চীন ও “ মণ্ট্রিল প্রটোকল”

       অতীতের ১০ বছরে চীন সক্রীয়ভাবে ওজোন-স্তর সংরক্ষণের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তত্পরতায় অংশ নিয়েছে । ১৯৮৬ ও ১৯৮৭ সালে চীন ওজোন-স্তর সংরক্ষণের কর্ম-গ্রুপের সম্মেলনে ও “প্রটোকল “স্বাক্ষরের সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আলাদা আলাদাভাবে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। ১৯৮৯ সালে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে “চুক্তিতে” অংশ নিয়েছে এবং চুক্তি-স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর প্রথম সম্মেলনে সর্বপ্রথমে “ ওজোন-স্তর সংরক্ষণের বহুপাক্ষিক তহবিল প্রতিষ্ঠার” প্রস্তাব দিয়েছে । ১৯৯০ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংগে একত্রে সক্রীয়ভাবে “প্রটোকল” সংশোধনের কাজে অংশ নিয়েছে। ১৯৯১ সালে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রটোকলটির লণ্ডন সংশোধনী প্রস্তাবে যোগ দিয়েছে এবং যথাসময়ে চীনের ওজোন-স্তর সংরক্ষণের নেতৃস্থানীয় গ্রুপের অফিস গঠন করেছে। এই অফিসের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ১৫টি মন্ত্রণালয়, কমিটি, ব্যুরো, জেনারেল কোম্পানি ইত্যাদি। এই অফিসের দায়িত্ব “প্রটোকল”বাস্তবায়নের সাগঠনিক কাজ চালানো। ১৯৯২ সালে চীন সবার আগেই “ চীনের ওজোন-স্তর ক্ষতিগ্রস্তকারী পদার্থ ব্যবহার ক্রমাগত বাতিল করার রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা” প্রণয়ন করেছে। এই পরিকল্পনা ১৯৯৩ সালে প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রীয় পরিষদের বহুপাক্ষিক তহবিলের কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন পেয়েছে । ১৯৯৪ সালে চীন আবার “তামাক শিল্পের ওজোন-স্তর ক্ষতিগ্রস্তকারী পদার্থ ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাতিল করার অনুপূরক পরিকল্পনা” প্রণয়ন করেছে । ১৯৯৫ সালে সবার আগেই পরিকল্পনা প্রণয়ন করে চীন আটটি বিশেষ শিল্পের ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার ধাপে ধাপে বাতিল করার বিষয় নিয়ে রণনৈতিক গবেষণা চালিয়েছে এবং বহুপাক্ষিক তহবিলের কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন পেয়েছে । এই আটটি বিশেষ শিল্প হলো : এয়ারোসোল, ফোয়াম প্লাস্টিক্স, ফ্রিজ(রেফ্রিজেরেটর), শিল্প-বাণিজ্যিক এয়ার-কণ্ডিশন, মটরগাড়ির এয়ার-কণ্ডিশন,অগ্নি-নিবারক “হালুন” পদার্থ, ইলেক্ট্রোনিক্স যন্ত্রাংশ পরিষ্করণ এবং নিয়ন্ত্রিত (ক্ষতিকর) পদার্থ উত্পাদন । 

এ পর্যন্ত বিশ্ব ব্যাংক, ইউ এন ডি পি, জাতিসংঘের শিল্প ও উন্নয়ন সংস্থা, জাতিসংঘের পরিবেশ পরিকল্পনা সংস্থা--এই চারটি নির্বাহী সংস্থার মাধ্যমে এবং যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, জার্মানি ও ডেনমার্ক প্রভৃতি দেশের মাধ্যমে চীন ইতিমধ্যেই বহুপাক্ষিক তহবিলের নির্বাহী কমিটির কাছে ১৫৬টি প্রকল্পের আবেদন পেশ করেছে এবং অনুমোদন পেয়েছে । এতে মোট ১ কোটি ৫০লক্ষ মার্কিন ডলার বহুপাক্ষিক তহবিল পেয়েছে। যদি এই সব প্রকল্প পুরোপুরি সম্পন্ন করা যায়, তাহলে নিয়ন্ত্রিত (ক্ষতিকর) পদার্থ ৩১.৮ হাজার টন কমানো যাবে।