প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের নড়াইলের বিলাফরের শারিপপুরের কালিয়া লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি পলাশ বিশ্বাস
উঃ ১৯৭৮ সালের মার্চ মাসে চীনের তত্কালীন উপ-প্রধানমন্ত্রী লি সিয়ান নিয়েন বাংলাদেশ সফর করেন। এটা হচ্ছে চীনের কোন রাষ্ট্র নেতার প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরকালে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনীতিএবং প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে চীনের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী লি পেং বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক মৈত্রী সফর করেন। সফরকালে দু'পক্ষ চীন-বাংলাদেশ পারস্পরিক ভিসা-মুক্ত চুক্তি , বাণিজ্য চুক্তি প্রভৃতি দলিল স্বাক্ষর করেছে।
২০০২ সালের জানুয়ারী মাসে চীনের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী চু রুং জি বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দু'পক্ষ পুনর্বার ঘোষণা করেছে, চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাঁরা প্রধানতঃ দু'দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য বিষয়াদিতে মত বিনিময় করেছেন। দু'পক্ষ দু'দেশের সরকারী অর্থনৈতিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চুক্তি, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের হস্তান্তর পত্র, ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত চীন-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি প্রভৃতি সাতটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
২০০৫ সালের ৭ থেকে ৮ এপ্রিল চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক সফর করেন। সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াজুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন, বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য মহলের সুবিখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি বাংলাদেশের চীন পন্থী বন্ধুভাবাপন্ন সংস্থাগুলোর উদ্যোগে আয়োজীত চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনী ছবি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দু'পক্ষ দীর্ঘকালীন বন্ধুত্ব, সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণ এর সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে একমত হয়েছে। এ বছরকে "চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী বছর" বলে ঘোষণা করেছেন ওয়েন চিয়া পাও । দু'পক্ষ যৌথভাবে ধারাবাহিক উদযাপনী তত্পরতা আয়োজন করছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, চীন বর্তমানে দু'দেশের বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতার অবস্থার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশের পণ্যদ্রব্যের আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং "ব্যাংকক চুক্তি"-র কাঠামোতে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের আংশিক পণ্যকে সুবিধাজনক শুল্ক সুবিধা দেবে। চীন বাংলাদেশকে চীনা নাগরিকের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য তালিকাভূক্ত করেছে। দু'পক্ষ শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির প্রয়োগ, অর্থনীতি ও প্রযুক্তি , কৃষি, গণ নিরাপত্তা, জল সম্পদের উন্নয়ন, বেসামরিক বিমান চলাচল প্রভৃতি ৯টি সহযোগিতা দলিল স্বাক্ষর করেছে। মোটের দিকে প্রধানমন্ত্রী ওয়েনের সফর সাফল্যমন্ডিত হয়েছে।
|