৫০ লক্ষেরও বেশি লোকসংখ্যা বিশিষ্ট জাতিগুলো


       হান জাতি  

       চীনে ৫৬টি জাতির মধ্যে হান জাতি এমন একটি জাতি, যার লোকসংখ্যা সবচাইতে বেশি। পৃথিবীতেও হান জাতি সর্বাধিক লোকসংখ্যার জাতি। বর্তমানে হান জাতির লোকসংখ্যা ১২০ কোটির কাছাকাছি। হান জাতির পূর্বপুরুষ ছিলো হুয়াসিয়া নামে পরিচিত মধ্যে চীনের অধিবাসীরা। হান জাতির সভ্যতার ইতিহাস ৫ হাজার বছরের পুরানো। তারপর সংস্কৃতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে হান জাতি অন্যান্য জাতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। হান রাজবংশ থেকে এই জাতিকে হান জাতি ডাকে। তার নিজের ভাষা ও লিপি আছে। হান ভাষা হান-তিব্বত ভাষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত। তাকে উত্তর চীনের ভাষা , পূর্ব চীনের শাংহাই মহানগরী, চিয়াংসু প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশ ও চেচিয়াং প্রদেশের বেশীর ভাগ অংশের আঞ্চলিক ভাষা, হুনান প্রদেশের আঞ্চলিক ভাষা, চিয়াংসি প্রদেশের আঞ্চলিক ভাষা, হাক্কা ভাষা, ফুচিয়েন প্রদেশের দক্ষিণাংশের আঞ্চলিক ভাষা, ফুচিয়েন প্রদেশের উত্তরাংশের আঞ্চলিক ভাষা আর দক্ষিণ চীনের কুয়াংতুং প্রদেশের আঞ্চলিক ভাষা এই আটটি বৃহত্ আঞ্চলিক ভাষায় বিভক্ত। হান ভাষার অভিন্ন মৌলিক ভাষা ফুথুংহুয়া নামের উন্নত ভাষা। হান ভাষার লিপি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন লিপি। এই ভাষার শব্দের সংখ্যা ৮০ হাজারেরও বেশি। এরমধ্যে প্রায় ৭ হাজার শব্দ খুব ব্যবহার হয়। বর্তমানে হান ভাষা বিশ্বের অন্যতম প্রচলিত ভাষা। খাদ্য শস্য হান জাতির প্রধান খাবার। বিবিধ প্রাণীভিত্তিক খাবার আর শাক-সব্জি পার্শ্বজাত খাবার। দীর্ঘকাল ধরে হান জাতির দিনে তিনবার খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। চাল আর ময়দাজাত খাবার হান জাতির প্রধান খাবার। তা ছাড়া ভুট্রা, সোরগাম, খাদ্য শস্য, আলু ইত্যাদিও ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের প্রধান খাবার বলা যায়। বিভিন্ন অঞ্চলের প্রচলিত রেওয়াজের ফলে হান জাতির খাওয়া দাওয়া রীতি নীতিতে নানা রকমের ব্যঞ্জণ রয়েছে। লোকেরা: হান জাতি ও অন্যান্য জাতির খাওয়ারের স্বাদের বৈশিষ্ট্য দক্ষিণ চীনে মিষ্টি, উত্তর চীনে লবণাক্ত, পূর্বে ঝাল আর পশ্চিমে তিক্ত বলে বর্ননা করেন। বর্তমানে বিভিন্ন অঞ্চলের খাওয়া দাওয়ার ভিন্ন রেওয়াজের কারণে চীনে হুনান প্রদেশের ব্যঞ্জণ, সিছুয়ান প্রদেশের ব্যঞ্জণ, উত্তর পূর্ব চীনের ব্যঞ্জণ, কুয়ানতুং প্রদেশের ব্যঞ্জণ প্রভৃতি আটটি বৃহত্ ব্যঞ্জণ ব্যবস্থায় দাঁড়িয়েছে। মদ ও চা চীনের দুটো প্রধান পানীয় খাবার। চীন চায়ের জন্মস্থল আর পৃথিবীতে অন্যতম দেশ, এ দেশে সধপ্রথম মদ তৈরির প্রযুক্তি আবিস্কৃত হয়েছে। চীনে মদ ও চা সংস্কৃতির ইতিহাস সুপ্রাচীনকালের। তা ছাড়া ফলমূল ও ফলজাত দ্রব্যও ভিন্ন অঞ্চল ও ভিন্ন ঋতুতে লোকদের খাবার। হান জাতির বৈচিত্র্যময় উত্সব আছে। এরমধ্যে চন্দ্রবর্ষের বসন্ত উত্সব সবচেয়ে ঐতিহ্যময় উত্সব। তাছাড়া আরও কয়েকটি প্রধান উত্সব আছে, যেমন চন্দ্রবর্ষের প্রথম মাসের ১৫ তারিখে ল্যান্ঠন উত্সব, ইংরেজী বর্ষের চতুর্থ মাসের ৫ তারিখে ছিংমিন পার্বন, চন্দ্রবর্ষের পঞ্চম মাসের ৫ তারিখে ড্রাগন নৌকা উত্সব আর চন্দ্রবর্ষের অষ্টম মাসের ১৫ তারিখে মধ্য শরত্কাল উত্সব ইত্যাদি।  

জুয়ান জাতি  

       চীনের সংখ্যালঘুজাতিগুলোর মধ্যে জুয়ান জাতি এমন একটি জাতি, যার লোকসংখ্যা সবচাইতে বেশি। তারা প্রধানত: চীনের দক্ষিণাংশের কুয়াংশি জুয়ান জাতি স্বায়ত্ত্ব শাসিত অঞ্চলে থাকেন। তাদের ব্যবহৃত ভাষা ‘জুয়ান ভাষা’ হান-তিব্বত ভাষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত। জুয়ান জাতি দক্ষিণ চীনের একটি স্থানীয় জাতি, তার সুদীর্ঘকালের ইতিহাস আছে। কয়েক হাজার বছর আগেই জুয়ান জাতির পূর্বপুরুষরা দক্ষিণ চীনে বাসকরতে শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে কুয়াংশি জুয়ান জাতি স্বায়ত্ত্ব শাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়। জুয়ান জাতি প্রধানত: কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে। ধান আর ভুট্রা তাদের উত্পাদিত প্রধান খাদ্যশস্য। জুয়ান জাতি গান গাইতে পছন্দ করে। জুয়ান জাতির থানা ‘গানের সাগর’ বলে আখ্যায়িত হয়। জুয়ান জাতির মনোরম রেশমী কাপড় জুয়ান জাতির ঐতিহ্যিক হস্তশিল্প দ্রব্য। জুয়ান জাতির লোকেরা প্রকৃতি আর দেবতায় আনুগত্য করার আদিম ধর্ম বিশ্বাস করে। থং আর সুং রাজবংশের পর বৌদ্ধ ধর্ম এবং তাও ধর্ম পর পর জুয়ান জাতির অঞ্চলে প্রচলিত হয়। আধুনিককালে খ্রীষ্টিয়ান ধর্ম আর ক্যাথলিক ধর্মও জুয়ান জাতি আঞ্চলে প্রচলিত হয়েছে, তবে তার প্রভাব তেমন নয়।

 


মান জাতি 

       মান জাতির অধিবাসীরা চীন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করেন । এর মধ্যে উত্তর-পূর্ব চীনের লিয়াও নিন প্রদেশে মান জাতির লোক সবচেয়ে বেশী । মান জাতি মান ভাষা ব্যবহার করে । এই ভাষা আলতায় ভাষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত । হান জাতির সংগে এক সাথে বাস করা আর ঘনিষ্ঠ আদান প্রদান করার দরুণ বর্তমানে মান জাতির লোকেরা সাধারণত হান ভাষায় কথা বলেন । শুধু দূরের কিছু গ্রামে স্বল্পসংখ্যক বয়স্ক মানুষ মান ভাষায় কথা বলেন । মান জাতির লোকেরা সামান ধর্মে বিশ্বাস করতেন । এই জাতির ইতিহাস ২ হাজার বছরেরও বেশী প্রাচীন । তারা উত্তর-পূর্ব চীনের ছাং পাই পর্বতের উত্তরাংশের হেলুংচিয়াং নদীর মধ্য ও নিম্ন দিক আর উশুলিচিয়াং নদীর অববাহিকায় বাস করতেন । খ্রীষ্টীয় দ্বাদশ শতকে মান জাতি চিং রাজবংশ স্থাপন করে । ১৫৮৩ সালে নূরহাছ্ মান জাতির বিভিন্ন উপজাতিকে একীভূত করেন , পাছি নামে সমাজের ভিন্ন ভিন্ন ৮ স্তর বিশিষ্ট ব্যবস্থা স্থাপন করেন এবং মান ভাষা বানান । ১৬৩৫ সালে তিনি মান জাতিকে ‘মানছু’র নাম দেন । ১৬৩৬ সালে নূরহাছ সম্রাট হন , তিনি তার রাজবংশকে ছিং রাজবংশ নাম দেন । ১৬৪৪ সালে ছিং রাজবংশের সেনাবাহিনী উত্তর-পূর্ব চীন থেকে চীনের অন্যান্য অঞ্চলে প্রবেশ করে । ফলে ছিং রাজবংশ চীনের শেষ সামন্ততান্ত্রিক রাজবংশে পরিনত হয়। ১৯১১ সালে বুর্জোয়া বিপ্লব ঘটার পর ছিং রাজবংশের পতন হয় । মান জাতির লোকেরা চীনের একত্রীকরণ , দেশের স্থিতিশীলতা আর অর্থনীতি ও সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য বিরাট অবদান রাখেন ।  



