ই ইউ কমিটির বাণিজ্য বিষয়ক সদস্য পিটার ম্যান্ডেলসন কিছু দিন আগে লন্ডনে বলেছেন , তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমস বর্জনকে সমর্থন করেন না ,কারণ এটা ইউরোপ ও চীনের স্বার্থ ক্ষুন্ন করবে । তিব্বত সমস্যায় পাশ্চাত্য দেশগুলোর উচিত প্রতিরোধের পরিবর্তে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করা ।
ই ইউ কমিটির বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি প্রণয়নকারী হিসেবে ম্যান্ডেলসন বাণিজ্য ও রেনমিনপির বিনিময় হার সমস্যায় চীনের উপর একাধিক বার চাপ সৃষ্টি করেছিলেন । চীনের সঙ্গে বৈঠকের সময় ম্যান্ডেলসন অনেক বিষয়ে সহজে নিজের অবস্থান থেকে পিছু হটতে চান না। কিন্তু তিনিসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, পন্ডিত ও সাধারণ মানুষের পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে সমর্থন করা ও স্বাধীন তিব্বত অপপ্রয়াসের বিরোধিতা করা থেকে বোঝা যায় , যদিও তিব্বতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সুযোগে সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে ও পাশ্চাত্যদেশগুলোর কিছু উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ব্যক্তি এ সুযোগে চীনের ওপর দোষারোপ করছে , তবু বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ চীন সম্পর্কে বাস্তব ও যথাযথ মূল্যায়ন করছেন ।
যথাযথ মূল্যায়ন আসে সমঝোতা থেকে । চীনের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার শক্তিশালী প্রতিনিধি ম্যান্ডেলসনের পেইচিং অলিম্পিক গেমস ও তিব্বতের সহিংস ঘটনা সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়নের প্রধান কারণ হলো তিনি চীনের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছেন এবং চীন সম্পর্কে বেশি জানেন ।
চীনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক গবেষণাগারের ই ইউ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান সিং হুয়া বলেন , মোটের উপর বলতে গেলে ম্যান্ডেলসন যে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বজায় রাখার প্রস্তাব করেছেন , তার কারণ হলো তিনি চীনের উন্নয়নের ভালো প্রবণতা ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে চীনের অধিক থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখেছেন । তিনি উল্লেখ করেন , ম্যান্ডেলসন ও অন্যান্য বিজ্ঞ ব্যক্তির চোখে চীন দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে ক্রমেই আরো বড় ভুমিকা রাখছে । অর্থনীতি ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে ইউরোপ ও চীনের স্বার্থ অভিন্ন ,তাই চীনের সংস্কার ও উন্নয়ন ইউরোপের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ।
শুধু ম্যান্ডেলসন নয় , বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক মানুষ তিব্বত ও চীনের অবস্থা সম্পর্কেজানেন , তাই তারা চীন ও তিব্বত সমস্যা নিয়ে যথাযথ মূল্যায়ন করেছেন । ভারতের ' দ্য হিন্দু' পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নরসিমহাম রাম ২১ এপ্রিল প্রথম পেইচিং মানবাধিকার ফোরামে বলেন , তিব্বত , সিছুয়ান , কান সু , ইউনান ও ছিনহাই প্রদেশের তিব্বতী অধ্যুষিত অঞ্চলে মানবাধিকার নিশ্চিত করার নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । এ সব স্থানের বাস্তব অবস্থার সঙ্গে দালাই লামা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির প্রচারের কোনোমিল নেই । রাম গত সাত বছরে দু বার তিব্বত সফর করেছেন , তাই তিব্বতের বাস্তব অবস্থা তিনি নিজের চোখে দেখেছেন ।
ব্রাজিলের একটি টি ভি কেন্দ্রের সাংবাদিক আন্না পলা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চীনে এক মাস সফর করেন । তিনি বলেন , চীন সম্পর্কে আমার প্রথম ধারণা আমি ব্রাজিলে পেয়েছি । দুটি দেশের বিরাট ব্যবধানের কারণে দু দেশের সংস্কৃতির মিল কম । চীনে এসে আমি জানতে পেরেছি চীন সম্পর্কে অনেক অসত্য প্রচার আছে । আমরা চীনের অনেক অধিবাসীর সাক্ষাত্কার নিয়েছি । গরীবরাও বলেন , তাদের জীবন আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে এবং তারা জীবন সম্পর্কে সন্তুষ্ট ।
পশ্চিমা দেশগুলোর রাজনীতিবিদ ও তথ্য মাধ্যম তিব্বত সমস্যা কাজে লাগিয়ে যে চীনের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছে , এতে বোঝা যায় , তারা চীনের বাস্তব অবস্থা ও তিব্বতের ইতিহাস সম্পর্কে কম জানেন । চীন সম্পর্কে আরো বেশি জানার জন্য নিজের চোখে দেখা ও শোনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আগামী আগষ্ট মাসে অনুষ্ঠেয় পেইচিং অলিম্পিক গেমস বিদেশীদের চীনের কাছে আসার ও চীনকে জানার সুযোগ এনে দেবে । নিজের চোখে পর্যবেক্ষণকরলে আপনি প্রকৃত চীনকে দেখতে পাবেন ।
|