সম্প্রতি তিব্বতের রাজধানী লাসায় যে লুটপাট, ভাংচির ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটেছে ১৯ মার্চ পেইচিংয়ে তিব্বতী জাতির বিখ্যাত ব্যক্তি, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উন্নয়ন পরামর্শ কমিটির অবৈতনিক চেয়ারম্যান রেতি তার তীব্র নিন্দা করেছেন । তিনি বলেন, ঘটনাটি থেকে আরেকবার প্রমানিত হয়েছে যে , দালাই চক্র একদিনও তাদের দেশ বিভক্ত করার নাশকতামূলক তত্পরতা বন্ধ করেনি ।
১৪ মার্চ সকালে অল্প কিছু ভিক্ষুলাসার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সিয়াও চাওসি মন্দিরে থেকে পাথর ছুড়ে স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালনরত পুলিশদের ওপর হামলা চালায় । তার পর কিছু দুষ্কৃতকারী রাস্তায়-রাস্তায় সমবেত হতে শুরু করে । তারা দেশকে বিভক্ত করার শ্লোগান দিয়ে উচ্ছৃঙ্খলভাবে লুটপাট , ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালায় । নাশকতামূলক কর্মকান্ড দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী দুষ্কৃতকারীরা বলপ্রয়োগ করে মোট ২১০টি বাড়িঘর ও দোকান এবং ৫৬টি গাড়ি ভাংচুরের পর আগুন ধরে ধ্বরিয়ে দেয় এবং ১৩জন নিরিহ নাগরিককে আগুনে পুড়িয়ে বা ধারালো অস্ত্রদিয়ে হত্যা করে । তিব্বত জাতির বিখ্যাত ব্যক্তি , তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উন্নয়ন পরামর্শ কমিটির অবৈতনিক চেয়ারম্যান রেতি বিষয়টি জানার পর বলেন , যথেষ্ট তথ্য থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে , ঘটনাটি দালাই চক্রের সাংগঠনিক চক্রান্তে ও উস্কানিতে ঘটেছে । তিনি বলেন , -এদের উদ্দেশ্য হলো, স্পর্শকাতর সময়পর্বে ঘটনা ঘটানো। যথেচ্ছাভাবে ঘটনাটিকে বিস্তারিত করা এমনকি রক্তাক্ত ঘটনা সৃষ্টি করা এবং এর সুযোগে পেইচিং অলিম্পিক গেমসে বাধার সৃষ্টি করা ও চীনের স্থিতিশীলতা ও সুষম সামাজিক - রাজনৈতিক পরিবেশ বানচাল করা । ঘটনাটি আরেকবার প্রমাণ করে যে , বিদেশে নির্বাসিত দালাই চক্রের চীনকে বিভক্ত ও ধ্বংস করার তত্পরতা বিন্দুমাত্র শিথিল হয়নি এবং একদিনও থামেনি ।
তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উন্নয়ন কমিটি বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিতদের নিয়ে গঠিত একটি পরামর্শদাতা সংস্থা । কমিটি তিব্বতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পরামর্শ দেয় । এবছর ৭০ বছর বয়স পূর্ণ হওয়া রেতি ভূমিদাস পরিবারের সন্তান । তিনি ১৯৫১ সালে তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তিরপর সকল পরিবর্তনইস্বচোখে দেখেছেন । তিনি বলেন , লাসায় এ ধরণের নাশকতামূলক তত্পরতা কোনো আকস্মিক ঘটনা নয় । গত দশ-বারো বছর ছিল এমন একটি সময়পর্ব, সে সময়পর্বে তিব্বতে ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত ও সবচেয়ে বৃহত্তম পরিবর্তন হয়েছে এবং জনগণ সবচেয়ে বেশি সুবিধা উপভোগ করেছেন । কিন্তু দালাই চক্র তিব্বতের সামাজিক অগ্রগতি , অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এবং জাতির সংহতি দেখতে চায় না । তারা দেখতে চায় না যে , তিব্বতী জনগণ দেশের মালিক হয়ে সুখী জীবনযাপন শুরু করুক । সুতরাং তারা নানা উপায়ে তিব্বতের তথা গোটা তিব্বত অঞ্চলের স্থিতিশীল উন্নয়ন বানচালের অপচেষ্টা চালিয়েছে ।
নাশকতামূলক তত্পরতার পর তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সরকার যথাশীঘ্রআগুণ নেভানো, আহতদের চিকিত্সা করা এবং আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা নেয় । এখন লাসার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে । সামাজিক শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রয়েছে । কিন্তু দালাই চক্র ও পাশ্চাত্ত্য দেশগুলোর কিছু লোক দুষ্কৃতকারীদের নাশকতামূলক কর্মকান্ডকে তথাকথিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভমিছিল বলে মনে করে এবং আইন অনুযায়ী জনগণের জানমাল ও সামাজিক শৃঙ্খলার ক্ষতিসাধনের ওপর নেয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভমিছিল দমন বলে মনে করে ।
এ সম্পর্কে রেতি বলেন , আমি জিজ্ঞেস করতে চাই যে , বিশ্বে এমন কোনো দেশ বা কোনোসরকার আছে কি ? যে দেশ বা সরকার লাসা ঘটনার মতো বলপ্রয়োগমূলক অপরাধী ঘটনার ওপর চোখ বুজে থাকতে পারে । কোনো সরকারই জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করতে পারে না । বলা যায় এ ধরণের নাশকতামূলক কর্মকান্ডকে কোনো দেশ সহ্য করতে পারে না । জানা গেছে , লাসার অধিকাংশ দোকানপাট, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান , মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুল খোলা হয়েছে এবং লাসার সামাজিক শৃঙ্খলা মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছে ।--চুং শাওলি
|