চীনের মহা প্রাচীরের উপরে কি মানুষ চলাচল করে?
প্রশ্নকর্তাঃভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ওক্রফোর্ড ওয়ার্ল্ড লিসেনার্স ক্লা
বের তানি খাতুন
উঃ 'বিশ্বের সাতটি বিম্ময়ের নির্মাণের সময় সবচেয়ে দীর্ঘ ও প্রাচীনকালের বৃহত্তম সামরিক প্রতিরক্ষা প্রকল্প। এই সুমহান প্রাচীর চীনের ভূখন্ডে ৭ হাজার কিলোমিটারেরও বেশী বিস্তীর্ণ। ১৯৮৭ সালে মহা প্রাচীর বিশ্ব উত্তরাধিকারের তালিকায় অন্তভুর্ক্ত হয়।
মহা প্রাচীরের ঐতিহাসিক আর সাংস্কৃতিক তাত্পর্য এবং পযর্টনের মূল্য সীমাহীন। চীনে একটি প্রবাদ আছে: ' মহা প্রাচীর না গেলে সে আসলে পুরুষই নয়'। দেশী-বিদেশী পযর্ট
করা মহা প্রাচীরে আরোহন করাকে গৌরবের ব্যাপার মনে করেন। চীন সফরকারী বহু বিদেশী শীর্ষনেতারাও মহাপ্রাচীরে আরোহন করেন। এখন মহা প্রাচীরের কয়েকটি অংশ অপেক্ষাকৃতভাবে সংরক্ষিত রয়েছে। যেমন পেইচিংএর
বিখ্যাত বাডালিন,
সিমাডে, মুতিয়েনইউ, মহা প্রাচীরের পূর্ব দিকের সানহাই গুওয়াং এবং মহা প্রাচীরের সর্ব পশ্চিম দিকে গানসু প্রদেশের চিয়াইউ গুওয়াং প্রভৃতি। এ সব জায়গা চীনের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। সারা বছর এ সব জায়গায় পযর্টকদের ভীড় লেগেই থাকে।
চীনের বিখ্যাত যাদুঘরের নাম কি, এটি কোন রাজার আমলে তৈরি হয়?
প্রশ্নকর্তাঃবাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বেতার বন্ধু শ্রোতা সংঘের মোঃ পারভেজ্ মল্লিক
উঃ কারণ ফরবিডেন সিটি অথবা নিষিদ্ধ নগরী হচ্ছে চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং বৃহত্তম যাদুঘর, সেজন্য আমি এ সম্বন্ধে কিছু জানাবো।
চীনের রাজধানী পেইচিংএর কেন্দ্রে একটি ঝকঝকে এবং দেখতে সুমহান প্রাচীন স্থাপত্যের সংগ্রহশালা আছে।এটা হলো বিশ্ব বিখ্যাত পেইচিং নিষিদ্ধ নগরী অর্থাত্ রাজ প্রাসাদ। পেইচিং রাজ প্রাসাদ হলো চীনের প্রাচীন প্রাসাদ স্থাপত্যগুলোর মধ্যে একটি উজ্জ্বল মুক্তা এবং বতর্মানে পৃথিবীতে সংরক্ষিত সবচেয়ে বিরাটাকার, সবচেয়ে সম্পূর্ণ প্রাচীনকালের কাঠের তৈরী স্থাপত্যের সংগ্রহশালা।১৯৮৭ সালে পেইচিং রাজ প্রাসাদ 'বিশ্ব উত্তরাধিকা তালিকায়' অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
১৪০৬ সালে মিং রাজবংশের দ্বিতীয় সম্রাট জু লির নিদের্শে পেইচিং রাজ প্রাসাদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে ১৪ বছর লাগে। ১৯১১ সালে ছিং রাজ্যমলের শেষ পযর্ন্ত প্রায় ৫০০ বছরে মোট ২৪ জন সম্রাট এখানে বসবাস করেন এবং দেশ পরিচালনা করেন। পেইচিং রাজ প্রাসাদের আকার এত বিরাট, শৈলী এত সুন্দর, স্থাপত্য এত সুমহান এবং আসবাবপত্র এত বিলাসী তা পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। পেইচিং রাজ প্রাসাদের আয়তন ৭ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারেরও বেশী। দক্ষিণ-উত্তর দৈর্ঘ্য প্রায় এক হাজার মিটার, পূর্ব-পশ্চিম প্রস্থ প্রায় আট শো মিটার। চার দিকে দশ মিটারেরও বেশি উচু দেয়াল আছে। দেয়ালের বাইরে ৫০ মিটারেরও বেশি প্রশস্থ নগর বেষ্টিত নদী আছে।
রাজ প্রাসাদ হিসেবে পেইচিং রাজ প্রাসাদে অজস্র মূল্যবান পুরাকীর্তি সংরক্ষিত আছে। পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী, পেইচিং রাজ প্রাসাদে ১০ লক্ষেরও বেশী মূল্যবান পুরাকীর্তি আছে।
দেশী-বিদেশী স্থাপত্যশিল্পীদের সর্বসম্মত স্বীকৃতি হলো, পেইচিং রাজ প্রাসাদের নকশা আর স্থাপত্য হল একটি অদ্বিতীয় প্রকল্প। এতে চীনের সুদীর্ঘকালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রতিফলিত হয়েছে এবং ৫০০ বছর আগেকার স্থাপত্যে চীনের স্থাপত্যশিল্পীদের চমত্কার সাফল্য প্রকাশিত হয়েছে।
|