ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুরসিদাবাদ জেলার শ্রোতা সিদ্ধার্থ সরকার তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের কমিউনিষ্ট পাটি কোন সালে প্রতিষ্ঠিত হয়? উত্তরে বলছি, ১৯২১ সালের ২৩ থেকে ৩১ জুলাই পযর্ন্ত সাংহাইয়ে চীনের কমিউনিষ্ট পাটির প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এই কংগ্রেসে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯২১ সালের মার্চ মাসে রাশিয়ার কমিউনিষ্ট পাটির দূর প্রাচ্য ব্যর্রো ও কনমিউনিষ্ট ইন্টানেশিনালের প্রস্তাব এবং সমর্থনে বিভিন্ন কমিউনিষ্ট গ্রুপের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এ সব কংগ্রেসে কমিউনিষ্ট পাটির উদ্দেশ্য ও মৌলিক নীতি প্রকাশিত হয়। তা ছাড়া এ সব কংগ্রেসে কমিউনিষ্ট পাটির স্থানীয় কর্মসূচী প্রণয়ন করা হয় এবং কার্যসংস্থা ও কর্ম পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বাঁকুড়া জেলার শ্রোতা আসিম গানগুলি তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কয়েকটি প্রদেশ ও মহা নগরী আছে? উত্তরে বলছি, চীনে মোট ২৩টি প্রদেশ আছে। তা ছাড়া, পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ও চাঁরটি কেন্দ্র শাসিত মহানগরী আছে।
বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শ্রোতা মিলন আহমেদ জয় তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের সবচেয়ে উদ্যান এর নাম কি? শ্রোতা বন্ধু , আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সত্যিই কঠিন। কারণ চীন একটি বিশাল দেশ। উদ্যানের সংখ্যা অগণিত। তবে রাজধানী পেইচিংএ কয়েকটি উদ্যান উল্লেখযোগ্য। যেমন ইউয়েনমিন উদ্যান, সামার প্যালিস, তিয়েনথেন উদ্যান চীনের বড় বড় উদ্যান। পেইচিং শহরের এ সব উদ্যানের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের । আগে সে সব উদ্যান রাজকীয় উদ্যান ছিল। যেমন রাজারা আগে গ্রীষ্মকালেসামার প্যালিসে অবকার যাপন করতেন।
বাংলাদেশের নাটোর জেলার শ্রোতা হুসাইন আহাম্মদ তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনদেশে কি সব সময় শীত থাকে এমন প্রদেশ আছে? থাকলে এই প্রদেশের নাম কি? শ্রোতা বন্ধু, চীনদেশে সব সময় শীত থাকে এমন প্রদেশ নেই। তবু চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হেইলোচিয়াংএর শীতকাল দীর্ঘ । শীতকালে হেইলোচিয়াং প্রদেশের তাপমাত্র চীনের অন্যান্য জায়গার তুলনায় অনেক নিম্ন। সবচেয়ে নিম্ন তাপমাত্র মাইনাস ৩০ ডিগ্রির কাছাকাছি । কিন্তু এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে যে , সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের উষ্ণায়নের প্রভাবে এখন শীতকালে হেইলোচিয়াং প্রদেশের তাপমাত্রাও তেমন নিম্ন নয়। এমন কি শীতকালে তুষনও কম পড়ে। সুতরাং গ্রীণ হাইসের নিষ্কাশন কমানোর জন্যে সারা বিশ্বের মানুষকে হাতে হাত মিলিয়ে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুরসিডাবাদ জেলার শ্রোতা সিদ্দাহারথা সারকার তাঁর চিঠিতে বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।এখন বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে কিছু বর্ণনা করবো। চীনের বৌদ্ধ ধর্মকে ' শাক্যমুনির ধর্মও' বলা হয়। চীনে বৌদ্ধধর্মের প্রথম আর্বিভাব হয় পূর্ব রাজবংশ আমলের প্রথম দিকে, ৫৭ খৃষ্টাব্দে, এবং বিস্তার শুরু হয় খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দী থেকে। সুই ও থাং রাজবংশ আমল চীনে বৌদ্ধধর্মের ব্যাপক প্রসার ও সমৃদ্ধির যুগ। সে সময়ে চীনে বৌদ্ধসন্ন্যাসীদের সংখ্যা ছিল অনেক, দেশের নানা অংশে তখন বৌদ্ধধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং চীনের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিভিন্ন বৌদ্ধধর্ম-শাখা ও সম্প্রদায়েরও উদ্ভব হয়েছে। খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর শেষ দিকে পূর্ব-জিন রাজবংশের ফা সিয়ান নামে চীনের একজন বৌদ্ধ-সন্ন্যাসী তখনকার ছাংআন শহর থেকে রওয়ানা হয়ে পশ্চিম দিকে তীর্থ যাত্রা করেন। এই যাত্রায় ১৪ বছর ধরে তিনি ভারতবর্ষ, সিংহল সহ ৩৯টিও বেশী দেশ পরিভ্রমণ করে সংস্কৃতভাষায় বৌদ্ধশাস্ত্র ও সাহিত্যের অনেক পুঁখিপত্র সঙ্গে নিয়ে চীনদেশে ফিরে আসেন। তাঁর পদাংক অনুসরণ করে এর পর চীনের অনেক বৌদ্ধসন্ন্যাসী ও পন্ডিত বৌদ্ধশাস্ত্র অধ্যয়ন করার জন্যে ভারতে যান। পক্ষান্তরে ভারত, বাংলাদেশ প্রভৃতি স্থানের বৌদ্ধসন্ন্যাসী ও পন্ডিতরাও বৌদ্ধর্ধম প্রচার করার জন্যে চীনদেশে আসেন। এখানে উল্লেখ্যযোগ্য, নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর গণসরকার বৌদ্ধদের ধর্মবিশ্বাসকে মর্যাদা করে চলেন এবং বৌদ্ধ মন্দি ও বৌদ্ধ স্থাপত্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত হয়। চীনের অনেক প্রসিদ্ধ মন্দির , যেমন, সিআন শহরের ডাছিএন মন্দির , সিং জিয়াংও মন্দির , পেইচিংয়ের গুয়াংজি মন্দির।
|