প্রঃ কামরুল হাসান, বাংলাদেশে কি বিষয় নিয়ে আপনি পড়াশুনা করেছেন?
উঃ আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতেরাষ্ট্র বিজ্ঞানে পড়াশুনা করেছি । ওখান থেকে আমি অনার্স ও মাষ্টার্স পাশ করেছি।
প্রঃ কিভাবে চীনে এসে চীনা ভাষা শেখার ধারণা তৈরী হল?
উঃ বাংলাদেশে এই মুহুর্তে অনেক চায়নীজ কোম্পানী গড়ে উঠছে। চায়নীজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আছে। আমি কয়েকটা কোম্পানীর কথা জানি, যারা অনেক সময় দোভাষী মানে ইন্টারপ্রেটার চেয়ে থাকে। যারা চীনা ভাষা জানে তাদের অনেক সময় তারা খুঁজে পায় না এটা আমার জানা ছিল। তখন থেকেই আমার এই চীনা ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহ জমে।
প্রঃ তার মানে আপনি ভবিষ্যতে এই ক্ষেত্রে কাজ করতে চান, তাইনা?
উঃ হ্যা, ভবিষ্যতে আমি চায়নীজ কোন কোম্পানী বা চায়নার সঙ্গে রিলেটেড কোন কোম্পানীতে চাকরী করতে চাই। যেখানে চায়নীজ জানা লোকের দরকার হবে।
প্রঃ আপনি যে বলেছেন, বাংলাদেশে এখন চীনা ভাষা বলতে পারে এমন লোকের সংখ্যা খুব কম নামি?
উঃ হ্যাঁ, আমার জানা মতে খুব বেশী না।
প্রঃ কিন্তু চাহিদা আরো বেশী।
উঃ হ্যাঁ, আরো বেশী দরকার যেহেতু চাহিদা বেশী।
প্রঃ আপনি বাংলাদেশে কতদিন চীনা ভাষা শিখেছেন?
উঃ বাংলাদেশে একবছর শিখেছি?
প্রঃ কি মনে হয়? খুব কঠিন?
উঃ দেশে যখন শিখেছি তখন তো খুব কঠিন মনে হয়েছিল। কারণ তখন ঐ সময় আমি একটা কোম্পানীতে চাকরী করতাম যেখানে চায়নীজ ইন্জিনিয়াররা যেতেন। ওদের সাথে আমি যখন কথা বলতাম ওরা অনেক সময় আমার চীনা কথা বুঝতে পারতো না। কারণ আমার টোনের সমস্যা ছিল। উচ্চারণে সমস্যা ছিল। বাংলাদেশে আমি যার কাছে শিখতাম উনি বাংলাদেশী টীচার। যার কারণে আমার মনে হয় উনারও উচ্চারণে সমস্যা ছিল। আরেকজন টীচার ছিলেন চায়নীজ যার ক্লাস আমি করতে পারি নি। কিন্তু, বেশীর ভাগ সময় উনি ইংলিশে বলতেন। চায়নীজ বলতেন না। যার কারণে আমার প্র্যাকটিস করাটা হয়ে উঠেনি ঐ সময়।
প্রঃ ঐ শিক্ষক কি একজন মহিলা?
উঃ না, পুরুষ। পরে যিনি এসেছেন তিনি মহিলা । তার ক্লাসও আমার করা হয় নি। উনি তো পরে এসেছেন তাই ফাষ্ট ইয়ারের ক্লাস নিতেন। আমি তখন সেকেন্ড ইয়ারে সে জন্যই ক্লাস করা হয় নি।
প্রঃ আপনার আগের চীনা শিক্ষক তার নাম কি?
উঃ আব্দুল হাই।ঐ সময় চুংলাই হুয়ে চায়নীজ শিখাচ্ছিলেন।
প্রঃ হ্যাঁ, উনার সঙ্গে আমিও পরিচিত।
উঃ এখন আছেন ইয়াং লাওশী। হ্যাঁ ইয়াং লাওশীর ক্লাসও আমার করা হয় নি। যে দিন সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছি তখন সপ্তাহে দুটি ক্লাস হতো। একটা উনি নিতেন একটা আফজাল স্যার। আমার চাকরী করার কারণেই ক্লাসগুলো করা হয় নি।
প্রঃ আপনি চুং ওয়াংশির বাড়ীতে কখনো গিয়েছিলেন?
উঃ হ্যাঁ, চুং ওয়াংশীর বাড়ীতে গিয়েছি। আপনারা বাংলাদেশ ছিলেন। তখন আমি ভর্তি হয়ে ছিলাম। আমি আপনাদের দেখেছি কিন্তু চায়নীজ স্টুডেন্ট যারা বাংলা ভাষা শিখছে। তাদের একজনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল, নাম হচ্ছে রুবী।
প্রঃ রুবী, এখনতো বাংলাদেশে।
উঃ হ্যাঁ, আমি জানি। এ্যমবেসীতে চাকরী করছে।
প্রঃ চীনে এসে চীনের সবকিছু জানার পর আপনার কি প্রতিক্রিয়া।
উঃ চীনে এসে সবকিছু জেনে মনে হচ্ছে সবকিছুই বলতে পারছি, যেমন চীনের ভাষা, খাওয়া দাওয়া, কালচার হ্যাঁ সবকিছুই। এখানে আমার ভাল লাগছে। প্রথম যখন আসলাম তখন খাবার নিয়ে সমস্যা ছিল। আমাদের দেশের খাবার আপনি জানেন, আমাদের দেশের খাবারের সাথে চীনের খাবারের কোন মিল নেই। ওখানে শুধু একটু সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে এটাও আমার অভ্যেস হয়ে গেছে। আমি ডাইনিং -এ খেয়ে থাকি। চীনের ভাষাতো দেশে আমি কিছু শিখেছিলাম। এখানে এসে সেগুলো যখন শুনেছি, তখন বুঝতে পেরেছি এবং এখানে এসে আমার ভাষার ক্ষেত্রে অনেকটা ইমপ্রুভ করেছে। বলা এবং শোনার ফলে। এখানে প্রতিদিন ৪টা ক্লাস করতে হয়। এখানে ক্লাসে খুব প্রেসার , পড়া লেখা করতে হয় খুব বেশী। প্রতিদিন যথেষ্ট সময় পড়তে হয়। হোম ওয়ার্ক করতে হয়। এটা আমার খুব ভালো লেগেছে যে এখানে প্রেসার থাকার কারণে স্বল্প সময়ে এখানে এসে শিখতে পারছি আমরা এক বছরের জন্য এসেছি এই এক বছরে আমরা অনেক শিখে যেতে পারবো।
প্রঃ আপনি উহানের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন এখন?
উঃ আমি হোয়াংচুং নর্ম্যাল ইউনিভার্সিটিতে।
প্রঃ উহানের খাবারগুলো বাংলাদেশের খাবারের মত, তাইনা? ঝাল বেশি খাবারে।
উঃ হ্যাঁ, এখানে সিচুয়ান যে রেষ্টুরেন্টগুলো আছে ওখানকার খাবারে কিছুটা ঝাল। হ্যাঁ, প্রথম দিকে এসে ঔ সিচুয়ান রেষ্টুরেন্টগুলোতেই খেতাম। আস্তে আস্তে এখন সব খাবারই খেতে পারি। তওফু ছাড়া। তওফুটা ভালো লাগে না।
|