১৩৬৮ সাল থেকে ১৬৪৪ সাল পর্যন্ত স্থায়ী মিন রাজবংশের আমল থেকেই চীন সামন্ততান্ত্রিক সমাজের শেষ পর্যায়ে প্রবেশ করে। এই সময়পর্বের অধিকাংশ স্থাপত্যকর্মের স্থাপত্যরীতি সুং রাজবংমের মতো কোনো লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা যায় নি। কিন্তু অধিকাংশ স্থাপত্যকর্ম বিরাট ও মহত্ হয়েছে।
এই সময়পর্বের পরিকল্পিত শহর ও নির্মিত প্রাসাদগুলো তার পরের যুগের লোকেরাও উত্তরাধিকার সূত্রে ব্যবহার করেছেন। রাজধানী পেইচিং ও চীনে এ পর্যন্ত সংরক্ষিত বৃহত্তম প্রাচীন শহর নানচিং মূলতঃ মিন রাজবংশেরই পরিকল্পিত। ছিন রাজবংশের রাজপ্রাসাদও মিন রাজবংশের প্রাসাদের ভিত্তিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। এই সময়পর্বের রাজধানী পেইচিংও আগেকার ভিত্তিতে পুনর্নির্মিত। পুনর্নির্মিত হওয়ার পর রাজধানী বহিঃর্ভাগ , অভ্যন্তরভাগ ও রাজমহল এই তিনভাগে বিভক্ত।
মিন রাজবংশের আমলে অব্যাহত ও ব্যাপকভাবে মহত্ প্রতিরক্ষা স্থাপত্যকর্ম মহাপ্রাচীর পুনর্নির্মান করা হয়। মহাপ্রাচীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশের দেওয়াল ও দুর্গ সবই ইটের তৈরি। স্থাপত্যকর্মের মান শীর্ষে পৌঁছেছে। মিন রাজবংশের আমলে পুনর্নির্মিত মহাপ্রাচীর পূর্বে ইয়া লু নদীর ধার থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমে কাংসু প্রদেশের চিয়া ইউ কুয়ান গিরিসংকট পর্যন্ত প্রসারিত। মোট দৈর্ঘ্য ৫৬৬০ কিলোমিটার। সান হাই কুয়ান, চিয়া ইউ কুয়ান ইত্যাদি বিখ্যাত বিখ্যাত গিরিসংকট শহর হলো চীনের স্থাপত্যশিল্পে স্বতন্ত্র স্থাপত্যরীতির স্থাপত্যকর্ম। পেইচিংয়ের মহাপ্রাচীরের পাতালিন, সিমাথাই ইত্যাদি অংশের বেশ উচ্চ শৈল্পিক মূল্য রয়েছে।
ছবিঃ মহাপ্রাচীর
এই সময়পর্বে রাজকীয় স্থাপত্যকর্মের শোভাবর্ধন ও রঙিণ ছবি আঁকাও দিন দিন নিয়মমাফিক হয়। ইউ ও পাথর, টালি, শক্ত কাঠ ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে অনেক স্থাপত্যকর্ম নির্মিত হয়েছে। গণবসতি নির্মানে ইউ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
মিন রাজবংমের আমলে চীনের স্থাপত্যকর্মপুঞ্জের বিন্যাস আরো পরিপক্ক হয়েছে।
নানচিংয়ে অবস্থিত মিন রাজবংমের সিয়াও সম্রাটের সমাধিস্থল ও পেইচিংয়ে অবস্থিত মিন রাজবংশের তেরোজন সম্রাটের সমাধিস্থল হলো ভৌগলিক অবস্থা ও পরিবেশের পূরণ সদ্ব্যবহার করে সমাধির গুরুগম্ভীর পরিবেশ গড়ে তোলার উল্লেখযোগ্য বাস্তব উদাহরণ।
উল্লেখ্য যে, মিন রাজবংশের আমলে জিওম্যাট্রিক ওম্যান সংস্কার শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। চীনের স্থাপত্যের ইতিহাসের এই বিশেষ প্রাচীন যুগের সাংস্কৃতিক প্রবণতার প্রভাব আধুনিককাল পর্যন্ত বিস্তৃত। তাছাড়া মিন রাজবংশ আমলেও ধরণের আসবাবপত্রও বিশ্ববিখ্যাত।
|