v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-27 18:30:12    
তিব্বতের বিভিন্ন মহল তান্ডবলীলার তীব্র নিন্দা করেছে

cri
    তিব্বতের ধর্মীয় মহল , পন্ডিত ও নাগরিকরা এ মাসের মাঝামাঝি সময় তিব্বতের রাজধানী লাসায় ঘটিত দাঙ্গাহাঙ্গামার তীব্র নিন্দা করেছেন। তারা বলেন , দুর্বৃত্তদের তান্ডবলীলা মানবতাবাদী চেতনা লংঘন করেছে এবং লাসা শহরের কষ্টার্জিত উন্নয়নের সুফল নস্যাত্ করেছে । তিব্বতীদের শান্তিপূর্ণ জীবনের পরিবেশ রক্ষার জন্য তারা এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন ।

    ১৪ মার্চ বৌদ্ধমন্দিরের কিছু ভিক্ষুক লাসার সিয়াও চাও মন্দিরের নিকটবর্তী এলাকায় পাহারারত পুলিশের ওপর পাথর ছোড়ে। তার পর কিছু দুর্বৃত্ত রাস্তায় জড়ো হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী শ্লোগান তোলে এবং ভাংচুর , লুটপাট, মারধর করতে থাকে এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে দেয় । তারা লাসা শহরের প্রধান রাস্তার দোকানপাট , প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, হাসপাতাল , ব্যাংকগুলোতে ঢুকে জিনিসপত্র ভাংচুর করে , পণ্যদ্রব্য লুটপাট করে ও আগুন লাগিয়ে দেয় , রাস্তার গাড়িগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং পথচারীদের মারধর করে । তাদের তান্ডবলীলা গুরুতরভাবে জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিপন্ন করেছে ।

    চীনের বৌদ্ধধর্ম সমিতির তিব্বত শাখার প্রধান দ্রাখান থুবটেন খেদ্রাপ বলেন , বৌদ্ধমন্দিরের কিছু ভিক্ষু মন্দিরের নিয়ম অনুসারে শাস্ত্র না পড়ে যে দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করেছে , তা' ধর্মীয় মহল ও ব্যাপক বৌদ্ধধর্মাবলম্বীর মৌলিক স্বার্থ ক্ষুন্ন করেছে ।

    তিনি বলেন , আমি যখন দেখেছি মুষ্টিমেয় ভিক্ষু দুর্বৃত্তদের সঙ্গে জোট বেধে ভাংচুর ,লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ লিপ্ত , তখন আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি এবং খুব লজ্জিত হয়েছি । তাদের নাশকতামূলক কর্মকান্ডপুরোপুরিভাবে মাবনতাবাদী চেতনা ও বৌদ্ধধর্মীয় চেতনার মারাত্মক লংঘন । বর্তমানে তিব্বতী জনগণের সুখী জীবন ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে । আমি আশা করি সরকার আইন অনুসারে দুর্বৃত্তদের শাস্তি দেবে ।

    একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , লাসার তান্ডবলীলায় ১৮জন নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে , ১২০টি বসতবাড়ী আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে , ৯০৮টি দোকানের পণ্য লুটপাট বা ভাংচুর করা হয়েছে এবং ৭টি স্কুল ও ৫টি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এ থেকে সৃষ্ট প্রত্যক্ষ অর্থনৈতিক ক্ষতি ২৫ কোটি ইউয়ান ।

    লাসার নাগরিক লোসাং বলেন , আমরা তিব্বতের মুষ্টিমেয় দুর্বৃত্তের তান্ডবলীলা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ না করে পারি না । তিব্বতের সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল পরিস্থিতি তিব্বতের বিভিন্ন জাতির জনগণের মিলিত প্রচেষ্টার ফল । কিন্তু মুষ্টিমেয় দুষ্কৃতকারী অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই আমাদের কষ্টার্জিত সাফল্য নস্যাত্ করেছে । লাসার নাগরিক হিসেবে আমি বিক্ষুব্ধ । দালাই গোষ্ঠীর উস্কানিতে দুর্বৃত্তরা এ সব তান্ডবলীলা চালিয়েছে । আমরা তাদের ষড়যন্ত্র চরিতার্থ করতে দেবো না ।

    লাসার দাঙ্গাহাঙ্গামায় দুর্বৃত্তদের নিষ্ঠুর আচরণ সহ্য করা যায় না। দশ-বারোজন দুর্বৃত্ত রাস্তায় একজন মোটর সাইকেল আরোহীকে আটকে ইট দিয়ে তার মাথা থেতলে দেয় এবং বাঁ কান কেটে দেয় । বেধড়ক প্রহারে পুরুষটির ডান চোখ অন্ধ হয়ে গেছে । লাসার বৃদ্ধ ছোদ্রেক নিজের চোখে এ ঘটনা দেখেছেন । তিনি বলেছেন , এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা যায় না । আশা করি সরকার দুর্বৃত্তদের শাস্তি দেবে ।

    চীনের তিব্বত তত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের পন্ডিত দুকার সারিং বলেন , কেন্দ্রীয় সরকার তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের প্রসারকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় । পোতালা ভবন , টাশিলাম্পো মন্দির ও জোখান মন্দির পুনর্নিমাণ ও সংরক্ষণের জন্য বিপুল পরিমান অর্থ এবং সোনা ও রুপা বরাদ্দ করা হয়েছে । বর্তমানে তিব্বতের ১৭৮৭টি মন্দির ও ধর্মীয় সংস্থা পুনর্নিমাণের পর খোলা হয়েছে , ধর্মীয় শাস্ত্রসংরক্ষণের কাজও চলছে । তিনি বলেন , আমাদের গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে ঠিক দালাই চক্রই বৌদ্ধধর্মের স্বাভাবিক শৃঙ্খলা নষ্ট করেছে এবং তিব্বতের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির পুনরুদ্ধার ও তিব্বতের শিক্ষা ও স্থিতিশীলতা নস্যাত্ করেছে ।