দ্বিতীয়টি হল কত জন বাংলাদেশী নাগরিক চীন দেশে যান? শ্রোতা বন্ধু, আপনার এ দুটো প্রশ্নের উত্তর দেয়া সত্যিই একটু কঠিন। কেননা, সম্প্রতি দু'দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান লাইনও চালু হয়েছে। প্রত্যেকদিন কত চীনা নাগরিক বাংলাদেশে যান এবং কতজন বাংলাদেশী নাগরীক চীনে আসেন তা ষ্পষ্টভাবে বণর্না করা অত্যন্ত কঠিন। বতর্মানে চীনের অনেরক শিল্প-প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে পুঁজিবিনিয়োগ করতে গিয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ীদের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এ সব মিলে মানুষের সংখ্যা হিসাব করা সত্যিই কঠিন ব্যাপার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক বাংলাদেশী ব্যবসায়ী চীনে ব্যবসা করতে আসেন। জানা গেছে, প্রত্যেক দিন অনেক চীনা ও বাংলাদেশী দু'টো দেশের মধ্যে আসা-যাওয়া করেন। প্রত্যেক বছর কমপক্ষে দশ বারো জন বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী চীনে পড়াশুনা করতে আসেন। হয়তো, বাংলাদেশে পড়াশুনা করতে যাওয়া চীনা ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কম। সুতরাং দু'দেশের আসা-যাওয়া নাগরিকদের সংখ্যা গননা করা যায় না বললেই চলে।
রাজশাহী জেলার শ্রোতা মাহমুদল হাসান তাঁর চিঠিতে চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের বেতার ও টেলিভিশন সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন। তিনি জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কয়টি কেন্দ্রীয় বেতার ও টেলিভিশন আছে? উত্তরে বলছি, চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের দুটো বেতার ও একটি টেলিভিশন আছে। এ দুটো বেতারের নাম হল , কেন্দ্রীয় গণ বেতার, চীন আন্তর্জাতিক বেতার এবং কেন্দ্রীয় টেলিভিশন। কিন্তু এখানে এ সম্বন্ধে একটু বিস্তারিতভাবে নণর্না করতে চাই। ১৯৪৫ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর চীনা কমিউনিষ্ট পাটির প্রতিষ্ঠিত প্রথম বেতারকেন্দ্র ইয়ানআন সিনহুয়া বেতারকেন্দ্র চালু হয়। পরে এই বেতারকেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ হয় উত্তর সেনসী সিনহুয়া বেতারকেন্দ্র। ১৯৪৯ সালের ২৫শে মার্চ এই বেতারকেন্দ্র স্থানান্তরিত করে পেইচিংয়ে নিয়ে আসা হয়। গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এই বেতারকেন্দ্র কেন্দ্রীয় গণ বেতার কেন্দ্র নামে পরিচিত হয়ে সারা দেশে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। ১৯৪৫ সালের ৩ই ডিসেম্বর চীন আন্তর্জাতিক বেতার প্রতিষ্ঠিত হয়। চলতি বছর ৩ই ডিসেম্বর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ৬৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে ধারাবাহিক উদযাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন অথার্ত সি সি টি ভির পুরাতন নাম ছিল পেইচিং টেলিভিশন। ১৯৫৮ সালের পয়লা মে পেইচিং টেলিভিশন পরীক্ষামূলকভাবে এবং এই বছরই ২রা সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। ১৯৭৮ সালের পয়লা সে পেইচিং টেলিভিশন নাম বদলে
বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের তুলনায় চীনের বনভূমির পরিমান অপেক্ষাকৃত কম ' চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন নামে পরিচিত হয। কেন্দ্রীয় সরকারের দুটো বেতার ও একটি টেলিভিশন ছাড়া, বিভিন্ন প্রদেশ, কেন্দ্রশাসিত মহানগর ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং প্রাদেশিক কতৃর্ত্বাধীন শহর স্থানীয়ভাবে নিজ নিজ বেতারকেন্দ্র আর টেলিভিশনকেন্দ্র চালায়।
দিনাজপুর জেলার শ্রোতা গোলাম রসুল তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছে, চীনের বনভূমির শতকরা পরিমান কত? চীনের সবচেয়ে বড় বনের নাম কি? উত্তরে বলছি, বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের তুলনায় চীনের বনভূমির পরিমান অপেক্ষাকৃত কম। একটি পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী, ২০০৩ সালের শেষ নাগাদ চীনে বনভূমির পরিমাণ মোট ভূখন্ডের শতকরা ১৩ দশমিক ৪ ভাগ। গত কয়েক বছর ধরে চীন সরকার পরিবেশ সংরক্ষণের দিকে বেশ মনোযোগ দিচ্ছে। এখন বনায়নের আয়তন ক্রমেই বাড়ছে। আশা করি জনসাধারণের পরিবেশ সংরক্ষণের সচেতনতা বাড়ানো সঙ্গে সঙ্গে চীনের বনায়নের আয়তন আরও বাড়বে। এখন দ্বিতীয়প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি, চীনের সবচেয়ে বড় বনের নাম ডাশিংআনলিন বন। এই বন চীনের হেইলোংজিয়াং প্রদেশে অবস্থিত। এতক্ষণ আপনারা আজকের মুখোমুখি শুনলেন। অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার আগে আপনাদের জন্যে একটি প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর আপনাদের পাঠানো চিঠিগুলোতে লিখবেন। প্রশ্নটি হল : চীনে সরকারের কি কি প্রধান প্রধান সংবাদপত্র আছে?
আজকের বিশেষ অনুষ্ঠান " মুখোমুখি' এখানে শেষ হল। আমাদের সঙ্গে থেকে অনুষ্ঠানটি শোনার জন্যে আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ। আল্লা আফেজ।
|