মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি , অর্থমন্ত্রী হেনরি পলসন ৩ এপ্রিল তাঁর দুদিনব্যাপী চীন সফর শেষ করেন । সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও ও প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাওয়ের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়েছে । চীনের প্রেসিডেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি ও উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং ছিশান ও পলসনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে । তাঁর চীন সফরের প্রধান উদ্দেশ্য কী ? কী কী তাত্পর্যই বা রয়েছে ?
দুদিনব্যাপী সফরে পলসন চীনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাত ও বৈঠক করেছেন। রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ও সংস্কারকমিশনের চেয়ারম্যান , অর্থমন্ত্রী , পরিবেশ রক্ষামন্ত্রী সহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন । এ ছাড়াও তিনি চীনের বিজ্ঞান একাডেমীতে পরিবেশ রক্ষার সমস্যা নিয়ে বক্তৃতা করেছেন। পলসনের এবারের চীন সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে চীন-মার্কিন সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, চীনা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের ভাইস মহাপরিচালক প্রফেসর চিনছানরোং বলেন , তার চীন সফরের দুটো উদ্দেশ্য ছিল । এক , নতুন চীন সরকারের প্রধান প্রধান সদস্যদের জানা , তাদের সঙ্গেব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করা । বিশেষভাবে উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং ছিশানের সঙ্গে জুন মাসে অনুষ্ঠিতব্য চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপের জন্য ব্যাপক পরামর্শ করা । দুই, চীনের সঙ্গে জ্বালানী ও পরিবেশ সহযোগিতা সম্পর্কে পরামর্শ করা ।
প্রফেসর চিন বলেন , ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে এবং নতুন মার্কিন সরকার আগামী বছরের প্রথম দিকে গঠিত হবে । নতুন মার্কিন সরকারের কার্য-মেয়াদে দুদেশের অর্থনৈতিক সংলাপ যাতে অব্যাহত থাকতে পারে তার জন্য এবারের চীন সফরের সুযোগে জুন মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য চীন-মার্কিন চতুর্থ অর্থনৈতিক সংলাপের পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে পারবে বলে তিনি আশা করেন ।
২ এপ্রিল পলসনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও প্রশংসা করে বলেন , চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ সাফল্যের সঙ্গে তিনবার অনুষ্ঠিতহয়েছে । এটা শুধু দুদেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতাকে তরান্বিত করেছে তা নয় , বরং চীন-মার্কিন গঠনমূলক সহযোগিতাই সম্পর্কের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । হু চিনথাও বলেন , বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোটা বিশ্বের অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়ন রক্ষার অভিন্ন দায়িত্ব পালন করে । পলসন বলেন , যুক্তরাষ্ট্র মনে করে , যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনীতির সুষ্ঠু চলন দুপক্ষের জন্য সহায়ক হবে । মার্কিন-চীন সম্পর্কের উন্নয়ন দুপক্ষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ । দুপক্ষ অভ্যাহত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ ও চীন-মার্কিন সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন । তিনি বলেন , চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ ইতোমধ্যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে । এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমি চীন সফর করছি । আপনাদের নতুন সরকার সবেমাত্র গঠিত হয়েছে । যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে মিলে সংলাপটির অগ্রগতির জন্য প্রচেষ্টা চালাতে ইচ্ছুক ।
চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের প্রস্তাবে এই অর্থনৈতিক সংলাপ ব্যবস্থা চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্কের স্থিতিশীল উন্নয়ন তরান্বিত করবে এবং অন্যান্যবিষয়ের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে । প্রফেসর চিন ছানরোং মনে করেন , বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নরম এবং গৌন ঋণ সংকটের প্রভাবের বিস্তারে চীন-মার্কিন আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও গোটা সম্পর্কের স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করা দুপক্ষের অভিন্ন স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। পক্ষান্তরে চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নীতিগত বিষয়ে যোগাযোগ ও সমন্বয় করার একটি মঞ্চ হবে ।পলসনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং চিশান উল্লেখকরেন , বর্তমান পরিস্থিতিতে দুদেশের কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপের গুরুত্ব ও ভূমিকা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে । দুপক্ষের উচিত পারস্পরিক কল্যাণ ও উভয়ের সাফল্য ও পারস্পরিক আস্থা জোরদার করার নীতি অনুসারে দুদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী সার্বিক, কৌশলগত ও দীর্ঘস্থায়ী সংলাপ চালানো এবং সত্যিকারভাবে সংলাপের এই ব্যবস্থায় ভূমিকা পালন করা । চুং শাওলি
|