v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-02-18 13:06:34    
চীনের শ্রেষ্ঠ কবি কে এবং শ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম কি ?

cri
    প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের নড়াইল জেলার দিঘলিয়ার মার্কোনী রেডিও ডি-এক্স ক্লাবের সভাপতি কে এম নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলার লাকশামের দোসরী চৌ গ্রামের মোঃ আব্দুস সাত্তার, মোঃ আল-মামুন, মোঃ আঃ হাকিম, মোঃ শহীদুল ইসলাম , ময়মনসিংহ জেলার মল্লিক বাড়ীর আচিক শর্টওয়েভ লিসনার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক থিয়ফিল এস রিছিল প্রমুখ ।

    উত্তরঃ চীনের কাব্য-সাহিত্যের ইতিহাস সুদীর্ঘ, সুপ্রাচীনকালথেকে এই পর্যন্ত প্রতিটি যুগে অনেক খ্যাতনামা কবির জন্ম হয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত কে চীনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কবি বা শ্রেষ্ঠ কবিতা নিয়ে নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় নি।

 (আই   ছিং)     সিজিং চীনের প্রাচীনতম কাব্য-গ্রন্থ। এই কাব্য-গ্রন্থের অধিকাংশ কবিতা চীনের বিভিন্ন স্থানে সংগৃহিত বেসরকারী গাঁথা। খ্রীষ্টপুর্ব৪০০ বছরের যুদ্ধমান যুগে  দক্ষিণ চীনের চু রাজ্যে চুসি নামে একটি নতুন কাব্যাকৃতি আবির্ভুত হয়। এই কাব্যাকৃতি অবলম্বন করে যিনি প্রথম কবিতা লিখতেন তিনি ছিলেন, চীনের প্রাচীনকালের মহান কবি ছু ইউয়ান। লিসাও নামক কবিতা তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা। সিজিংয়ের প্রতিটি শ্লোক চারটি চীনা শব্দ নিয়ে গঠিত। কিন্তু চুসির প্রতিটি শ্লোকে ছিলো পাঁচ বা ছয়টি চীনা শব্দ।

                                                                                                                                                          

 (দুফু)              চীনের কাব্য-সাহিত্যের ইতিহাসে থাং রাজবংশীয় আমল একটি গুরুত্বপুর্ণ যুগ। লি পাই ও দুফু এই যুগের দুজন সবচেয়ে খ্যাতনামা কবি। "সি ছুয়ানের বিপদসংকুল গিরিপথ " ও "জ্যোত্স্না রাতে মদপান "লিপাইয়ের দুটো জনপ্রিয় কবিতা। "জ্যোত্স্না রাত ও রথ" দুফুর দুটো জনপ্রিয় কবিতা। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, লি পাই ও দুফুর কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব ভারতীয় চীনা ভবন এবং ভারতের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদেরকে লি পাই ও দুফুর কবিতা পড়তে হয়।

 

    চীনের সুং রাজবংশীয় আমলে সুসি, সিংছিচি ও লুইউ ছিলেন তিন জন প্রসিদ্ধ কবি। সুংসি নামে সেই সময়ের একটি কবিতা আছে দুই স্তবক। সুর দিয়ে তা গাওয়া যায়। চীনের ইউয়ান রাজবংশীয় আমলের এক ধরণের কবিতা চীনা ভাষায় বলা হয়-- ইউয়ান ছু। সুং রাজবংশীয় আমলের কবিতার চেয়ে ইউয়ান ছুর ভাষা আরো সরল ও প্রাঞ্জল এবং আরো সহজে সুর দিয়ে গাওয়া যায়।

   

    (লি  পাই)                                                                                                                          

  

(কুও মো রুও)          বিংশ শতাব্দিতে চীনের প্রসিদ্ধ কবিদের মধ্যে গুও মো রুও ছিলেন চীনের বিজ্ঞান একাডেমীর প্রয়াত মহাপরিচালক। তরুন বয়সে তিনি অনেক নতুন কবিতা লিখেছিলেন। যেমন ফিনিক্সের নির্বান নামে তাঁর একটি কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে নতুন যুগের প্রগতিশীল চিন্তধারা। তবে বার্ধক্যে তিনি প্রধানত সমিল কবিতা লিখতেন। কবি আই ছিংয়ের অধিকাংশ কবিতা অমিত্রাক্ষর ছন্দের। তার লেখা "ঠেলাগাড়ি" আর "উত্তর চীন" এ যুদ্ধের সময়ে উত্তর চীনের কৃষকদের দুঃখদুর্দশা অভিব্যক্ত হয়েছে। ইয়ান আন মুক্ত অঞ্চলে তাঁর লেখা কবিতা ভোলের বাণীর প্রভাব ছিলো অত্যন্ত ব্যাপক। এই কবিতায় নতুন যুগের নতুন জীবন যাপনের স্বপ্ন প্রকাশিত হয়েছে। কবি জাং কে চিয়া সারা জীবন সমিল কবিতা লিখে এসেছেন। শরনার্থী নামে তাঁর একটি কবিতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধের দরুন বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এক দল শরনার্থী যে চিত্রিত হয়েছে, তাতে গরীব কৃষকদের প্রতি কবির সমবেদনা ব্যক্ত করা হয়েছে এবং তাদের দুর্গতি সৃষ্টিকারী শাসক শ্রেণীর নিন্দা করা হয়েছে। ১৯২৮ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চীন সফর করেছিলেন, তাঁর অনুবাদক সুই চি মোও এক জন বিখ্যাত কবি। ক্যামব্রিজকে বিদায় নামে তাঁর একটি কবিতায় ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাঁর আবেগপুর্ণ মমতা এবং তাঁর রঙ্গিন স্বপ্ন চূর্ণবিচুর্ণ হওয়ার পর তাঁর মনের হতাশা মুর্ত হয়ে উঠেছে।

 (মাও সে তুং)   চীনা জনগণের মহান নেতা মাও সে তুং শুধু রাজনীতিবিদ আর রণবিশারদ ছিলেন না, একজন বিখ্যাত কবিও ছিলেন। তিনি বিপ্লবী বাস্তবতা আর বিপ্লবী রোমান্টিক শিল্পশৈলীর সমন্বয়ে লং মার্চ নামে একটি কবিতা লিখেছেন, চীনের লাল ফৌজ শত্রুর বেষ্টনী ভেদ করে পঁচিশ হাজার লি পথ হেঁটে যে সাফল্যের সঙ্গে উত্তর চীনের সানসি প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে পৌঁছেছিলেন, এই কবিতায় তা বর্ণনা করা হয়েছে এবং দুর্জয় লাল ফৌজের মহা বীরত্বের স্তুতি গাওয়া হয়েছে। লিসুইয়ের কবিতার জবাবে, গণ মুক্তি ফৌজ নানজিং শহর মুক্ত করেছে এবং তাঁর তুষার প্রভৃতি কবিতাগুলোতে সুরারোপিত হয়েছে এবং এ গুলো গান হিসেবেও চীনে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে।