বগুড়া জেলার শ্রোতা এস মিনহাজ উদ্দিন বিপুল তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, কত সালে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিমান যোগাযোগ স্থাপিতহয়? বাংলাদেশে চীনের প্রথম রাষ্ট্রদূতের নাম কি? উত্তরে বলছি, ২০০৫ সালের ১৮ মে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিমান যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে , এখন চীনের খুনমিং ও ঢাকার মধ্যে বিমান চলাচল করছে। প্রত্যেক দিন এই লাইন দিয়ে যাত্রীরা আসা-যাওয়া হয়। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। বাংলাদেশে চীনের প্রথম রাষ্ট্রদূতের নাম জান ইয়ং । তিনি অবসয় নিয়েছেন।
রাজশাহী জেলার শ্রোতা মো: ইসমাইল হোসেন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে শিশুদের জন্য কি ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে? উত্তরে বলছি, নয়াচীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের শিশু শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। চীনের রাষ্ট্র ও যৌথসংস্থা পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন নার্সারী তিন ধরনের। প্রথম ধরনের কিন্ডারগার্টেন ও নার্সারীর উদ্যোক্তা হলো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারী সংস্থা, ইনস্টিটিউশন ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। আর দ্বিতীয় ধরনের কিন্ডারগার্টেন ও নার্সারী পরিচালনা করে শহরের মহল্লা কমিটির। তৃতীয় ধরনের কিন্ডার্গাটেন ও নাসার্রী ব্যক্তিগত সংস্থার।
কিন্ডারগার্টেন তিন পযার্য়ে বিভক্ত। নিম্ন পর্যায়ের কিন্ডাগার্টেনে তিন থেকে চার বছরের শিশুরা ভর্তি হতে পারে, মধ্য আর উচ্চ পর্যায়ের কিন্ডারগার্টেনে চার থেকে পাঁচ এবং পাঁচ থেকে ছ বছরের শিশু র্ভতি হয়। তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের দেখাশুনা করা হয় নার্সারীতে। তা ছাড়া, বিভিন্ন বয়সের শিশুদের জন্য ভাষা, সাধারণ জ্ঞান, অংক বাজনা, চিত্রাংকন, খেলাধুলা প্রভৃতি বিষয়ে ক্লাস হয়। শিশুদের বয়সের তারতম্যেয় কথা বিবেচনা করে তাদের সদগুণ স্ফূর্ত করার জন্যে এবং নিজেদের ভূল ত্রুটি দূর করতে শিশুদের সাহায্য করার জন্যে নানা শিক্ষাপদ্ধতি প্রবর্তিত হয়েছে। কোন রকম শারীরিক শান্তি কড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ। কিন্ডারগার্টেন ও নার্সারীর বেশির ভাগ শিক্ষিকাই প্রশিক্ষণ কলেজের স্নাতক, অথবা সমান যোগ্যতাসম্পন্ন। শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয। বেশির ভাগ কিন্ডারর্গাটেনের নিজস্ব চিকিত্সক বা চিকিত্সা-কর্মী আছে। শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা হয়। শিশুদের দাঁত ও দৃষ্টিশক্তির দিকে সব সময়ে নজর রাখা হয়।
শিশুশিক্ষা জোরদার করার জন্যে পেইচিং, শাংহাই প্রভৃতি শহরে শিশু প্রকাশনালয় আছে। এই সব শিশু প্রকাশনালয় থেকে সহজবোধ্য বইপুস্তক বের হয়। ' ছবি দেখে কথা বলা' নামে একটি শিশু মাসিক পত্রিকা শিশুরা খুব পছন্দ করে। তা ছাড়া, পেশাদার ও অপেশাদার শিশু সাহিত্যিকরা ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ লেখকরা শিশুদের জন্যে প্রচুর বই লিখেছেন।
রাংপুর জেলার শ্রোতা সেলিম তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে কিভাবে পরিকল্পনাচালু হয়? উত্তরে বলছি, চীন সরকার সুপরিকল্পিতভাবে লোকসংখ্যা-বৃদ্ধির পক্ষপাতী। সংখ্যালঘু জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ সব অঞ্চলে জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কেপ্রচার চালানো হয় এবং পরিবার-পরিকল্পনা জনপ্রিয় ও কার্যকরী করার সব রকম কার্যক্রম পালন করা হয়। পরিবার-পরিকল্পনা এখন চীনের নতুন শাসনতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। চীনে রাষ্ট্র-পরিচালনা ও জনসাধারণের ইচ্ছা এই দুয়ের সমন্বয়ের ভিত্তিতেই পরিবার-পরিকল্পনা-সংক্রান্ত কাজকর্ম চলছে। বিভিন্ন বাস্তবতার নিরিথে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হয়। যে সব অঞ্চলে লোকসংখ্যা ও জন্মহার বেশী সে সব অঞ্চলে দেরীতে বিয়ের রীতি ও জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আছে। রাষ্ট্র পরিবার-পরিকল্পনা খাতে প্রতি বছর বিশেষ অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। জন্মনিয়ন্ত্রনের ওষুধপত্র ও উপকরণ রাষ্ট্র
বিনামূল্যে বিতরণ করে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত চিকিত্সা ও অস্ত্রোপচার বিনামূল্যেই করা হয়। গত কয়েক বছরে কতকগুলো অঞ্চলে পরিবার-পরিকল্পনার কাজে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে, এবং সাফল্যের সঙ্গে লোকসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। লোকসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার বছর বছর কমে আসছে।
|