বন্ধুরা, সম্প্রতি পাশ্চাত্য দেশগুলোর কোনো কোনো ব্যক্তি অলিম্পিক গেমসের মনোভাবের পরিপন্থী অলিম্পিক গেমসকে রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত করে পেইচিং অলিম্পিক গেমসেকে নস্যাতের কথা ঘোষণা করেছে। এ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও কেনিয়ার অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান কিপচোগে কেইনো ২৪ ফেব্রুয়ারী বলেন, অলিম্পিক গেমসের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে সিআরআই'র একজন সাংবাদিকের কেনিয়া থেকে পাঠানো কেইনোর সঙ্গে সাক্ষাত্কারের কিছু কথা বলবো।
অলিম্পিক সংবিধাসের ৫১তম বিধিতে বলা হয়েছে, ক্রীড়াবিদদের উচিত অলিম্পিক গেমসে রাজনীতি, ধর্ম ও জাতি সম্পর্কে কোনো প্রকার প্রচার তত্পরতা না চালানো। এ সম্পর্কে কেনিয়া অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান কিপচোগে কেইনো বলেন, ক্রীড়াবিদরা রাজনীতিবিদ নন এবং ক্রীড়াকে রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত করাও উচিত নয়। তিনি আরো বলেন, 'সমাজ ও দেশের একজন সদস্য হিসেবে প্রতিটি মানুষই রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণে রাজনৈতিক বিষয় যোগ করা হয়না। ক্রীড়াবিদের দায়িত্ব হল প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভের চেষ্টা করা। ক্রীড়া রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত হলে অলিম্পিক গেমসের মনোভাবের পরিপন্থী হবে এবং অলিম্পিক গেমস ধ্বংস হবে।'
কিন্তু সম্প্রতি পাশ্চাত্য দেশগুলোর কোনো কোনো ব্যক্তি অলিম্পিক সংবিধান ও মনোভাবের পরিপন্থী তত্পরতা চালিয়েছে। তারা সুদা দারফুরের সমস্যার অজুহাতে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ওপর প্রভাব ফেলে একে নস্রাতের চেষ্টা করছে। এটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ও রাজনীতি ক্ষেত্রের বেশির ভাগ সুষ্ঠ জনের তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকস রগ বলেন, এসব ব্যক্তিকে দান্ডত করা হবে। কোনো ব্যক্তিরই অলিম্পিক গেমসের মানদন্ডকে ক্ষতিগ্রস্থ করার অধিকার নেই। পেইচিং অলিম্পিক গেমসে সাফল্য অর্জিত হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ বলেন, তিনি কর্মসূচী অনুযায়ী পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবেন এবং তিনি অলিম্পিক গেমসের মাধ্যমে রাজনৈতিক তত্পরতা চালাবেন না।
অলিম্পিক গেমস রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত হলে অলিম্পিক গেমস ও ক্রীড়াবিদরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কেনিয়ায় কেইনোকে মারাথন বাবা বলে পরিচিত। তিনি এ সম্পর্কে বলেন, 'যেমন ব্রিটেন সরকার ১৯৮০ সালে মস্কো অলিম্পিক গেমসে অংশ গ্রহণ করে নি এবং নিজের ক্রীড়াবিদদের ওপর এবারের অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু ব্রিটেনের ক্রীড়াবিদরা চার বছর সময় নিয়ে মস্কো অলিম্পিক গেমসের অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তাঁরা অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহী। আমরা আশা করি, এ ধরণের ব্যাপার এবার ঘটবে না।'
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির একজন সদস্য হিসেবে কেইনো প্রতি বছর তিন বার করে মত পেইচিং আসেন। মার্চ মাসের শেষ দিকে তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সন্বময় সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য পুনরায় পেইচিং আসবেন। আসলে পেইচিং অলিম্পিক গেমস প্রস্তুতির প্রতি পর্যায়ের অগ্রগিত তিনি নিজেই দেখেছেন। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজ সুষ্ঠুভাবে চলছে। এ পর্যন্ত পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সবগুলো স্টেডিয়ামই নির্মিত হয়েছে এবং প্রতিটিতে পরীক্ষামূলক প্রতিযোগিতাও সুষ্ঠুভাবে চলছে। আমি চীন সরকার ও পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সাংগঠনিক কমিটিকে অভিনন্দন জানাই।'
কেইনো আরো বলেন, যদিও কেনিয়ায় এ মাসে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ঘটছে, তবুও কেনিয়ার ক্রীড়াবিদরা ইতিবাচকভাবে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সবশেষে তিনি সারা বিশ্বের ক্রীড়া ক্ষেত্রের সুধিজনকে একসাথে অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
|