চাঁপাই নবাগঞ্জ জেলার শ্রোতা এম গোলাম আজম তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের জাতীয় ফলের নাম কি? চীনের জাতীয় মাছের নাম কি? উত্তরে বলছি, চীন একটি বিশাল দেশ বলে বিভিন্ন জায়জায় বিভিন্ন ফল উত্পাদিত হয়। যেমন বাংলাদেশে যেসব ফল দেখা যায় চীনের কুওয়াংডং আর হাইনান প্রদেশে সে সব ফলও দেখা যায়। দক্ষিণ চীনে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের ফল উত্পাদিত হয়। উত্তর চীনে আপেল, পিছ ,পেয় ইত্যাদি ফল উত্পাদিত হয়। সুতরাং এ পযর্ন্ত চীনের জাতীয় ফল নির্বাচিত হয়নি। আমার মনে হয়, যদি এ নিয়ে সারা দেশে নিবার্চন করা হয়, তাহলে কমপক্ষে দশ বারো ধরনের ফল এক সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে আসবে নেবে। এক কথায় চীনে জাতীয় ফল নিধার্রন করা কঠিন। এখন দ্বিতীয় প্রশ্ন। আমার জানার মতে এ পযর্ন্ত চীনে কোন মাছ জাতীয় মাছ হিসেবে নিবার্চন করা হয়নি। তবে এখানে একটি কথা উল্লেখ করতে হবে, দক্ষিণ চীনে প্রচুর নদনদী আছে বলে মানুষ নদীর মাছ খেতে পছন্দ করেন আবার উত্তর চীনে নদনদী কম বলে মানুষ মাছ খেতে পছন্দ করেন না অথবা কেবল সামুদ্রিক মাছ খেতে পছন্দ করেন।
চট্টগ্রাম জেলার শ্রোতা মছুরুর জুনাইদ তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের দু:খ বলা হত কোন নদীকে? পেইচিং কোন তীরে অবস্থিত? উত্তরে বলছি, হুয়াংহো নদী অথার্ত হলুদ নদীকে চীনের দু:খ বলা হত। পুরানো চীনে প্রায়ই হুয়াংহো নদী ছাপিয়ে উঠে সবকিছু বন্যায় ভাসিয়ে দিত বলে এই নদীর নাম ছিল ' চিনের দু:খ'। তা ছাড়া, ইতিহাসে ছাব্বিশবার এই নদীর খাত বদল হয়েছে অতি প্রচন্ডভাবে এবং প্রত্যেকবারই চীনের জনগণের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দু:খদুদর্শা। নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর চীন সরকার হুয়াংহো নদীর উজানের দিকে ও মধ্য এলাকা বরাবর মৌলিক গুরুত্বসম্পন্ন কতকগুলো জলসংরক্ষণ প্রকল্প নিমার্ণ করেছেন এবং ভাটির দিকে নদীর পাড়ের ভেড়িগুলোকে আরো মজবুত করেছেন, এবং এইভাবে নদীর দুপাশের জনসাধারণের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করেছেন। হুয়াংহো নদী নিয়ে আরেকটু বণর্না করা যাক। হুয়াংহো নদী চীনের দ্বিতীয় দীঘর্তম নদী। ছিংহাই প্রদেশের বায়ান হার পবর্তের উত্তরাংশে হুযাংহো নদীর উত্পত্তি হয়েছে। ছিংহাই, সিছুয়ান, গানসু , নিংসিয়া, অন্তর্মঙ্গোলিয়া, সেনসী, শানসী, হোনান আর শানডোং এর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুয়াংহো নদী শানডোং এর খেনলিজেলায় বেহাই সাগরে গিয়ে মিশেছে। হুয়াংহো নদীর তীরে লানযৌ, বাওথৌ , যেংযৌ, জিনান এবং আরো কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ শহর অবস্থিত। হুয়াংহো নদীর অববাহিকা চীনের সভ্যতা, ইতিহাস ও সংস্কৃতির লালনাগর। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। পেইচিং শহরের চার দিকে কোন বড় বড় নদনদী নেই। আসলে পেইচিং শহর উত্তর চীনের মালভূমি ও থাইহাং পবর্তমালায় অবস্থিত। পেইচিং শহরের পূর্ব দিকের ১৫০ কিলোমিটার দূরে পোহাই সাগর। দক্ষিণ দিকে মালভূমি। উত্তর দিকে অন্তর্মঙ্গোলিয়া।
রংপুর জেলার শ্রোতা হোসেন আবেদ আলী তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের প্রধান গাড়ী নির্মান কারখানা কোনটি? উত্তর বলছি, চীনের ছাংছুন গাড়ী নির্মান কারখানাকে চীনের বৃহত্তম বড় এবং সবচেয়ে পুরাতন গাড়ী নির্মান কারখানা বলে গণ্য করা হয়। এই গাড়ী কারখানায় চীনের প্রথম গাড়ী নিমার্ন করা হয়।কিন্তু চীনে সংস্কার ও উন্মুক্ততা নীতি চালু হওয়ার পর অনেক বড় বড় শহরে গাড়ী নির্মানের কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অনেক গাড়ী কারখানা যৌথ পুঁজিবিয়োজিত কারখানা। বতর্মানে বিশ্বের কয়েকটি নাম-করা গাড়ী চীনে তৈরী করা হয়। শুধু চলতি বছরের প্রথম ন'মাসে চীনে ৫০ লাখ গাড়ী তৈরী করা হয়েছে। তবুও এই পরিমাণ চীনাদের চাহিদা পুরণ করতে পারে না। এখন অনেক চীনা লোকের ব্যক্তিগত গাড়ী আছে। সি আর আইয়ে মরে হয় প্রায় ৫ শতাংশ লোকের ব্যক্তিগত গাড়ী আছে।
ঝিনাইদহ জেলার শ্রোতা শ্রী সুকবেদ কুমার ঘোষতাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীন দেশে কি ছাগল পালিত হয়? উত্তরে বলছি, চীনের অন্তর্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে প্রচুর ছাগল পালিত হয়। সেখানে বিশাল তৃণভূমি আছে বলে অন্তর্মঙ্গোলিয়া হল চীনের প্রধান পশুপালন এলাকা । অবশ্যই চীনের গ্রামাঞ্চলে কৃষকরা সাধারণত ছাগল পালন করেন।
|