প্রঃ ২০০৮ সালে পেইচিংয়ে অলিম্পিক গেমস হচ্ছে এ বিষয়টাকে আপনি কিভাবে দেখেন?
উঃ অলিম্পিক গেমস একটি বড় ইভেন্ট। আমি ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি যে, এই গেমসে চীনারা আধিপত্য বিস্তার করেন। যেহেতু এবার তারা নিজেরাই আয়োজক, সেহেতু আমি মনে করি, অন্যান্য বারের চেয়ে এবারে তাদের প্রস্তুতি খুব ভাল। তারা আগের চেয়ে এবার আরও বেশি ভাল করবেন। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি।
প্রঃ আপনি জানেন, পেইচিং শহরে প্রায় দেড় কোটি লোক বাস করে। তারপরও কোন হৈহুল্লোড়, বাড়াবাড়ি নেই। এ বিষয়টি থেকে বাংলাদেশের মানুষের কী শেখার আছে?
উঃ আইন ও দেশপ্রেম দুটোই থাকতে হবে। শুধু থাকলে হবে না, মানতেও হবে। এটা আমার নিজের দেশ। সর্বপ্রথম আমার নিজের উন্নয়ন করতে হবে। কারণ আমি নিজেই দেশের একটি অংশ।
প্রঃ চীনে আপনি কোন কোন বিখ্যাত বা ঐতিহাসিক যায়গা দেখতে গিয়েছিলেন?
উঃ আমি আসলে একটি সেমিনারে অংশ নিতে এসেছিলাম। গতকাল কেবল এটি শেষ হয়েছে। আজ থেকে ঘুরতে বের হব। তিয়েন আন মেন স্কয়ার ও গ্রেট ওয়াল ইত্যাদি। তবে আমি তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে গিয়েছি। তবে সময়ভাবে খুব ভাল করে দেখতে পারি নি।
প্রঃ এই স্কোয়ারেই চেয়ারম্যান মাও সে তুং ১৯৪৯ সালের পয়লা অক্টোবর নয়াচীনের ঘোষণা দিয়ে ছিলেন। তারপর চীন ক্রমান্বয়ে এগিয়ে গেছে। চীন এখন পৃথিবীর অন্যতম সুপার পাওয়ার। চীনের লোকসংখ্যা ১৩০ কোটিরও বেশি। এত জনবহুল একটি দেশের এগিয়ে যাওয়াকে আপনি কীভাবে দেখেন?
উঃ চীনারা আসলে একটি পরিশ্রমী জাতি। পৃথিবীর অনেক কিছুরই আবিষ্কারক তারা। তারা ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে। বলতে পারেন এটা ঐতিহ্যগত। আমি আশাবাদি তারা আরও উন্নয়ন করবে।
প্রঃ চীন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। নানাভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোন কথা বলে না। এ বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?
উঃ এটা একটি চমত্কার দিক। আপনি চীনা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কেন কথা বলবেন। কূটনৈতিক আচরণ এ ধরনেরই হওয়া উচিত। কিন্তু অনেক দেশ তা মানছে না। হয়ত মতামত দিতে পারে যদি চাওয়া হয়। আগ বাড়িয়ে কিছু বলাটা শোভন নয়।
প্রঃ আগে চীন শুধু বাংলাদেশে রফতানিই করত। কিন্তু এখন অনেক পণ্য আমদানিও করে থাকে। আপনি জেনে খুশি হবেন, বাংলাদেশী ৮৪টি পণ্যকে চীন শুল্কমুক্ত ঘোষণা করেছে। এ বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?
উঃ শুধু বাণিজ্যের ক্ষেত্রেই নয়, পর্যটন উন্নয়নেও চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। আমি ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের সঙ্গেও কথা বলেছি। চায়না ট্যুরিজম অথরিটি বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরদের নামের তালিকা চেয়েছে। এটা খুব ভাল উদ্যোগ।
প্রঃ দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় বলে আপনি মনে করেন?
উঃ পিপলস টু পিপলস কন্ট্যাক্ট বাড়াতে হবে। আসা যাওয়ার মধ্যে থাকলে দু'দেশের জনগণই খুঁজে বের করতে পারবে, আসলে সম্পর্ক উন্নয়নে আরও কি করা উচিত।
প্রঃ দু'দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক বন্ধন বাড়াতে আরও কি করা যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন? ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়াতে চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাহলে তারাই নির্বাচন করতে পারবে কী কী ধরনের ব্যবসা করা যেতে পারে? যদি কেউ চীনে আসতে চান, তাহলে তার জন্য আপনার পরামর্শ কী?
উঃ বাংলাদেশ থেকে যারা চীনে, শুধু চীনে কেন বিশ্বের যে দেশেই ঘুরতে যাক; সে দেশ সম্পর্কে আগে জানতে হবে। কোন কোন যায়গায় ঘুরে বেড়ানো যায়, তাও খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এসব বিষয় যারা ভাল জানেন, তাদের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আমার কোম্পানী ডেল্টা আউটডোর যথাযথ সহযোগিতা করবে। আমাদের কোম্পানীর একটা ওয়েবসাইট আছে। সেখানে সার্চ করলে অনেক কিছু জানা যাবে।
প্রঃ চীনের খাবার আপনার কেমন লেগেছে?
উঃ আমি আগে থেকেই পিকিং ডাক ও মঙ্গোলিয়ান হটপটের কথা শুনেছি। আমি হুতোং-এ মঙ্গোলিয়ান হটপট খেয়েছি। যদিও আমার বন্ধুরা বলেছেন, এই হটপট এখন মঙ্গোলিয়ানদের চেয়ে চায়নিজরাই ভাল তৈরী করেন। মানটাও খুভ ভাল খাবার।
আমি যখন ছাত্র ছিলাম, তখন প্রায় পিকিং রেডিও শুনতাম। আমি বাংলাদেশের শ্রোতাবন্ধুদের বলব, সুযোগ থাকলে চীনে আসুন এবং পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম গ্রেট ওয়াল দেখুন।
|