার যোগ দেন, তিন মিটার স্প্রীংবোর্ড ডাইভিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। তিনি একটানা তিনবার তিন মিটার স্প্রীবোর্ড ডাইভিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। তাঁকে ডাইভিং রানী নামে আখ্যায়িত।

ওত্তো: ১৯৮৮ সালে সেউল অলিম্পিক গেমসে পূর্ব জার্মানীর সাঁতারু ওত্তো ছয়টি স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তিনি একটি অলিম্পিক গেমসে সবচেয়ে বেশী স্বর্ণপদক বিজয়ী নারী ক্রীড়াবিদ। তাছাড়া, তিনি বুক সাঁতার ছাড়াও অন্য তিন দফায় স্বর্ণপদক অর্জন করেন। আজ পর্যন্ত কোনো পুরুষ ক্রীড়াবিদ তাঁর মতো করতে পারেন নি।

লাটি নিনা: ১৯৫৬ সালে মেলবুর্ন অলিম্পিক গেমস থেকে পাক্তন সোভিয়েত ক্রীড়াবিদ লাটি নিনা তিনবার অলিম্পিক গেমসে যোগ দেন। তিনি মোট নয়টি স্বর্ণপদক, পাঁচটি রৌপ্যপদক ও চারটি ব্রোঞ্জপদক অর্জন করেন। তিনি অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী স্বর্ণপদক আর পদক বিজয়ী ক্রীড়াবিদ।

চাংশান: ১৯৯২ সালে বার্সেলোনা অলিম্পিক গেমসে চীনা ক্রীড়াবিদ চাংশান স্কীটে স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তখন তিনি ছাড়া সবাই পুরুষ ক্রীড়াবিদ, সেবারকার অলিম্পিক গেমসের পর স্কীট উঠিয়ে নেয়া হয়। তিনি একমাত্র নারী ক্রীড়াবিদ যিনি পুরুষ ক্রীড়াবিদদেরকে পরিজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন।

নাদিয়া কোমানেসি:১৯৭৬ সালে মন্ট্রিল অলিম্পিক গেমসে ১৪ বছর বয়সের রোমানিয়ার নাদিয়া কোমানেসি অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে নারীদের আনিভেন বার্স প্রতিযোগিতায় প্রথম ফুল মার্ক নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। পাঁচদিন প্রতিযোগিতায় তিনি মোট সাত বার ফুল মার্ক অর্জন করেন। তিনি সেবারকার অলিম্পিক গেমসের সবচেয়ে স্বাগতিত ক্রীড়াবিদ নামে আখ্যায়িত। তিনি তিনটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

ফ্রাইজার: ১৯৫৬ সালে মেলবৌর্ন অলিম্পিক গেমসে ফ্রাইজার প্রথমে নারীদের সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হন। তিনি অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে একমাত্র নারী সাঁতারু যিনি একটানা তিনবার গেমসে একই ইভাণ্টে চ্যাম্পিয়ন হন।