বাংলাদেশের িপ্রয়জন্মভূমি বেতার সংঘের সাধারণ সম্পাদক এম,মিনহাজ উদ্দিন বিপুল তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের কোন প্রদেশ সবচেয়ে বড়? উত্তরে বলছি, চীনদেশ পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। রাশিয়া ও ক্যানাডার পরই চীনের স্থান। বতর্মানে চীনে ৩১টি প্রদেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল আছে। আয়তনের দিক থেকে চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সবচেয়ে বড়। কিন্তু লোকসংখ্যার দিক থেকে হোনান প্রদেশ সবচেয়ে বড়। কিন্তু এর আগে সিছুয়ান প্রদেশের লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশী ছিল। এখন সিছুয়ান প্রদেশের ছুংছিন শহর চীনের কেন্দ্রীসরকারের সরাসরি কতৃর্ত্বাধীন শহরে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের পাবনা জেলার শ্রোতা মো: জাকারিয়া হক তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের প্রধান শহর কয়টি? চীনা জাতিদের প্রধান ধমীর্য় উত্সব কি? উত্তরে বলছি, চীনে অনেক বড় বড় শহর আছে। কিন্তু সাংহাই মহা নগরি চীনের সবচেয়ে বড় শহর। কিন্তু আয়তনের দিক থেকে রাজধানী পেইচিং সবচেয়ে বড়। সাংহাই শহর চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্য শহর। চীনের জাতীয় জি ডি পিতে সাংহাইএর অবদান উল্লেখযোগ্য। চীনা জাতিদের প্রধান ধমীর্য় উত্সব কি তা বলা একটু কঠিন । কারণ চীনে কয়েকটি ধর্ম প্রচলিত। এখানে মামি শুধু ইসলাম ধর্ম সম্বন্ধে আপনাদের জন্য বণর্না করতে চাই। বাংলাদেশের মতো চীনে ইসলাম ধর্ম প্রচলিত আছে। চীনে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার শুরু হয় খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্য ভাগে অথার্ত চীনের থাং রাজবংশ আমলে। চীনের থাং রাজবংশ ও সোং রাজবংশ আমলে ইসলাম ধর্মাবলম্বী আরব ও পারশ্যের ব্যবসায়ীরা স্থলপথে মধ্য-এশিয়ার উপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম চীনে আসতেন, আর নৌপথে আসতেন চীনের দক্ষিণ প্রান্তের গুয়াংযৌ শহরে ও দক্ষিণপূর্ব চীনের উপকূলীয় অঞ্চলের অন্যান্য বন্দরে। চীনের মিং রাজবংশ আমলের খ্যাতনামা নৌ-অভিযাত্রী যেং হো-এর নেতৃত্বে পরিচালিত নৌবহর সাত বার সমুদ্র পার হয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার অনেকগুলো দেশ সফর করে। বাংলাদেশ ও ভারতও তারা সফর করেছিলেন। যেং হোর নেতৃত্বাধীন নৌঅভিযাত্রীদলের মুসলমান সদস্যরা মক্কায় গিয়ে হজ করেছিলেন। চীনের হুই, উইগুর, কাজাক, উজবেক, তাজিক, তাতার, কিরগিজ , ডোংসিয়াং, সালার, এবং বোনান---এই দশটি সংখ্যালঘু জাতির মধ্যেই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। বাংলাদেশে যেমন ঈদুল ফিতর, কোরবানীর ঈদ পালিত হয় চীনের মুসলমান অধ্যুষিত এলাকাগুলোও এ সব ধর্মীয় উত্সব পালিত হয়। এ দুটি উত্সবে যারা মুসলমান তারা এক দিনের ছুটিও পান।
বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার শ্রোতা এস আব্দুর রাজ্জার তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের বৃহত্তম উদ্যানের নাম কি? উত্তরে বলছি, সারা চীনে অজস্র উদ্যান আছে, কিন্তু চীনের অন্যান্য জায়গার চাইতে রাজধানী পেইচিংএ উদ্যানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। যেমন সামার প্যালেস, স্বর্গ মন্দির উদ্যান, ইউয়েমিন উদ্যান ইত্যাদি। এ সব উদ্যানের মধ্যে ইউয়েমিন উদ্যানের আয়তন সবচেয়ে বড়। এই উদ্যানের আয়তন ৩৪৬ একর । সুতরাং এই উদ্যানকে চীনের বৃহত্তম উদ্যানবলে গণ্য করা হয়।
বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জ জেলার শ্রোতা মো: ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছে , চীনের শতকরা কতজন লোক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে? বাংলাদেশের মত চীনে কি ভিক্ষুক আছে? উত্তরে বলছি, গত মে মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত একটি সুত্রে জানা গেছে , গত মে মাস পযর্ন্ত চীনে ৪০ কোটি ২০ লাখ লোক মোবাইলের অধিকারী হয়েছে। এই সুত্রে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ সারা চীনে মোবাই ফোন ব্যবহারীদের সংখ্যা ৪০ কোটি ৪১ লাখ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সারা বিশ্বের মধ্যে চীনে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। অবশ্যই মোবাই ফোন ব্যবহারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিছি, বর্তমানে চীনের কোন কোন শহরের সড়কে ভিক্ষুক দেখা যায়। কিন্তু তাদের সংখ্যা খুব কম। এখন এ সব ভিক্ষুকদের আশ্রয় কেন্দ্র নেবার জন্যে চীন সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। সুতরাং বতর্মানে চীনের বড় বড় শহরে ভিক্ষুকের সংখ্যা অনেক কমেছে।
শ্রোতা বন্ধুরা, অনুষ্ঠান শেষ হবার আগে , আপনাদের জন্যে একটি প্রশ্ন। প্রশ্নটি হল কোন সালে চীন আর বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়? ।
|