v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-12 20:56:17    
বোয়াও এশিয়া ফোরামের২০০৮ -এর বার্ষিক সম্মেলন শুরু

cri

    ১২ এপ্রিল বিকেলে বোয়া এশিয়া ফোরামের ২০০৮-এর বার্ষিক সম্মেলন দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও শহরে শুরু হয়েছে । চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও এবং বিদেশের ৯জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান আমন্ত্রিত হয়ে বার্ষিক সম্মেলনেরউদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও " সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে অটল থাকুন , যৌথ সহযোগিতা ও উভয়ের বিজয় তরান্বিত করুন" শিরোনামেএকটি ভাষণ দিয়েছেন । ভাষণে তিনি গত ৩০ বছরের সাফল্য এবং অভিজ্ঞতার সারসংকলন করেছেন এবং এশিয় অঞ্চলের সহযোগিতা জোরদার ও এশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও যৌর্থ সমৃদ্ধি তরান্বিত করার জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করেছেন ।

    ১২ এপ্রিল বিকেলে এশিয়া ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আসা ১৭০০ বিশিষ্ট অতিথি বোয়াও ফোরামের ২০০৮-এর বার্ষিক সম্মেলনেরউদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । পাকিস্তান , মঙ্গোলিয়া , শ্রীলংকা , তাঞ্জানিয়া , চিলি , টোংগা , কাজাখস্তান, অষ্ট্রেলিয়া এবং সুইডেন সহ ৯টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।

    চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও ভাষণে " সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে অটল থাকুন , যৌথসহযোগিতা ও উভয়ের বিজয় তরান্বিত করুন" শিরোনামে প্রধান ভাষণ দিয়েছেন । তিনি প্রথমে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের গত ৩০ বছরের সাফল্য পর্যালোচনা করে বলেন , চীন সাফল্যের সঙ্গে পরিকল্পনা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে তেজি সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় , রুদ্ধদ্বার ও আধা রুদ্ধদ্বারথেকে সম্পূর্ণ উন্মুক্তকরণের মহান ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ঘটিয়েছে । জনগণের জীবনযাত্রার মান ও খাওয়া পরার পরা সংকটের পর্যায়থেকে অভূতপূর্ব উন্নতির পর্যায়ে হয়েছে । গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র জনসংখ্যা ২৫ কোটি থেকে এক কোটিতে নেমেছে । রাজনৈতিক , সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক নির্মাণ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে ।

    হু চিনথাও বলেন , ৩০ বছরের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে চীনের অর্থনীতি ইতোমধ্যে বিশ্বঅর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে । বিশ্বে চীনের অভ্যন্তরীন মোট উত্পাদনমূল্যের অনুপাত ১৯৭৮ সালের ১ শতাংশ থেকে ২০০৭ সালের ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে । চীনের মোটআমদানি-রপ্তানি মূল্য ১৯৭৮ সালের ১ শতাংশ থেকে ২০০৭ সালের ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে । চীনের উন্নয়ন আন্তর্জাতিক পূঁজির জন্য বিশাল বাজার সৃষ্টি করেছে । বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের অর্থনীতির অবদানের হার ১০ শতাংশ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে চীনের অবদান হার ১২ শতাংশেরও বেশি । ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত চীনের গড়আমদানিমূল্য ৫৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটা সংশ্লিষ্ট দেশ ও অঞ্চলের জন্য প্রায় এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে ।

    পাশাপাশি চীন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য । চীন একশ'রও বেশি আন্তসরকার আন্তর্জাতিক সংস্থায় শরিক হয়েছে এবং ৩০০রও বেশি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে । জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমেঅংশ নিয়ে চলেছে । তিনি বলেন, 'চীন সবসময় শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে চলে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ করে না, নিজের ইচ্ছা জোর করে অন্যের ওপরে চাপিয়ে দেয় না। চীন সবসময় পারস্পরিক কল্যাণমূলক ও উভয়ের বিজয়ের উন্মুক্ত কৌশল অনুসরণ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বতন্ত্র বিকাশের দক্ষতা ও জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্যকে সমর্থন করে। চীন বিভিন্ন দেশের অভিন্ন উন্নয়নের সুযোগ উপভোগ করে এবং যৌথভাবে নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ত্বরান্বিত করে। চীন সবসময় স্থায়ী শান্তি, অভিন্ন সমৃদ্ধি ও সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার চেষ্টা চালায়।'

    হু চিন থাও উল্লেখ করেন, এশিয়া উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণচঞ্চল অঞ্চলগুলোর অন্যতম। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিকাশ, রাজনৈতিক গঠন, নিরাপত্তার স্থিতিশীলতাসহ নানা ক্ষেত্রে এশিয়া কিছু কঠোর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। হু চিন থাও বলেন, চীন এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুযোগ কাজে লাগিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে এবং যৌথভাবে শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নশীল, সহযোগিতামূলক ও উন্মুক্ত এশিয়া প্রতিষ্ঠা করবে। তিনি বলেন, 'পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা বাড়ানো উচিত। যৌথভাবে নিরাপত্তার হুমকি মোকাবিলা করতে হবে। এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা গভীর করতে হবে। আঞ্চলিক অবাধ বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের নিশ্চয়তা ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত করতে হবে। আর্থিক সহযোগিতা গভীরতর করতে হবে। এশিয়ার বুনিয়াদী ব্যবস্থার নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে হবে। যৌথভাবে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সভ্যতার নির্মাণকাজ ত্বরান্বিত করতে হবে। উন্মুক্ত নীতি অনুসরণ করে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।'

    বোয়াও এশিয়া ফোরামের এবারের বার্ষিক সম্মেলনের প্রতিপদ্দ্য হচ্ছে 'সবুজ এশিয়া, সংস্কারের মধ্য দিয়ে সকলের স্বার্থকে বাস্তবে রূপ দেওয়া।' এশিয়া ফোরামের এটি সপ্তম বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনে অংশগ্রহণের দিক থেকে এবার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।