বৃহত্তম উন্নয়নমুখী দেশ ও বৃহত্
প্রাকৃতিক পরিবেশ-রাষ্ট্র হিসেবে
চীন আন্তর্জাতিক পরিবেশের ক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চীন সক্রীয় মনোভাব নিয়ে বিশ্বের
পরিবেশ-বিষয়ক কূটনৈতিক তত্পরতায়
অংশ নিয়ে সমুচিত অবদান রেখেছে
এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ
ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গঠনমূলক
ভূমিকা পালন করছে ।
১৯৭২ সালে চীন সরকারের পাঠানো
প্রতিনিধিদল স্টকহোমে অনুষ্ঠিত
প্রথম মানবজাতির পরিবেশ সম্মেলনে
অংশ নেয় । ১৯৯২ সালে চীনের
প্রধানমন্ত্রী লি ফেংয়ের নেতৃত্বে
চীন-সরকারের প্রতিনিধিদল রিও-দে
জেনেইরো শহরে অনুষ্ঠিত পরিবেশ
ও উন্নয়ন শীর্ষসম্মেলনে অংশগ্রহণ
করেছে এবং সবার আগে “আবহাওয়া
পরিবর্তনের কাঠামো চুক্তি”
এবং “ প্রাণী ও উদ্ভিদের বৈচিত্র্য
চুক্তি” স্বাক্ষর করেছে । তা
আন্তর্জাতিক সমাজের উচ্চ পর্যায়ের
মূল্যায়ন পেয়েছে। ২০০২ সালের
আগষ্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী চু
রোংচি চীন- সরকারের প্রতিনিধিদল
নিয়ে জোহেনেসবার্গে অনুষ্ঠিত
টেকসই উন্নয়ন শীর্ষ সম্মেলনে
যোগ দিয়েছেন এবং ঘোষণা করেছেন,
চীন সরকার ইতিমধ্যেই “কিওটো
প্রটোকল” যাচাই করে অনুমোদন
করেছে । এটিও আন্তর্জাতিক সমাজের
ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে ।
আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে
ও আন্তর্জাতিক চুক্তির আলোচনায়
চীন বরাবরই সারা বিশ্বের পরিবেশ
সংরক্ষণে উন্নয়নমুখী ও উন্নত
দেশগুলোর অভিন্ন অথচ পৃথক দায়িত্ব
আছে বলে মনে করে এবং এই নীতিতে
অবিচল । চীন দৃঢ়ভাবে উন্নয়নমুখী
দেশগুলোর পাশে দাঁড়ায়, পরিবেশ
সংরক্ষণ ক্ষেত্রে আধিপত্যবাদের
বিরোধিতা করে, এবং পরিবেশ সমস্যার
অজুহাতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ
ব্যাপারে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা
করে । ইতিহাস ও বাস্তবতার দিক
থেকে দেখতে গেলে , বর্তমান
বিশ্বের পরিবেশ সমস্যার জন্য
দায়ী প্রধানত শিল্পোন্নত দেশগুলোই
। পক্ষান্তরে উন্নয়নমুখী দেশগুলো
পরিবেশ সমস্যার শিকার হয় ।
তাই উন্নত দেশগুলোর দায়িত্ব
হলো সবার আগে কার্যকলাপ অবলম্বন
করা এবং বিশ্ব পরিবেশ সংরক্ষণের
প্রয়াসে অংশ নিতে উন্নয়নমুখী
দেশগুলোকে সাহায্য করা।
তা’ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের
বেসরকারী পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা,
যেমন, বিশ্বের প্রকৃতি তহবিল
সংস্থা, আন্তর্জাতিক প্রাণী
প্রযত্ন তহবিল সংস্থা ইত্যাদি
চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বেসরকারী
সংস্থাগুলোর সঙ্গে বহুক্ষেত্রের
সহযোগিতা চালিয়ে ইতিবাচক সাফল্য
অর্জন করেছে।
চীন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সবার
আগে “চীনের পরিবেশ ও উন্নয়ন
সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
কমিটি” ধাঁচের সহযোহিতা সৃষ্টি
করেছে । এই কমিটি হলো সরকারের
উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শমূলক
সংস্থা যা ৪০ জনেরও বেশী বিশ্বের
বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞ
নিয়ে গঠিত । প্রতিষ্ঠার পর
দশাধিক বছর ধরে কমিটিটি পর্যায়ক্রমে
চীন সরকারের কাছে বহু গঠনমূলক
প্রস্তাব পেশ করেছে এবং আন্তর্জাতিক
সমাজ এই কমিটিকে আন্তর্জাতিক
পরিবেশ সহযোগিতার আদর্শ বলে
প্রশংসা করেছে।
|