চীনের সংখ্যালঘুজাতির অর্থনীতি


       চীনের অর্থনীতি সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের অর্থনীতিও নিরন্তর বিকশিত আর শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

      পশুপালন শিল্প চীনের সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের অন্যতম প্রধান শিল্প। বিংশ শতাব্দির আশির দশকের পর চীনে ঘাস আর পশুপালনের দায়িত্ব-বন্টন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে। গবাদি পশু পালক পরিবারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে, তৃণ ক্ষেত্রের ব্যবহারের অধিকার পশু পালক পরিবারকে দেওয়া হয়েছে আর তৃণ ভূমির নির্মানকাজ ও রক্ষণাবেক্ষন ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে। বর্তমানে চীনের প্রধান পশুপালন অঞ্চলঃ ছিনহাই, কানসু, সিছুয়াং, সিনচিয়িং, নিনসিয়া, অন্তঃমঙ্গোলিয়া প্রভৃতি প্রদেশ ও স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলগুলোতে পশুপালন শিল্প দ্রুত প্রসারিত হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে চীনের পশু পালন আর আধা-কৃষি আধা -পশুপালন অঞ্চলগুলোতে গবাদি পশুর সংখ্যা ১০ কোটি । গবাদি পশুর বেঁচে থাকার হার আর পন্য দ্রব্য হিসেবে তার ব্যবহারের হারও লক্ষনীয়ভাবে বেড়ে গেছে। অন্য দিকে কতকগুলো পশু পালন অঞ্চলে গৃহ ব্যবস্থাপনাভিত্তিক পারিবারিক গবাদি পশু খামারও দেখা দিয়েছে। বিপুলমাত্রায় ব্যবস্থাপনা আর উত্পাদন চালাবার দরুণ পারিবারিক পশু খামারের উত্পাদন ক্ষমতা আর ফলপ্রসূতা অনেক উন্নত হয়েছে।

       সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের শহরগুলোতে বিপুল সংখ্যক অর্থনৈতিক সম্পদ আর অ-কৃষি আর্থ-সামাজিক তত্পরতা কেন্দ্রীভূত রয়েছে। এটাই সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের অর্থনীতির উন্নয়নের চাবিকাঠি। চীনের অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে অর্থনীতির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিংশ শতাব্দীর আশির দশকের পর সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের শহরগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদক্ষেপও দ্রুততর হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী , বর্তমানে চীনের সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলগুলোতে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০ লক্ষে দাঁড়িয়েছে। ফলে বিরাটাকারের আধুনিকায়নের শিল্প প্রতিষ্ঠান, বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্য, পরিসেবা প্রভৃতি বহু রকমারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঠামো গড়ে উঠেছে। অন্তঃ মঙ্গোলিয়া, ছিনহাই, নিনসিয়া, সিনচিয়াং প্রভৃতি অঞ্চলের নগরায়নের মান চীনের নগরায়নের গড়পড়তা মানের চেয়ে উঁচু। এটা সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের অর্থনীতির উন্নয়নের বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।

       বেসরকারী মালিকানার অর্থনীতি সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের শহরগুলোতে অর্থনীতির উন্নয়নের একটি আকর্ষণীয় বিষয়ে পরিনত হয়েছে। যেমন গত শতাব্দির শেষ নাগাদ ছিনহাই প্রদেশের জি ডি পিতে চীনের অ-রাষ্ট্রায়ত্ত অর্থনীতির অনুপাত শতকরা ৪০ ভাগেরও বেশী হয়েছে।

       তা ছাড়া উন্মক্ততা বাড়াবার প্রক্রিয়ায় সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলের কতকগুলো শহরে ধাপে ধাপে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত আদানপ্রদান ও সহযোগিতা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং উমুক্ততা গভীরে বিকশিত হয়েছে। বর্তমানে সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলে দেশ-বিদেশে বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ বিরাটাকারের শিল্প গোষ্ঠী হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন অন্তঃ মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলের এরদোস ক্যাশ্মিয়ারজাত দ্রব্য কোম্পানি, সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলের থিয়েন ইয়ে শিল্প গোষ্ঠী ইত্যাদি।