রাজশাহীর জেলার শ্রোতা মানিক রাজ তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন , চীনের সবচেয়ে উন্নত শহর কোনটি? উত্তরে বলছি, চীনে চাঁরটি কেন্দ্রীয় শাসিত শহর আছে। এগুলো হলো, পেইচিং, সাংহাই, থিয়েনচিন এবং ছুংছিন। তা ছাড়া, আরও অনেক বড় বড় শহর আছে। পেইচিং চীনের রাজধানী। চীনের রাজনীতি ও সংস্কৃতি কেন্দ্র। সাংহাই চীনের অথনীর্তি ও ব্যাংকিং কেন্দ্র। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার পর, চীনের বিশেষ অথর্নৈতিক প্রশাসন অঞ্চলের সেনছেন শহরও দ্রুত গতিতে উন্নত হয়েছে। তবুও যদি সবচেয়ে উন্নত শহর বলতে হয় তাহলে চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের নাম বলতে হবে । এই মহা নগরীকে চীনের অথর্নীতি, বাণিজ্য আর ব্যাংকিং কেন্দ্র বলে গণ্য করা হয়। সাংহাই শহরের নিমার্ন শিল্প খুব উন্নত। এখানকার তৈরী জিনিস সারা চীনে বিখ্যাত এবং জনপ্রিয়। গত ১৬ বছর অথার্ত গত শতাব্দীর নবই দশকের পর, সাংহাই শহরে অবিশ্বাস্য পরিবর্তন ঘটেছে। অনেকের মতে এখন সাংহাই একটি পুরোপুরি নতুন শহরে পরিণত হয়েছে। অনেক বিদেশী শিল্প-প্রতিষ্ঠান সাংহাই শহরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তা ছাড়া বিশ্বের বহু আন্তর্জাতিক ব্যাংক সাংহাই শহরে তাদের শাখা স্থাপন করেছে। বলা যায়, চীনের সাংহাই শহর চীনের অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
পাবনা জেলার শ্রোতা রোকন উদ্দিন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের জাতীয় পতাকা কখনও অধর্নমিত হয় কি না?
উত্তরে বলছি, যখন দেশের গুরুত্বপূর্ণ কোনোনেতা মারা যান তখন চীনের জাতীয় পতাকা অধর্নমিত রাখা হয়। যেমন যখন চেয়ারম্যান মাও, সেতুং প্রধান মন্ত্রী চো এন লাই এবং তেং সিয়াও পিং মারা যান তখন সারা চীন দেশে জাতীয় পতাকা অধর্নমিত রাখা হয়েছিল। কেবল কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এ মযার্দা পান।
ঢাকা জেলার শ্রোতা শংকর সূত্রধর তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা পড়ানো হয়?
উত্তরে বলছি, বতর্মানে চীনের তথ্য মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ জন ছাত্র-ছাত্রী বাংলা ভাষা শিখছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া চীনের আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ানো হয় না। বতর্মানে বাংলা বিভাগে কমরর্ত কয়েক জন নতুন কমী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক । বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কয়েক জন প্রবীণ কমীর্ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছিলেন। আগে চীনের তথ্য মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল পেইচিং ব্রডকাস্টিংইনস্টিটিউট ।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের আসাম জেলার শ্রোতা মোহাগ মিয়া তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের সর্বোচ্চ আদালতের নাম কি?
উত্তরে বলছি, সর্বোচ্চ গণ আদালত হচ্ছে চীনের সর্বোচ্চ বিচার সংস্থা। সর্বোচ্চ গণ আদালত বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় গণ আদালত ও বিশেষ গণ আদালতের বিচার বিষয়ক কাজকর্ম তদারক করে, উচ্চতর গণ আদালত নিম্নতর গণ আদালতগুলোর বিচার সংক্রান্ত কাজর্কমের তদারক করে। সর্বোচ্চ গণ আদালত জাতীয় গণকংগ্রেসের নিকট ও জাতীয় গণকংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির নিকট দায়বদ্ধ থাকে এবং কার্যবীরণীদাখিল করে।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার শ্রোতা মুজিবুল হক কলোনি তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনা মানুষ কি কুকুর লালনপালন করেন?
উত্তরে বলছি, হ্যাঁ, এখন অনেক পরিবার কুকুর লালনপালন করেন। দীর্ঘকাল ধরে চীনের গ্রামাঞ্চলে অনেক পরিবার কুকুর লালনপালন করে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের শহরাঞ্চলে কুকুর পালনপালনকারীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, যাঁরা কুকুর লালনপালন করতে চান তাদেরকে কুকুরের জন্য লাইসেন্স নিতে হয়। বছরে কয়েক বার কুকুরের জন্য টিকা দিতে হবে। তবে শহরে বড় আকরের কুকুর লালনপালন করা নিষিদ্ধ।
বগুড়া জেলার শ্রোতা আতাহার আলী তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে ছেলে-মেয়েরা কত বছর বয়সে বিয়ে করতে পারেন? চীনের তরুণ-তরুণীরা কি প্রেম করে বিয়ে করে ?
চীনের বিয়ের আইন অনুষায়ী, ছেলেদের জন্য ২৪ বছর এবং মেয়েদের জন্য ২২ বছর বৈধ বিয়ের বয়স। কিন্তু আসলে চীনের ছেলে-মেয়েরা বিশেষ করে শহরাঞ্চলের অধিকাংশ ছেলে-মেয়েরা এই বয়সের পর বিয়ে করে। ত্রিশের পর বিয়ে করে এমন ছেলের সংখ্যাও কম নয়। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি । চীনা তরুণ-তরুণীরা প্রেম করে বিয়ে করে। পুরানোচীনে বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের বিবাহ ঠিক করতেন। তখন বিয়ে না হওয়া পযর্ন্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একবার দেখাও হতো না। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর, নতুন বিবাহ আইন প্রণীত হয়। স্বাধীন বিবাহ স্পষ্টভাবে বিবাহ আইনে বৈধ করা হয়।
ঝিনাইদহ জেলার শ্রোতা ইসমাইল হোসাইন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন , চীনে কি হরতাল পালিত হয়?
উত্তরে বলছি, চীনে কখনও হরতাল পালিত হয় না। জনসাধারণ যদি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে চায় তাহলে তারা সরাসরি কতৃর্পক্ষের কাছে অথবা সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে উর্ধ্বতন নেতৃস্থানীয়মহলের কাছে জানাতে পারেন। অবশ্যই চীনের সংবিধান অনুযায়ী, চীনের নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা, জনসমাবেশ ও জনসভার স্বাধীনতা, সংঘ বা সমিতি গঠনের স্বাধীনতা, মিছিলের স্বাধীনতা, বিক্ষোভ প্রদশর্নের স্বাধীনতা ও ধমঘর্টের স্বাধীনতাআছে।
|