১৪ মার্চ তিব্বতের লাসায় যে ভাংচুর , লুটাপট এবং অগ্নিসংযোগসহ বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছিল ১ এপ্রিল পেইচিংয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে চীনের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের তার ওপর তদন্তে সব কিছু ফাঁস হয়ে যাওয়া সম্পর্কিত নতুনতম তথ্য প্রকাশ করেছে ।
১৪ মার্চ কতিপয় দুষ্কৃতকারী তিব্বত স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের রাজধানী লাসার প্রধান প্রধান রাস্তায় ভাংচুর , লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালিয়েছিল । তারা পথচারীদের ধাওয়া করে ধরে মেরেছিল এবং দোকানপাট , ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং সরকারী অফিসের ওপর হামলা চালিয়েছিল । এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে , সে দিন দুষ্কৃতকারীরা মোট ৩০০ স্থানে আগুণ লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল । দোকান, স্কুল , বাড়িঘর এবং ব্যাংক সহ মোট ১০০০টি স্থাপত্যক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । ১৮জন নিরিহ নাগরিক আগুণে বা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যায় । এ ঘটনায় আরও প্রায়৩৮০জন আহত হয়েছেন । লাসা শহরের সরাসরি আর্থিকক্ষতি ছিল ২৫ কোটি রেনমিনপি । তিব্বতের বিভিন্ন জাতির জনসাধারণের মৌলিক স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার্থে তিব্বত স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সরকার দ্রুততর সঙ্গে ঘটনাটিকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে । আগুণ জ্বালিয়ে হত্যাকান্ডসহ চারটি মামলার তদন্তে এখন সব কিছু ফাঁস হয়ে গেছে । অপরাধসাধনের প্রায় সব সন্দেহভাজন ধরা পড়েছে ।
চীনের পুলিশের জানা তথ্য অনুযায়ী এই গুরুতর বলপ্রয়োগমূলক ঘটনা দালাই চক্রের সংগঠনে , চক্রান্তে এবং উস্কানিতে দেশীবিদেশী "স্বাধীন তিব্বত" বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যোগসাজশে ঘটেছে । ১ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পুলিশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ হোপিং বলেন , ১৫ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত চীনের নিরাপত্তা বিভাগ বিদেশে বসবাসকারী দালাই চক্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এবং ১৪ মার্চ ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করেছে । প্রাথমিকভাবে দালাই চক্রের " নিরাপত্তা বিভাগের " একজন কর্মকর্তা ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করেছে । যারা সরাসরি ১৪ মার্চ ঘটনায় অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যের একজন প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে । তিনি স্বীকার করেছেন , তারা দালাই চক্রের উস্কানিতে জাতি বিচ্ছিন্ন করার অপরাধ সাধন করেছে । মুখপাত্র উ হোপিং বলেন , আমাদের পাওয়া অকাট্য প্রমাণ থেকে জানা গেছে , ১৪ মার্চ ঘটনা দালাই চক্রের প্রণিত " তিব্বতী জনগণের মহা অভ্যূত্থান আন্দোলন" কার্যক্রমের একটি অংশ । এর উদ্দেশ্য হল তিব্বতের মাধ্যমে সমন্বিত করে ধ্বংসাত্বক তত্পরতা চালানো এবং চীনে সংকট সৃষ্টি করা । এ বছরের জানুয়ারী মাসে " চাং-ছিং সোসাইটি "সহ ৭টি " স্বাধীন তিব্বত" সংস্থা ভারতের নয়াদিল্লীতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে তথাকথিত " তিব্বতী জনগণের মহা অভ্যূত্থান আন্দোলন" চালানোর কথা ঘোষণা করে এবং ১০ মার্চকে চরম সময় সীমা নির্ধারণ করে চীন সরকারের কাছে দাবী জানায় । উ হোপিং বলেন ,দালাই চক্রের "তিব্বতী জনগণের মহা অভ্যুত্থান আন্দোলনের" উদ্দেশ্য হল চীনের স্থিতিশীলতা ও ঐক্যের সামাজিক পরিস্থিতি বিনষ্ট করা । অলিম্পিক গেমসের সুযোগে চীন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা । যাতে তাদের দেশকে বিভক্ত করার জঘন্য লক্ষ্য বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করা । তাদের কার্যক্রম সাংঘাতিকভাবে অলিম্পিক সনদের মনোবল লংঘণ করেছে এবং তা বিশ্বের শান্তিকামী জনগণের পরিপন্থী ।
১০ মার্চ থেকে বিদেশে চীনের ১৮টি দূতাবাস তথাকথিত " স্বাধীন তিব্বত" ও " তিব্বতকে সমর্থন করা " আন্তর্জাতিক সংস্থার বলপ্রয়োগমূলক হামলার সম্মুখীন হয়েছে । এই " ১৪ মার্চ"--এর ঘটনা " তিব্বতী জনগণের মহা অভ্যুত্থান আন্দোলনের" তথাকথিত অভ্যুত্থান দিবস" পরিকল্পনা । শুধু তাই নয় । সাম্প্রতিককয়েক দিনে দালাই চক্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথাকথিত" তিব্বতকে সমর্থন করা", " বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম দিবস"সহ নানা কর্মকান্ডও চালিয়েছে ।তাদের ধারাবাহিক কার্যকলাপ দালাই চক্রের স্বঘোষিত "শান্তির" উপায়ে মতামত প্রকাশ করার বিরোধী । সুতরাং , উ হোপিং বলেন , মিথ্যা কথা বলা দালাই চক্রের দেশকে বিভক্ত করার আসল চক্রান্তঢেকেরাখতে পারে নি । অকাট্য বাস্তবতা প্রমাণ করেছে , তথাকথিত " মধ্য পথ" ও " শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন" দালাই নিজের এবং তার চক্রের বানানো নগ্ন মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নয় । এ জন্য আমরা আশা করি , বিশ্ব জনগণ দালাই চক্র এবং তথাকথিত" স্বাধীন তিব্বত" ব্যক্তিদের নানা কার্যকলাপ সম্পর্কে সচেতন থাকবেন । আমরা বিশ্বাস করি , যেমনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না তেমনি আসলকে মিথ্যার বেসাতি দিয়েও ঢেকে রাখা যাবে না । দালাই চক্রের দেশকে বিভক্ত করার আসল উদ্দেশ্য উদ্ঘাটিত হবেই । --চুং শাওলি ।
|