চীনের প্রথম মাহিলা রাষ্ট্রদূত কে?
ঢাকা জেলার শ্রোতা সিসেস আরিফা আলম তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে শতকরা কত ভাগ লোক দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস বরে? চীনে গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান প্রথা চালু আছে কি? এখন প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিছি। চীন সরকার প্রকাশিত এক সূত্রে জানা গেছে, বতর্মানে সারা চীনে ২ কোটি লোক দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। বিশ বছরের আগে অর্থাত ১৯৭৮ সালে চীনে ২৫ কোটি লোক দারিদ্র নিচে বসবাস করতেন। ১৯৭৮ সালের পর অর্থাত সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার পর চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি ঘটেছে। চীনা জনগণ বিশেষ করে গ্রামাবাসীদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি দ্রুততর হয়ে উঠেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে চীনে দারিদ্র বিমোচনের কাজ এখনও বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অঞ্চল ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যবধানের কারণে পূর্ব ও পশ্চিমাংশের মধ্যে উন্নয়নের অসামঞ্জজ্য রিরাজমান। চিকিত্সার খরচ দ্রুতভাবে অধিক বেড়ে যাওয়ার কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলের অধিবাসীদের রোগ আক্রান্ত হওয়ারতেও দারিদ্রের হার কিছুটা বেড়েছে।
এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিছি। নব্বই দশকের মাঝামাঝি চীনে ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা চালু ছিল । তবে এর আওতা খুব একটা বাড়েনি । সাম্প্রতি এশিয়ার উন্নয়ন ব্যাংক ঘোষণা করেছে, চীনের ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা ত্বরান্বিত করার জন্যে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক ব্রিটেন সরকারের দারিদ্র বিমোচন তহবিলের অর্থ প্রয়োগ করবে। মানব সম্পদ ও অর্থের অপ্রতুলতা চীনে ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থার উন্নতি মন্থর হওয়ার প্রধান কারণ। তবে গত কয়েক বছর ধরে, চীন সরকার ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব আরোপ করে চলছে। এবং এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় সাফল্যও অর্জিত হয়েছে। জানা গেছে, বতর্মানে চীনের কয়েকটি অনুন্নত অঞ্চলে পরীক্ষামূলকভাবেক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থার চালু হচ্ছে। ফলে অনুন্নত অঞ্চলগুলোর গ্রামাবাসীরা এতে হিতকর হয়েছেন।
গাজিপুরের শ্রোতা মোঃ শহীদুল কায়সার লিমন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন , চীনের প্রথম মাহিলা রাষ্ট্রদূত কে? উত্তরে বলছি, ডিন সিয়ে সন চীনের প্রথম মাহিলা রাষ্ট্রদূত। তিনি এক সময় নেদারল্যান্স ও ডের্মাকে চীনের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ছিলেন। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ার জন্য চীন বিদেশে মাহিলা রাষ্ট্রদূতকে পাঠাতে শুরু করে। এ পযর্ন্ত বেশ কয়েকজন মহিলাকে চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে চীনের কূটনৈতিক ব্রত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশী মহিলা রাষ্ট্রদূত হতে পারে।
বুগুড়া জেলার শ্রোতা এম এ বারিক তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের সবচেয়ে বড় নদী ইয়াংসি নদীর দৈর্ঘ্য কত? হুয়াংহো নদীর দৈর্ঘ্য কত?
এখন প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিছি। ইয়াংসি নদী চীনের দীর্ঘতম এবং পৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম নদী। ইয়াংসি নদীর মোট দৈর্ঘ্য ৬,৩০০ কিলোমিটার। সাংহাই, নানজিং, উহান এবং ছোংছিং-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোকে সংযুক্ত করে একটি প্রধান শিরাপথের মতো ইয়াংসি নদী প্রবাহিত।
এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিছি। হুয়াংহো চীনের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। ছিংহাই প্রদেশের বায়ান হার পবর্তের উত্তরাংশে হুয়াংহো নদীর উত্পত্তি হয়েছে। ছিংহাই, সিছুয়ান, গানসু, নিংসিয়া, অন্তর্মঙ্গোলিয়া, সেনসী, শানসী, হোনান আর শানডোং-এর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুয়াংহো নদী শানডোং-এর খেনলিজেলায় বোহাই সাগরে গিয়ে মিশেছে। হুয়াংহো নদীর দৈর্ঘ্য ৫,৪৬৪ কিলোমিটার। এখানে হুয়াংহো নদীর সম্পর্কে বিশেষভাবে বর্ণনা করতে চাই। পুরনো চীনে প্রায়ই হুয়াংহো নদী
ছাপিয়ে উঠে সবকিছু বন্যায় ভাসিয়ে দিত বলে এই নদীর নাম ছিল " চীনের দুঃখ"। তা ছাড়া, ইতিহাসে ছাব্বিশবার এই নদীর খাত বদল হয়েছে অতি প্রচন্ডভাবে এবং প্রত্যেকবারই চীনের জনগণের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুঃখদুর্দশা। নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর চীন সরকার হুয়াংহো নদীর উজানের দিকে ও মধ্য এলাকা বরাবর মৌলিক গুরুত্বসম্পন্ন কতকগুলো জলসংরক্ষণ প্রকল্প নির্মাণ করেছেন এবং ভাটির দিকে নদীর পাড়ের ভেড়িগুলোকে আরো মজবুত করেছেন, এবং এইভাবে নদীর দুপাশের জনসাধালনের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করেছেন।
|