বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার শ্রোতা বি, এম, সিপন আহমেদ তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে বসন্ত উত্সব পালন শুরু হয় কবে? উত্তরে বলছি, প্রত্যেক বছর বসন্ত উত্সব পালনের দিন ভিন্ন। তবে সাধারণত জানুয়ারী আর ফেবয়ারী এ দুই মাসে বসন্ত উত্সব পালন করা হয়।
বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার পান্তা পাড়া গ্রামের শ্রোতা উলা তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা কে? উত্তরে বলছি, চীনের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা হলেন চীনের সুপ্রসিদ্ধ নাট্যকার থিয়ান হান। চীনের জাতীয় সঙ্গীতের পুরনো নাম হল 'স্বেচ্ছাসেবীদের অভিযান'। ১৯৩৫ সালে রচিত এই গান ছিল ' যুগের ছেলেমেয়ে' নামক তখনকার এক ছায়াছবির প্রধান সঙ্গীত। এই ছায়াছবিতে ত্রিশের দশকে জাপান চীনকে আক্রমণ করার এবং চীনাজাতির সেই সংকট মুতুর্তে চীনের বুদ্ধিজীবীদের জাপ-বিরোধী প্রতিরোধ-ফ্রান্টে ঝাঁপিয়ে পড়ার কাহিনী প্রতিফলিত হয়েছে। এই আবেগপূর্ণ তীক্ষ্ণ গান ব্যক্ত করে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিরোধী মনোভাব। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় চীনের জাপবিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতিশীল সকল দেশের জনসাধারণের মধ্যেও এই গানটি প্রচলিত ছিল। নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই গানটিকেই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার নাসির খান তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের পররাষ্ট্র নীতি কি? উত্তরে বলছি, চীনের পররাষ্ট্র নীতি বলতে গেলে দুই অংশে ভাগ করা হয়। এক) স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন তার প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে আসছে। এই নীতির মূল কথা হল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতির ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সাম্য ও পারস্পরিক সুবিধার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিকশিত করা, তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের সঙ্গে ঐক্য ও সহযোগিতা জোরদার করা এবং আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করা ও বিশ্ব শান্তি অক্ষুন্ন রাখা। ১৯৫৪ সালের এপ্রিল মাসে , চীন ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিতে সর্বপ্রথম শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থানের নীতি উত্থাপিত হয়। দুই) বিদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনার মূল নীতি: গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার দিন, অথার্ত ১৯৪৯ সালের পয়লা অক্টোবর চীন সরকার কতৃর্ক প্রদত্ত একটি মহত ঘোষণায় বলা হয়: ' এই সরকার গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সমগ্র জনগণের একমাত্র বৈধ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে। সমতা, পারস্পরিক সুবিধা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি মযার্দা দেওয়ার নীতি পালনকারী যে কোন বিদেশী সরকারের সঙ্গে এই সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী। " পৃথিবীতে কেবলমাত্র একটি চীন আছে। তাইওয়ান চীনের একটি অবিচ্ছেদ্য ভূখন্ড। যে দেশ চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী তাকে তাইওয়ান কতৃর্পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে যে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারই চীনের একমাত্র বৈধ সরকার। শ্রোতা বন্ধুরা, অনুষ্ঠান শেষ হবার আগে আপনাদের একটি প্রশ্ন। প্রশ্নটি হল , চীনের বৃহত্তম উদ্যানের নাম কি" এতক্ষণ ' মুখোমুখি' শুনলেন। অনুষ্ঠান শোনার জন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ।
|