প্রশ্নকর্তাঃবাংলাদেশের পাবনা জেলার টলটলীপাড়ার মোঃ রফিকুল ইসলাম বাবু প্রশ্ন করেছেন ।
উত্তরঃচীনে পশুপাখির প্রজাতি বেশী, তবে জাতীয় প্রাণী নির্ধারিত হয় নি । কয়েকটি প্রাণীর পান্ডা, সোণালী বানর, লাল ঝুটি-বিশিষ্ট সারস এবং টাকিন উল্লেখযোগ্য ।
শ্যানসি প্রদেশের ছাংছিং প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলে পান্ডা আর টাকিন আছে । সেখানকার পান্ডার মোট সংখ্যা প্রায় শতাধিক বেশী , বর্তমানে তা চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পান্ডা সংরক্ষণ অঞ্চল । প্রত্যেকবছরের ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত, পান্ডা খাবারের সন্ধানে বের হয় ,তখন সহজভাবে তাদের দেখা যায় । বর্তমানে, বিশ্বে মোট চার রকমের সোনালী বানর আছে, ওরা হচ্ছে ভিয়েত্মামী সোনালী বানর, ছুয়ান সোনালী বানর, তিয়ান সোনালী বানর এবং ছিয়ান সোনালী বানর । ভিয়েত্মাম সোনালী বানর ছাড়া, অন্য তিন রকম সোনালী বানরের সবই চীনে আছে । ছুয়ান সোনালী বানর সিছুয়ান প্রদেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে, কানসু প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত । তাদের চেহারার রং নীল, চামড়ার রং সোনালী, এর অঙ্গপ্রতঙ্গের মোট দৈর্ঘ্য ১০ সেন্টিমিটার ।
তিয়ান সোনালী বানর ইউয়ুন্নান প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত । এর চামড়ার রং কালো, সেইজন্যে তাদের "কালো সোনালী বানর"ও বলা হয় । ছোটবেলায় তিয়ান সোনালী বানরের চামড়া সাদা রংয়ের, বয়স বাড়ার সংগে কালো রংয়ে পরিণত হয়েছে । সকল প্রজাতিরবানরদের মধ্যে তিয়ান সোনালী বানরের চেহারা মানুষের চেহারার মধ্যে খুব সাদৃশ্য আছে । তাদের ঠোঁটও লাল রংয়ের , তিয়ান সোনালী বানর দেখতে খুব মায়াবী আর সারাক্ষণ লাফালাফি করে । যখন অনেক মিষ্টি ফল দেখলে তারা খুশিতে "গা গা" আওয়াজ তুলে । ছোট বানর তার মাকে খুঁজার সময়ে, সন্তানের মতো কাঁদার আওয়াজ করে । বর্তমানে চীনের তিয়ান সোনালী বানরের মোট সংখ্যা ১৫০০টির চেয়ে কম বলা যায় বিলুতির সম্মুখীন ।
ছিয়ান সোনালী বানর কুইচৌ প্রদেশের পাহাড়াঞ্চলে অবস্থিত, এদের সংখ্যা খুবই দুর্লভ ,বর্তমানে বিশ্বের কোনো চিড়িয়াখানায় সেই রকমের বানর গমন করে নি এবং অধিকাংশ লোক কখনো তাদের দেখেন নি । এদের চামড়ায় কোনো সোনালী রং দেখা যায় না, প্রধানত ধূসর রং এবং মাঝখানে সাদা রংয়ের দাগ আছে । তাদের লেজ গরুর লেজের মতো, তাই তাদের "গরু লেজ বানর"ও বলা যায় । ছিয়ান সোনালী বানর হচ্ছে সোনালী বানরের মধ্যে সবচেয়ে মহামূল্যবান । জানা গেছে, বর্তমানে ছিয়ান সোনালী বানরের সংখ্যা শুধু কয়েক'শো রয়েছে ,এদের অস্তিত্ব বিলুপ্তির সম্মুখীন ।
টাকিন , গরু ধারণা, তাদের শরির খুব শক্ত, লম্বায় ২ মিটার, পুরুষ আর মহিলা টেকিন সবাই ছোট শৃজ্গ আছে ,শরিরের চামড়া হলুদ বা গভীর বাদামি, চোখের আশেপাশে কালো রং, লেজও ছোট, শরিরের আকার এবং আচরণও খুব বৈশিষ্টসম্পন্ন । টাকিন প্রধানত চীনের সিছুয়ান,ইউয়ুন্নান ,শ্যানসি, কানসু প্রদেশে অবস্থিত, তাছাড়া বুটানেও অবস্থিত । টেকিন বিশ্বের বিপন্নপশুগুলোর মধ্যে একটি ।
অন্য একটি দেশ হচ্ছে লাল ঝুটি-বিশিষ্ট সারস । ১৯৮১ সালের মে মাসে, চীনের ছিনলীং য়ে আবার সেই পাখি দেখা যায় । তাদের শরির চামড় সাদা রংয়ের , মাথার উপর লাল রং ,দেখতে খুব সুন্দর লাগে, তারাও বিশ্বের প্রথমপর্যায়ের বিপন্ন পশুপাখি ।
|