চীনের সংখ্যালঘুজাতির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি


       সংখ্যালঘুজাতি এলাকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য চীন সরকার অনেকগুলো বিশেষ নীতি গ্রহণ করেছে। এইসব নীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সংখ্যালঘুজাতির বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ প্রশিক্ষণ দেওয়া উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুপরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুজাতির ছাত্র ভর্তি করা বা সংখ্যালঘুজাতির বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স স্থাপন করা। সংখ্যালঘুজাতির উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় বিশেষ শিক্ষা বিষয় চালু আর তাদের পেশাদার প্রযুক্তিবিদ প্রশিক্ষণ দেওয়া। এর সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর ব্যবস্থা আর পদ্ধতি গ্রহণ করে বর্তমান সংখ্যালঘুজাতির বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণ উন্নত করতে সাহায্য করা হবে, যোগ্য কর্মী ও উন্নত মানের প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা, ঐতিহ্যিক শিল্প ও উত্পাদিত দ্রব্য উন্নত করা আর অর্থনীতির ফলপ্রসূতা বাড়ানোর জন্য সংখ্যালঘুজাতি ও সংখ্যালঘুজাতি এলাকাকে সাহায্য করা হবে। গ্রামাঞ্চল ও পশু পালন এলাকার বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার গঠন ও পুর্ণাঙ্গ করে দেওয়া হবে, প্রায়োগিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জনপ্রিয়, প্রশিক্ষণ ও সম্প্রসারণ করার কাজ জোরদার করা হবে। কাজ আর জীবনযাপনের দিক থেকে সুবিধাজনক নীতি প্রনয়ন করে সংখ্যালঘুজাতি এলাকায় চাকরি করার জন্য বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের উত্সাহ দেওয়া হবে। সংখ্যালঘুজাতি এলাকার বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় উন্নত এলাকার সমর্থন জোরদার করা হবে। যেমন উন্নত এলাকার বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রন করা, শেখানো ও স্বল্পকালীন চাকরি করা, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা উন্নয়ন করা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। বর্তমানে বিভিন্ন সংখ্যালঘুজাতি এলাকায় জাতীয় অর্থনীতি, জনগণের জীবনযাপন আর সংখ্যালঘুজাতির বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বৈজ্ঞানিক গবেষণা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে ও পেশাদার প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

       পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে চীনের সংখ্যালঘুজাতি এলাকাগুলোতে বিজ্ঞানী আর প্রকৌশলীদের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ । সংখ্যালঘুজাতির বিজ্ঞানী আর প্রযুক্তিবিদরা দেশের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিনত হচ্ছেন। তাদের মধ্যে আছেন বিজ্ঞান একাডেমী ও ইঞ্জিনিয়াং একাডেমিশিয়ান, বিজ্ঞানের নানা বিষয়ের বিশেষজ্ঞ আর প্রায়োগিক প্রযুক্তি সম্প্রসারনের জন্য অবদান রাখা প্রতিভাবান ব্যক্তি। যেমন চীনের বিজ্ঞান একাডেমীর হুই জাতির একাডেমিশিয়ান ওয়াং সি উয়েন দীর্ঘকাল ধরে বয়স্কদের হৃদ রোগ আর বয়স্কদের জরুরী চিকিত্সা, এবং শিক্ষাদান কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি চীনের বয়স্কদের চিকিত্সা বিজ্ঞানের জন্য বিশেষ অবদান রেখেছেন। চীনের ইঞ্জিনিয়ারিং একাডেমীর জুয়াং জাতির একাডেমিশিয়ান উয়ে ইয়্যু জার্মানীর একিয়া শিল্প বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ডক্টরেট ডিগ্রী পেয়ে বিশ্বের ইলেকট্রনিক জীববিদ্যা আর বাইও কম্পিউটার ক্ষেত্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতায় পরিনত হয়েছেন। কোরিয় জাতির কৃষি বিজ্ঞান অধ্যাপক চেন হুই ইয়্যু দীর্ঘকাল ধরে সয়াবিনের বীজ উত্পাদন আর সংখ্যাপ্রকার সম্পদ গবেষণার কাজে রত আছেন। তিনি ‘চিলিন ২০ নং’ নামে সয়াবিনের উন্নত মানের বীজ উত্পাদন করেছেন।