প্রশ্নকর্তাঃবাংলাদেশের বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার নিমাইদীঘি গ্রামের সারাক ইন্টারন্যাশনাল রেডিও লিসনার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্টএম আব্দুর রাজ্জাক,গোপালগঞ্জ জেলার বেতার বন্ধু শ্রোতা সংঘের সভাপতি মোঃ জুয়েল আহম্মেদ মল্লিক কুস্টিয়া জেলার ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমা আন্তর্জাতিক রেডিও ক্লাবের এম জহুরুল ইসলাম (জীবন) ,চুয়াডাঙ্গা জেলার আলামডাঙ্গার আরিফা সুলটানা, ভারতের পশ্চিম বাংলার মুরশিদাবাদ জেলার কেওয়াতালা গ্রামের মামুন মনডাল ।
উত্তরঃমহান নেতা মাও সে তোং, ১৮৯৩ সালের ২৬শে ডিসেম্বর, হুনান প্রদেশের সিয়াংথান জেলার শাওশান থানার একটি কৃষি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি হলেন চীনের প্রথম প্রেসিডেন্ট, কবি,লেখক, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা । ১৯১১ সালে,তিনি হুনান প্রদেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন । ১৯১৩ সাল থেকে১৯১৮ সাল পর্যন্ত, তিনি হুনান প্রথম শিক্ষক ইনস্টিটিউটে লেখাপড়া করেন । লেখাপড়াকালে তিনি "চীনের সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীর বিশ্লেষণ" এবং "হুনান কৃষি আন্দোলনের রিপোর্ট"প্রকাশ করেন, স্পষ্টভাবে সর্বহারা শ্রেনীর রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের চিন্তাধারা উত্থাপন করেন । ১৯৩৭ সালের জুলাই মাসে, জাপান বিরুদ্ধী যুদ্ধ সার্বিকভাবে শুরু হয়, যুদ্ধকালে তিনি অনেক বিখ্যাত চিন্তাধারা সমৃলিত বই লিখেন এবং জাপান-বিরোধী যুদ্ধ জয়ের জন্যে বিরাট অবদান রাখেন । ১৯৪৯ সালের পয়লা অক্টোবর,তিনি থিয়েন আনমেন মহাচত্বরে দাঁড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নয়া চীন প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন । মাও সে তোং নিজের জাতির স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব এবং বিশ্বের শান্তি সুরক্ষায় অবিচল থাকার কথা ঘোষণা করেন । ১৯৭৬ সালের ৯ই সেপটেম্বর,মাও সে তোং পেইচিংয়ে মারা গেছেন । তিনি নয়া চীনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বেরজন্যে, বিরাট অবদান রাখেন । চীনের জনগণ চিরকাল তাঁকে স্মরণ করবেন ।
চীনের আরেক জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হলেন চীনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই । ১৮৯৮ সালের ৫ই মার্চ, চৌ এন লাই চিয়াংসু প্রদেশের হুয়াই আন জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন ।তিনি হচ্ছেন সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবী,কূটনৈতিক,চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নেতা । ১৯১৭ সালে,তিনি থিয়েনচিন নানখাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেন ,তারপর জাপানে গিয়ে লেখাপড়া করেন । ১৯১৯ সালে, তিনি স্বদেশে ফিরে আসেন, থিয়েনচিনের ছাত্র নেতা হন ।১৯২১ সালে,তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদার করেন। তারপর চীনের কমিউনিস্ট যুব লীগের সম্পাদক হন ।
১৯৪৯ সালে, চীন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর, তিনি প্রধানমন্ত্রী হন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন । তাছাড়া, তিনি চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান, চীনের কেন্দ্রীয় কমিটির সামরিক কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন । নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর, রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির উন্নয়নের জন্যে তিনি গভীরভাবে মনোনিবেশ করেন এবং বিরাট সাফল্য অর্জন করেন।
চীনের পররাষ্ট্র নীতির প্রণয়ন ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে,তিনি ও অংশগ্রহণ করেন । ১৯৫৪ সালে, তিনি জেনিভা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন । সেই সম্মেলনে, ভিয়েত্নাম,লাওস ,কম্বোডিয়ার স্বাধীনতা বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে । তিনি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতি উত্থাপন করেন,যা বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহাবস্থানের নীতিতে পরিণত হয় । ১৯৫৫ সালে ২৯টি এশিয়- আফ্রিকান দেশের অংশগ্রহণে ইন্দোনেশিয়ার বান্দোংয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে,তিনি অমিল পাশে রেখে মিল অন্বেষণ ও আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমত অর্জনের মত প্রকাশ করেন । তিনি ইউরোপ,এশিয়া ,আফ্রিকার কয়েক ডজন দেশ সফর করেন এবং বিশ্বের নানা দেশের নেতারা ও বন্ধুপূর্ণ ব্যক্তিরা সাক্ষাত্ করেন । এর জন্যে চীনা জনগণ ও বিশ্বের জনগণের মৈত্রী গভীর হয় । ১৯৭৬ সালের ৮ই জানুয়ারী,তিনি পেইচিংয়ে মারা গেছেন ।
|