এদিন রাষ্ট্রীয় পরিষদ কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মশাল সাফল্যের সঙ্গে বিশ্বের সবচে' উচু পর্বত----জু মু লাং মা'র সৃঙ্গে পৌঁছেছে। চীনের বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রী ওয়াং কাং বলেন, মশাল সাফল্যের সঙ্গে জু মু লাং মা পাহাড়ে পৌঁছানো হচ্ছে বিশ্ব অলিম্পিক ক্রীড়া ক্ষেত্রে চীনের বিশেষ অবদান রাখা। তিনি বলেন , দু'বছর আগে, চীনের বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রণালয় চীনের রাষ্ট্রীয় পর্বতারোহী দল এবং ছিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মশাল হস্তান্তর সংক্রান্ত ব্যাপারে বেশ কয়েকবার আলাপ আলোচনা করেছে।

    পরিবেশ সুরক্ষা, দূষণমুক্ত জ্বালানি সম্পদ এবং তথ্য যোগাযোগসহ ৬টি ক্ষেত্রের বৈজ্ঞানিক মান উন্নীত করার লক্ষ্যে২০০৭ সালের আগস্ট নাগাদ চীনের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ মোট ৬ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করেছে।

    ২০০৮ সালের অলিম্পিক গেমস প্রায় আসন্ন । চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে প্রস্তুতির কাজ এখন পুরোদমে চলছে । এবারের গেমস ভালভাবে আয়োজনের জন্য পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সাংগঠনিক কমিটি " বৈজ্ঞানিক অলিম্পিক"-শ্লোগান নির্ধারণ করেছে। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে ভিত্তিক উপায়ে কীভাবে অলিম্পিক তথ্য যথাযথভাবে বিশ্বের জনগণকে জানানো হবে? তা হচ্ছে এ ক্ষেত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

    পেইচিং মহানগর একটি পুরনো রাজধানী । পেইচিংয়ের রাজধানী হওয়ার ইতিহাস সাড়ে আট শ' বছরেরও বেশি সময়ের। শহরের সব স্থানেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অনেক পুরাকীর্তি রয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সংরক্ষিত পুরাকীর্তির সংখ্যা দু হাজারের বেশি । দীর্ঘ দিন থাকার কারণে চীনের কিছু ঐতিহ্যিক স্থাপত্য নষ্ট হতে শুরু করেছে । এ সব পুরনো স্থাপত্য সংরক্ষণে আগুন ও বজ্রপাত প্রতিরোধের ব্যবস্থাও ছিল না। ২০০০ সালে পেইচিং পৌর সরকার পুরাকীর্তি মজবুত ও মেরামতের জন্য ৩৩ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করেছিল। এই ৩৩কোটি সরকারী বরাদ্দের সাহায্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিভিন্ন অঞ্চল ও জেলা থেকে এবং সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের অনুদানসহ মোট ৫ বিলিয়ন ইউয়ান সংগ্রহ করে। এই অর্থ দিয়ে তিন বছরের মধ্যে পেইচিংয়ের সব পুরাকীর্তি ও পুরানিদর্শনের মেরামত করা হয়েছে । চীনের পুরাকীর্তি সংরক্ষণের ইতিহাসে এত বড় আকারের সংস্কারের কাজ ফলতে গেছে বিরল । তবে এবারের অলিম্পিক গেমসে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রচারের জন্য অনেক সহায়ক হবে।

   সম্প্রতি, তৃতীয় সংবাদ বৈজ্ঞানিক ফোরাম পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা----সিনহুয়া বার্তা সংস্থার উপপ্রধান লু ওয়েই এক ভাষণে বলেছেন, প্রযুক্তি অলিম্পিক গেমসের তথ্য প্রচারের কাজে অনেক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন ' বৈজ্ঞানিক অলিম্পিক' হচ্ছে ভিত্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হচ্ছে অলিম্পিক সাফল্যের সঙ্গে শেষ হওয়ার সুনিশ্চয়তা। এ থেকে বুঝা যায় যে, ' পেইচিং অলিম্পিক গেমস----২০০৮' সংক্রান্ত প্রচারের কাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

    সম্প্রতি চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল ব্যুরো "বেসামরিক বিমানচলাচল পরিচালনা সংক্রান্ত অলিম্পিক গেমস সুরক্ষা কর্মসূচী" কার্যকর করেছে। এর ফলে ২০০৮ সালে পেইচিং অলিম্পিক গেমস চলাকালে আকাশের নিরাপত্তা সার্বিকভাবে সুরক্ষিত হয়েছে। কর্মসূচীতে বলা হয়েছে, পেইচিং, থিয়েনচিন , ছিনতাওসহ অলিম্পিক গেমস আয়োজনকারী শহরগুলোয় বিমান চলাচলের জন্যে বিমান সীমা, বিমান লাইন এবং উড্ডয়নের সীমিত অঞ্চল নির্ধারণ করে দেয়া হবে। পেইচিংসহ বিভিন্ন মহা নগরের মধ্যে জরুরী বিমান লাইন গড়ে তোলা হবে। এর পাশাপাশি অনুষ্ঠান আয়োজনকারী শহরগুলোতে টেলিযোগাযোগ , লক্ষ্যভেদী ব্যবস্থা,আবহাওয়া ব্যবস্থা এবং আকাশ পরিচালনা সংক্রান্ত পরিসেবা ব্যবস্থা স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে।

    এবারের অলিম্পিক গেমসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার করা। চীনের ইন্টারনেট যোগযোগ লিমিটেড কোম্পানির অলিম্পিক টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপপ্রধান চাং লিং বলেছেন , এবারের অলিম্পিক গেমসে সংশ্লিষ্ট অলিম্পিক তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিদেশে দ্রুত পাঠানো সক্ষম হবে। আমি ভাবছি টেলিযোগাযোগ বিষয় কি বেশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিয়তা দিতে পারবে।

    তাছাড়া চীনের বেসামরিক ব্যুরো পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের সমন্বিত ব্যবস্থা প্রণয়ন করবে। রাষ্ট্রীয় অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির সঙ্গে বিনিময় জোরদার করবে। যাতে বিশেষ বিমান ও গুরুত্বপূর্ণ উড্ডয়নের কর্মসূচী যথাশীঘ্র নিশ্চিত করা যায়।