বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার শ্রোতা অনিসিম বাসেল তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের প্রধান ব্যবসায় বাণিজ্য শহর কোনটা? উত্তরে বলছি, সাংহাই মহা নগরকে চীনের মূল ভূভাগের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য শহর বলে গণ্য করা হয়। চীনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি প্রবর্তিত হওয়ার আগে সাংহাই শহরের জি ডি বি সারা চীনের এক চতুর্থাংশ ছিল। কিন্তু গত বিশ বছরে চীনে সংস্কার ও উন্মুক্ততা নীতি প্রবর্তিত হওয়ার পর , চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে। চীনের অর্থনীতি কেবল সাংহাই শহরের ওপর নির্ভর করার ইতিহাস শেষ হয়েছে। বতর্মানে চীনের আরও কয়েকটি বড় বড় শহরের অর্থনীতিওদ্রুত গতিতে বিকশিত হয়েছে। এ সব শহরও চীনের বাণিজ্য শহরে পরিণত হয়েছে। যেমন চীনের থিয়েচিন শহর, গুয়াংচৌশহর, সেনজেন শহর, সুচৌ শহর , নিনপো শহর , ছুংচিং শহর ইত্যাদি। অবশ্যই ১৯৯৭ সালে হংকং চীনের কাছে প্রত্যাবর্তনের পর হংকং এই আন্তর্জাতিকশহর চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আর ব্যাংকিং শহরে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার শ্রোতা মো: তাজ আহম্মেদ মল্লিক তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের প্রথম মহিলা পাইলটের নাম কি ? উত্তরে বলছি, চীনের প্রথম মহিলা পাইলটের নাম ওয়াং ছাং জি। তিনি যেজিয়াং প্রদেশের সাওশিন নগরে জন্ম গ্রহণ করেন। পরে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাংহাই শহরে যান। তিনি সাংহাইএ তাঁর প্রাথমিক আর মাধ্যমিক স্কুলের পড়াশুনা শেষ করেন। ১৯২৭ সালে তিনি কুওমিনডাং সরকারের আর্থিক সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করতে যান। তিনি নিউইয়ার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ওখানে তিনি বিমান চলাচল বিষয়ে পড়তে শুরু করেন। যখন তিনি নিউইয়ার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন তখন তিনি মন দিয়ে পড়েন। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল মহল তাঁকে ' প্রাচ্য বীর নারী পাইলট' বলে গণ্য করতো। ১৯৩০ সালে তিনি স্নাতক হয়ে স্বদেশে ফিরে আসেন। তখন থেকে
তিনি বিমান চলাচল প্রশিক্ষণ স্কুলে শিক্ষাদান আর সম্পাদনার কাজে নিয়োজিত হন। বিমান লড়াইয়ের কৌশল শেখার জন্যে ১৯৩২ সালে তিনি আরেক বার যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাবার প্রস্তুতি নেন।কিন্তু তখন চীনে জাপান-রিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধ চলছিল। সুতরাং তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যেতে পারেন নি। ১৯৪৯ সালে তিনি তাইওয়ানে গিয়ে অব্যাহতভাবে বিমান চলাচল বিষয়ক শিক্ষায় নিমগ্ন হন। ১৯৬৭ সালে তিনি তাইপেই শহরে মারা যান। এখানে উল্লেখযোগ্য, নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর চীনের কমিউনিষ্ট পাটি এবং চেয়ারম্যান মাও নারী পাইলট তৈরীর সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫১ সালের এপ্রিল মাসে চীনের বিভিন্ন জায়গার ৫৫জন নারী শিক্ষার্থী চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মোডেনচিয়াংএর সপ্তম বিমান চলাচল প্রশিক্ষণ স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫২ সালের ৮ মার্চ চীনের প্রথম কিস্তির নারী পাইলট এই স্কুল থেকে স্নাতক হন। সে দিন চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের তত্কালীণ চেয়ারম্যান জু ডে আর অন্যান্য উচ্চ পদস্থ নেতা পেইচিং পশ্চিম উপকন্ঠের বিমান বন্দরে নারী পাইলটদের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তা ছাড়া, চীনস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের স্ত্রীরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ২০০৫ সালে চীনের ১২টি প্রদেশ থেকে আবার ২০জন মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রী বিমান চলাচল প্রশিক্ষণ স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫১ সালের পর এটা হল চীনের বিমান বাহিনীর গ্রহণ-করা অস্টম কিস্তির নারী পাইলট। এখন পর্যন্ত চীনে মোট প্রায় তিন শো নারী পাইলট তৈরী হয়েছে। তাঁরা চীনের বিমান চলাচল ক্ষেত্রে অনেক অবদান রেখেছেন।
বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার শ্রোতা মো: আব্দুল হামিদ তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে সবচেয়ে দামি ফুটবল খেলোয়াড় কে? সে কোন ক্লাবে খেলেন? প্রিয় শ্রোতা বন্ধু, আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একটু কঠিন । কারণ বর্তমানে চীনের ফুটবল খেলার মান যদিও অতটা উচু নয় তবু হাও হেই ডং নামক একজন খেলোয়াড় চীনা ফুটবল খেলোয়াড়দের মধ্যে অপেক্ষাকৃতভাল খেলোয়াড়। তিনি দশ বছরেরও বেশী সময় ধরে চীনের জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৯৭ , ১৯৯৮ , ২০০০, ২০০১ এবং ২০০২ সালে তিনি চীনের ক ইউনিয়ানের চ্যাম্পীয়ন হয়েছিলেন। বতর্মানে তিনি ব্রিটেনের সেফিল্ড দলের একজন খেলোয়াড়।
|