**চীনের তুলা চাষের অবস্থা কেমন?
প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার হরিপুর গ্রামের সোনার বাংলা রেডিও ক্লাবের পরিচালক এ এইচ এম গোলাম রসুল
উঃ বর্তমানে চীনে দশ বারোটি প্রদেশে তুলা চাষ করা হয়, মোট উত্পাদনের পরিমাণ ৬০ লাখ টনেরও বেশি। এর মধ্যে সিনচিয়াং অঞ্চলে তুলার উত্পাদন অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে। কথায় আছে, বিশ্বের তুলা পরিস্থিতি জানতে চাইলে চীনকে দেখুন, চীনের তুলা পরিস্থিতি জানতে চাইলে সিনচিয়াং দেখুন। সিনচিয়াংয়ে বিপুল পরিমাণে তুলা উত্পাদিত হবার সুবাদে চীন দ্রুতই বিশ্বের বৃহত্তম তুলা উত্পাদক দেশে পরিণত হয়েছে।
সিনচিয়াংয়ের তুলা উত্পাদনে সাফল্য অর্জনের দুটি প্রধান কারণ হচ্ছে , প্রথমত, উন্নত মানের চাষ এবং প্রশাসনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ। দ্বিতীয়তঃ সেখানকার উপযুক্ত আবহাওয়া। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সিনচিয়াংয়ের আবহাওয়া তুলা চাষের সঙ্গে সবচেয়ে খাপ খায়, সেজন্য সেখানে উত্পাদিত তুলার গুণগত মানের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের তুলার কোনো তুলনাই হয় না।
সিনচিয়াংয়ের তুলা পৃথিবীতে সুনাম ছড়িয়েছে । সিনচিয়াংয়ের উত্পাদিত তুলা বিশ্বের মোট পরিমানের শতকরা ৮ ভাগ। চীন থেকে রপ্তানী করা তুলার প্রায় সবই সিনচিয়াংয়ে উত্পন্ন।
**চীনের প্রধান অর্থকরী ফসলগুলোর নাম কি কি?
প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের পাবনা জেলার কালু গ্রামের স্বর্ণা রেডিও ক্লাবের পরিচালক মোঃ আজিজ মাহবুর রফিকুল বিনু , জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর ব্রাইট লাইফ ওয়ার্ল্ড রেডিও ফ্যান ক্লাবের সভাপতি মোঃ সুরুজ্জামান তরফদার, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়ার কাহালগাঁও গ্রামের মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, মুজাখালী গ্রামের মোঃ নেয়ামুল হক মন্ডল, খুলনা জেলার গগন বাবু রোডের বি এম ফয়সাল আহমেদ
উঃ চীন এক কৃষি প্রধান দেশ, আমাদের দেশের জনসংখ্যার অধিকাংশই কৃষক, কৃষি চীনের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ স্থানে রয়েছে।
যদিও চীনের স্থলভাগের আয়তন ৯৬ লাখ বর্গকিলোমিটার, কিন্তু আবাদি জমির আয়তন মাত্র ১২ লাখ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার, পৃথিবীর আবাদী জমির আয়তনের প্রায় শতকরা ৭ ভাগ। চাষাবাদ হচ্ছে চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃষি উত্পাদন বিভাগ। চীনের প্রধান খাদ্যশস্য হচ্ছে ধান, গম, ভূট্টা, বীন ইত্যাদি। অর্থকরী ফসলের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত আছে তুলা, চীনা বাদাম, সরিষা, আখ এবং বীট ইত্যাদি।
চীনের কৃষির দ্রুত উন্নয়ন শুরু হয়েছে ১৯৭৮ সালে গ্রাম সংস্কারের পর থেকে। সংস্কার ব্যাপক কৃষকদের জন্যে সুযোগ-সুবিধা বয়ে এনেছে, গ্রামাঞ্চলের সুপ্ত উত্পাদন শক্তিকে মুক্ত ও বিকশিত করেছে, বিশেষ করে খাদ্যশস্যের উত্পাদনের দ্রুত প্রবৃদ্ধি এবং কৃষির কাঠামোর ধারাবাহিক সুবিন্যাস ত্বরান্বিত করেছে, ফলে চীনের কৃষি খাতে লক্ষ্যনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এখন চীনের খাদ্যশস্য, তুলা, সরিষাদানা, তামাক পাতা, মাংস, ডিম, জলজ খাদ্য, শাকশব্জির উত্পাদন পরিমাণ সবই পৃথিবীর প্রথম স্থানে রয়েছে।
**চীনের চিনি উত্পন্ন হয় কোন উদ্ভিদ থেকে? আপনাদের দেশে ও কি আখ হতে চিনি উত্পন্ন হয়? আপনাদের দেশে একর প্রতি কত কেজী আখ উত্পন্ন হয়?
প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা গ্রামের মোঃ নাজিম উদ্দিন
উঃ চীনে প্রধানতঃ আখ এবং বীট থেকে চিনি উত্পন্ন হয়। পৃথিবীতে চীন সবচাইতে আগে আখ দিয়ে চিনি উত্পাদনকারী দেশগুলোর অন্যতম, এর ইতিহাস ২ হাজারাধিক বছর। আখ প্রধানতঃ চীনের কুয়াংশি , ইয়ুন্নান এবং কুয়াংতুং প্রভৃতি অঞ্চলে চাষ করা হয়। বীট থেকে চিনি উত্পাদন মাত্র সাম্প্রতিক কয় দশক আগে শুরু হয়, চীনের সিনচিয়াং, হেইলুংচিয়াং এবং অন্তঃমঙ্গোলিয়া অঞ্চলে বীট চাষ করা হয়। তবে বীট দিয়ে চিনি উত্পাদন ব্যয়বহুল বলে চীনের ৮০ শতাংশ খাবার চিনি আখ থেকে উত্পন্ন হয়।
বর্তমানে চীনের বার্ষিক চিনি উত্পাদন পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টন, বিশ্বের মোট পরিমাণের প্রায় ৭.৫ শতাংশ।
|