v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-07 18:52:58    
সি ছুয়ান প্রদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ কাজে সুফল পাওয়া গেছে

cri

    দক্ষিণ পশ্চিম চীনের সি ছুয়ান প্রদেশ ইয়াংসি নদীর উত্তর উপত্যকায় অবস্থিত , বেশ কয়েকটি নদী এ প্রদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে । তাই সি ছুয়ান প্রদেশকে ইয়াং সি নদীর মধ্য ও নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষার প্রধান দরজা বলা যায় । সি ছুয়ান প্রদেশের ইয়া আন শহর ১৯৯৮ সাল থেকে বনাঞ্চল রক্ষা , কৃষি জমিতে বনায়ন আর বন্য প্রাণী সংরক্ষণের কাজ শুরু করে । এ শহর ইতোমধ্যে ইয়াংসি নদীর উত্তর উপত্যকা অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষার উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে ।

    ইয়া আন শহরে বনাঞ্চলের মোট আয়তন ১১.২ লাখ হেক্টর , এটা শহরটির মোট আয়তনের ৭৮ শতাংশ । বনাঞ্চল রক্ষা , কৃষি জমিতে বনায়ন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ--এই তিনটি প্রকল্পের মধ্যে কৃষি জমিতে বনায়নে ইয়া আন শহর সবচেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে । ইয়া আন শহরের বন ব্যুরোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা লি চি হোন বলেন , ২০০৭ সালের শেষ নাগাদ ইয়া আনের সব মহকুমার কৃষি জমিতে গাছ বন তৈরী করা হয়েছে । ইয়া আন শহরের অধীনস্থ সব মহকুমার ১০১৯টি গ্রামের ৯.৩ লাখ কৃষক এ কাজে অংশ নিয়েছেন । এ সংখ্যা শহরটির মোট জনসংখ্যার চার ভাগের তিন ভাগ ।

   

ব্যাপকভাবে কৃষি জমিতে বনায়নের ফলে এ অঞ্চলের মাটি ও পানিক্ষয় ৩২ শতাংশ কমেছে । ২০০৬ সালে সি ছুয়ান প্রদেশ ও ছুংছিং শহরে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় খরা দেখা দিয়েছিল । ইয়া আন শহরে প্রচুর গাছ লাগানো হয়েছে বলে খরা ততোটা তীব্র রূপ নিতে পারে নি ।

    পরিবেশ রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকদের আয় বাড়ানোও একটি বড় সমস্যা । অর্থকরীগাছ লাগালেই শুধু কৃষকদের আয় বাড়তে পারে । নিজ শহরের ভৌগলিক পরিবেশ ও আবহাওয়া বিবেচনা করে ইয়া আন শহর কৃষি জমিতে গাছ লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে ফল ও ভেষজ ওষুধ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কৃষকরা কৃষি জমিতে গাছ ছাড়া বাঁশ ও চা বাগান তৈরী করছেন । এসব ব্যবস্থা নেয়ার ফলে গত বছর ইয়া আন শহরের আওতাধীন গ্রামগুলোর গড় আয় চার হাজার সাত শ' ইউয়ান দাড়িয়েছে ।

   

হেন ইয়েন গ্রামের বৃদ্ধা চিয়ান হোন ফানের বাড়িতে প্রায় দুই হেক্টর জায়গা জুড়ে চা বাগান ও বাঁশ বন আছে । বাঁশ ও চা চাষ ছাড়া তিনি একটি ছোট বাঁশ প্রক্রিয়াকরণ কারখানাও স্থাপন করেছেন । তিনি ও তার পরিবারপরিজন গ্রামবাসীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা বাঁশ ছোট করে কাটার পর কাগজ কলে বিক্রি করেন । বাঁশ ও চা চাষ থেকে তিনি প্রতি বছর এক লাখ ইউয়ান পান । তিনি বলেন , প্রতি বছর আমরা ছয় লাখ টন বাঁশ কাটি । এ থেকে ৭০-৮০ হাজার ইউয়ান পাই , চা চাষ থেকে ২০-৩০ হাজার ইউয়ানসহ পরিবারের মোট আয় এক লাখের বেশি ।

   

বন তৈরী ছাড়া ইয়া আন শহরে বন সংরক্ষণের কাজও সফল হয়েছে । কৃষকরা আগে ইচ্ছামতো গাছ কাটত , এখন তারা গাছ রক্ষক পরিণত হয়েছে । ২০০৭ সাল নাগাদ ইয়া আন শহরে মোট ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বনায়ন করা হয়েছে এবং শহরের দশ লক্ষাধিক হেক্টরবন সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । বনাঞ্চল মাটি ও পানিক্ষয় কমানো এবং ইয়াংসি নদীর মধ্য ও নিম্ন অংশের মাটি ও বালুর ক্ষয় ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে । ইয়া আন শহরের বন ব্যুরোর প্রধান চাও ছান লিন বলেন , এর আগে বন্যার সময় নদীর পানি এক মাস ঘোলা থাকতো , এখন দু তিন দিন পর স্বচ্ছ হয়ে যায় । এ থেকে বোঝা যায় যে , নদীর

পানিতে মাটি ও বালুর পরিমাণ অনেক কমেছে । শহরের বন অঞ্চল সংরক্ষণের ফলে বণ্য প্রাণীর পরিবেশও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে । ইয়া আন শহরে চীনের প্রথম বণ্য পান্ডা পাওয়া গেছে , এ শহরের বনাঞ্চলে বন্য প্রাণীর সংখ্যাও বেশি। চাও ছান লিন বলেন , এখানে দশ বছর আগে বড় পান্ডার সংখ্যা ১৪০টি ছিল , এখন এ সংখ্যা বেড়ে তিন শ'র বেশি হয়েছে । এখানে বড় পান্ডার জন্য সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ।

    তদন্ত থেকে জানা গেছে সি ছুয়ান প্রদেশের অন্য স্থানে মাটি ও পানিক্ষয় প্রতিরোধ প্রকল্প নেয়া হয়েছে । ফলে কুয়ান আন , তা চৌ , নানছোন , পান চুন ও সুই নিনের মাটি ও পানিক্ষয় ৩০ শতাংশ কমেছে । সি ছুয়ান প্রদেশের বনাঞ্চলের আয়তন ২০ শতাংশ বেড়েছে ।