v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-20 20:06:29    
লাসায় লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক ঘটনা সম্পর্কেপ্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তদের কথা

cri

    সম্প্রতি দালাই চক্রের চক্রান্তে ও উস্কানিতে চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লাসা শহরে হাতে গোনা কয়েকজন ভিক্ষু সমবেত হয়ে লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালিয়েছে । তারা গুরুতরভাবে লাসা শহরের স্বাভাবিক সামাজিক শৃঙ্খলা ধ্বংস করেছে এবং লাসা শহরের নাগরিকদের জানমাল ও নিরাপত্তার ক্ষতিসাধন করেছে । ঘটনা পরপরই তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে বলপ্রয়োগের অপরাধমূলক তত্পরতার ওপর আঘাত হেনেছে । এখন লাসা শহরের সামাজিক শৃঙ্খলা মোটামুটি স্বাভাবিকহয়েছে । এক সাক্ষাত্কারে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনার শিকার হযেছে এমন ব্যক্তিরালাসার বলপ্রয়োগের অপরাধমূলক ঘটনার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন ।

    ১৪ মার্চ সকাল ১১টা পর্যন্ত কিছু সংখ্যক ভিক্ষু লাসার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিয়াও চাওসি মন্দিরে থেকে পাথর ছুড়ে স্বাভাবিকভাবেদায়িত্ব পালনরত পুলিশদের ওপর হামলা চালায় । তারপর কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতকারী রাস্তায় সমবেত হতে শুরু করে । তারা দেশকে বিভক্ত করার শ্লোগান দিয়ে উচ্ছৃখলভাবে লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালায় । ঘটনাটি দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । দুষ্কৃতকারীরা লাসা শহরের প্রধান প্রধান রাস্তার দুপাশের দোকানপাট, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুল , হাসপাতাল , ব্যাংক , সংবাদসংস্থা এবং গাড়ি ভাংচুর করে তাতে আগুণ ধরিয়ে দেয় । তারা নিরিহ পথচারীকে পিছন থেকে ধাওয়া করে তাদের মারপিট করে । সে দিনের দৃশ্য স্মরণ করে লাসা শহরের হাইছেন প্রাথমিক স্কুলের প্রিন্সিপাল নিমাছিরেন বলেন , দৃষ্কৃতকারীরা পাগলের মতো আমাদের স্কুল ভবনের ওপর হামলা চালায় । ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের জীবন ও স্কুলের সম্পদের নিরাপত্তা সাংঘাতিক হুমকীর সম্মুখীন হয়ে পড়ে । জরুরী অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষের নির্দেশানুযায়ী শিক্ষকরা নিজনিজ ছাত্রদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনেন এবং যথাসময় ব্যাপারটা অভিভাবকদের জানান । যাতে সেই রাতে ছাত্রছাত্রীরা নিরাপদে নিজনিজ বাড়ি ফিরে যেতে পারে । এই নাশকতামূলক তত্পরতায় আমাদের স্কুলের প্রায় ১৪ লাখ ইউয়ান মূল্যের ক্ষতি সাধিত হয়েছে ।

    সে দিনের নাশকতামূলক ঘটনা সম্পর্কে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী তাওয়া ইউয়ুচেন বলে, আমি স্বচোখে দেখেছি , দুষ্কৃতকারীরা পুলিশদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল। কিছু কিছু দুষ্কৃতকারী দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করছিল । আমি খুব ভয় পেয়েছি । আমার নানি বলেন, স্কুলে যেও না । তাই আমি বাড়িতে তিনদিন ছিলাম ।

    জানা গেছে , এবারের নাশকতামূলক কর্মকান্ডে দুষ্কৃতকারীরা মোট ২১০টি বাড়িঘর, দোকানপাট এবং ৫৬টি গাড়ি ভাংচুর করে তাতে আগুণ ধরিয়ে দেয় এবং ১৩জন নিরিহ নাগরিককে আগুণে পুড়িয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে ।

    নাশকতামূলক কর্মকান্ডের শিকার ফোং পিসিয়া নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কেবলেন ,১৪ মার্চ বিকেলে যখন আমি রান্না করছিলাম তখন আমার প্রতিবেশী আমাকে দরজা বন্ধ করতে বলেন । এক মহিলা পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে যাচ্ছিল ,ঔ ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে ভয়ে তারা আমার বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেয় । বাচ্চাটিখুব ভয় পেয়ে যায় । সে বারবার বলে, চাচা আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দেন । তার কথা শুনে উপায় না দেখে আমরা দরজা খুলে বের হই । সঙ্গেসঙ্গে বাইরে থেকে আমাদের ওপর পাথর ছুড়ে মারে । আমি আহত হলাম এবং স্বামী ও বাচ্চাটির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই ।

    লাসা শহরের একটি হাসপাতালে ফেং সিয়াওপো নামে একজন আহত লোকের সঙ্গেআমাদের সংবাদদাতার দেখা হয় । সিয়াওপো বলে, দুষ্কৃতকারীরা তার চারটি দোকানেআগুণ ধরিয়ে দেয় । অপ্রস্তুত অবস্থায় আত্মরক্ষার জন্য সিয়াওপো ও তার পরিবারপরিজন বাড়ির উপর থেকে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে । ফলে তার স্ত্রীর কোমরের মেরুদন্ড ভেংগে যায় । তার চাচা ও চাচাতো বোন আগুণে পুড়ে মারা যায় । এ সম্পর্কে তিনি বলেন , আমার আরেক বোন আছে । তার বয়স মাত্র ১৮ বছর । সে জানালার বাইরে ঝাঁপিয়ে পড়তে সাহস করেনি । বাড়ির সিড়ি আগুণে পুড়ে যাওয়ায় সে নেমে আসতে না পারায় জীবিতভাবে আগুণে পুড়ে মারা যায় ।

    দুষ্কৃতকারীদের নাশকতামূলক তত্পরতা তিব্বত সমাজের বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও কঠোর নিন্দা জাগিয়ে তুলে । আহত লোকজন তিব্বতের হাসপাতালগুলোতে চিকিত্সাগ্রহণ করছে ।

    এখন লাসার প্রধান প্রধান রাস্তায় অবাধে গাড়ি চলাচল করছে । বেশির ভাগ দোকানপাট , উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলগুলো খুলেছে এবং লাসা শহরের সামাজিক শৃঙ্খলা মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছে ।---চুং শাওলি