বাংলাদেশের নারায়নগন্জ জেলার শ্রোতা মনোয়ার হোসেন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন , চীনে শতকরা কত জন লোক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে? উত্তরে বলছি, চলতি বছরের জুন মাসের জরিপ অনুযায়ী, বতর্মানে চীনে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪০ কোটি ২০ লাখে দাঁড়িয়েছে। অন্য কথায়, চীনের মোট লোকসংখ্যার প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ লোক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। শহরাঞ্চলে ৯৯ শতাংশ লোক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। এমন কি মাধ্যমিক স্কুলের অনেক ছাত্র-ছাত্রীও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। চীনের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত ফোন করার পরিবর্তে ম্যাসেজ পাঠাতে পছন্দ করে। সুতরাং কোন বন্ধু বা সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলতে হয় সাধারণত পরস্পরের মধ্যে ম্যাসেজপাঠানো হয়।যে কোন উত্সব উপলক্ষে পরস্পরকে অভিনন্দন জানানোর জন্যে লোকেরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। চীনের প্রত্যেক বড় বড় দোকানে মোবাইল ফোন বিক্রি হয়। মোবাইল ফোনের রকমাতিও বৈচিত্রময়। চীনের তথ্য ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাস পযর্ন্ত সারা চীনের টোলিযোগাযোগ শিল্পে থেকে ৩৪ বিলিয়ন ইউয়ানের আয় অর্জিত হয়েছে। এখন অনেক মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের সঙ্গে লগইন ব্যবস্থা তৈরী হয়েছে। তা ছাড়া, অদুর ভবিষ্যতে বোবাইল ফোন দিয়ে টিভি দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার শ্রোতা জনি সূত্রধর তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে কোন প্রজাতির গাছ সবচেয়ে বেশী দেখা যায়? প্রিয় বন্ধু, আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একটু কঠিন। কারন, চীন একটি বিশাল দেশ। বিভিন্ন জায়গার জলবায়ুও ভিন্না। সুতরাং দক্ষিণ এবং উত্তর চীনে গাছপালার প্রজাতি ভিন্ন। বাংলাদেশে যেগুলো গাছ দেখা যায় চীনের ইয়ুন্নান ও গুয়াংডোং প্রদেশেওসে সব গাছও দেখা যায়। কারণ এ দুটো প্রদেশের জলবায়ু প্রায় বাংলাদেশের মত। উত্তর চীনে শীতকালে বেশী ঠান্ডা পড়ে বলে উত্তর চীনে বেশির ভাগ গাছ হল পোপ্লা গাছ। জানা গেছে এ প্রজাতি গাছ শীত সহ্য করতে সক্ষম।
লালমনিহাট জেলার শ্রোতা মো:রাশিগুল ইসলাম তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে কত শতাংশ লোক কৃষি জাজে জড়িত? উত্তরে বলছি, বাংলাদেশের মত চীনও একটি কৃষি প্রধান দেশ। চীনে প্রায় ৮০ শতাংশ লোক গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে। অন্য কথায় প্রায় ৮০ শতাংশ লোক কৃষি কাজে জড়িত। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম যেসব দেশে কৃষির প্রচলন হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে একটি হলো চীনদেশ। ' বৃষিকে বুনিয়াদ করা ও শিল্পকে পরিচালিকা বরা'—এই সাধারণ নীতি অনুযায়ী চীন জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়ন করে চলেছে, এবং কৃষি, হাল্কা, শিল্প ও ভারী শিল্প---এমনি ক্রমিক অগ্রাধিকার অনুযায়ী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। জাতীয় অথর্নীতির সাধারণ নীতি কাযর্করী করার সঙ্গে সঙ্গে সরকার কৃষি উন্নয়নের সবার্ত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় অথর্নৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করার সময়ে রাষ্ট্র সবর্প্রথমে কৃষি উন্নয়নের চাহিদা বিবেচনা করে উন্নত মানের কৃষি-যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, কীটনাশক ঔষধ, এবং পরিবহণের আধুনিক যন্ত্রসরঞ্জাম দিয়ে কৃষিকে সুসজ্জিত করেছে। কৃষিজমি উন্নয়ন প্রকল্প, জল-সংরক্ষণ ও জলসেচ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রাথমিক গঠনের কাজে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ ছাড়াও রাষ্ট্র প্রত্যেক বছর কৃষিকর হ্রাস ও রাষ্ট্র থেকে কৃষিজাত দ্রব্য ক্রয়ের মূল্য বৃদ্ধি , উত্পাদন উপকরণের মূল্য হ্রাস ও কুম সুদের ঋণদান করার ব্যবস্থা ও গ্রহণ করেছে। বতর্মানে চীনের উপকূলীয় অঞ্চল এবং পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে ব্যবধান রয়েছে। চীনের পশ্চিমাঞ্চলের অনুন্নত অবস্থা পরিবর্তনের জন্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার ' পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন অভিযান' চালু করেছে। এ অঞ্চলের উন্নয়নে প্রত্যেক বছর চীন সরকার অনের অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। তা ছাড়া, চীনের উন্নত অঞ্চল কৃষি বিশেষজ্ঞ এবং প্রকৌশলীও এ সব অনুন্নত অঞ্চলে পাঠিয়েছে। এ সব অনুন্নত অঞ্চল সরকারের প্রদত্ত সুবিধাজনক নীতি উপভোগ করতে পারে। এতক্ষণ প্রত্যেক বুধবারের বিশেষ অনুষ্ঠান 'মুখোমুখি' শুনলেন। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে আপনাদের একটি প্রশ্ন। প্রশ্নটি হল পেইচিং ও সাংহাই আয়তনে কোন শহর বড়? অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
|