হুই জাতি  

       হুই জাতির লোকসংখ্যা ৯৮ লক্ষেরও বেশি। তাঁরা প্রধানত: চীনের উত্তর -পশ্চিমাংশের নিনসিয়া হুই স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলে থাকেন। চীনের অন্যান্য অঞ্চলেও হুই জাতির লোকেরা বাস করেন। বলা যায় হুই জাতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকে। চীনে এটি এমন একটি সংখ্যালঘু জাতি, যে জাতি সবচেয়ে ব্যাপক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। হুই জাতি আর হান জাতি দীর্ঘকাল ধরে একসাথে থাকে। সুতরাং তাদের বেশির ভাগ লোক হান ভাষা ব্যবহার করে। হুই জাতির মধ্যে যারা অন্যান্য জাতির সঙ্গে এক সাথে থাকেন, তারা ঐ জাতির ভাষাও ব্যবহার করতে পারেন। কিছু সংখ্যক হুই জাতির লোক আরবী আর ফারসী ভাষা জানেন। চীনে হুই জাতির জন্ম হয় খ্রীষ্টীয় সপ্তদশ শতক থেকে। তখন আরব আর ফারস্যের ব্যবসায়িরা ব্যবসা করার জন্য চীনে আসেন। তারা দক্ষিণ-পূর্ব চীনের উপকূলীয় কুয়াংচৌ আর ছুয়েনচৌতে বাস করেন। কয়েক শ বছরের বিকাশের মাধ্যমে তারা হুই জাতির এক অংশে পরিনত হয়েছেন। তা ছাড়া ত্রয়োদশ শতাব্দির প্রথম দিকে মধ্য এশিয়, ফারসী আর আরবরা যুদ্ধের দরুণ বাধ্য হয়ে চীনের উত্তর পশ্চিমাংশে স্থানান্তরিত হয়েছেন। তারা বিয়ে ,ধর্মবিশ্বাস প্রভৃতি উপায়ে ক্রমপর্যায়ে হান জাতি, উইগুর জাতি আর মঙ্গোলিয় জাতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এবং ধীরে ধীরে হুই জাতি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। হুই জাতির লোকেরা ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস করেন। তাদের অধ্যুষিত শহর, থানা এমন কি গ্রামে মসজিদ নির্মিত হয়েছে। মুসলমানরা সমজিদের আশেপাশে বাস করেন। তাদের খাওয়া দাওয়ার নিজস্ব রেওয়াজ আছে। হুই জাতি আর মুসলমান সাইনবোড ঝুলানো রেস্তরাঁ এবং খাবার দোকান হুই জাতির জনসাধারনের জন্য বরাদ্ধ। হুই জাতির অর্থনীতি আর সংস্কৃতির মান অপেক্ষাকৃত উঁচু। তারা চীনের ঐতিহাসিক উন্নয়নের জন্য বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।

মিয়াও জাতি 

       মিয়াও জাতির লোকসংখ্যা ৮৯ লক্ষ৪০ হাজার । তারা প্রধানতঃ কুইচৌ , ইয়ুননান , সিছুয়ান , কুয়াংসি , হুনান , হুপেই , কুয়াংতুং প্রভৃতি অঞ্চলে বাস করেন । মিয়াও জাতি মিয়াও ভাষা ব্যবহার করে । এই ভাষা হান-তিব্বত ভাষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত । আগে মিয়াও জাতির নিজের লিখিত ভাষা ছিল না । ১৯৫৬ সালে মিয়াও জাতি লাতিন ভাষার বানানের ভিত্তিতে নিজের লিখিত ভাষা বানিয়েছে । চীনে মিয়াও জাতি সুদীর্ঘকালীন ইতিহাসসম্পন্ন জাতিগুলোর অন্যতম । ৪ হাজার বছর আগেকার ঐতিহাসিক গ্রন্থে এই সম্পর্কিত লেখা আছে । যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ , রোগ , বংশ বিস্তার , কৃষিজমিতে চাষ না করা প্রভৃতি কারণে মিয়াও জাতি নিরন্তরভাবে স্থানান্তরিত হয় এবং এই জাতির মধ্যে আঞ্চলিক ভাষা , পোষাক , মাথায় ব্যবহার্য জিনিসে , আচার ব্যবহার প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য দেখা দেয় । বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী মিয়াও জাতির লোকদের যার যার রীতি-নীতি আছে । যেমন পোষাকের ক্ষেত্রে ‘লম্বা স্কার্টমিয়াও’, ‘খাটো স্কার্টমিয়াও’, ‘লম্বা শিং মিয়াও’, ‘লাল মিয়াও’,’কৃষ্ণ মিয়াও’ ইত্যাদি নাম আছে । মিয়াও জাতির লোকেরা পৃথিবীতে সব কিছু প্রাণী ও উদ্ভিদের আত্মা আছে এমন প্রাচীন ধর্ম বিশ্বাস করেন । তারা ধান আর ভুট্টাভিত্তিক ফসল এবং শরিষা ইত্যাদি অর্থকরী ফসল আর বিবিধ বনৌষধি রোপন করেন ।  

ই জাতি 

       ই জাতির লোকসংখ্যা ৭৭ লক্ষ । তারা প্রধানতঃ ইয়ুনান , সিছুয়ান , কুইচৌ আর কুয়াংশি এই চারটি প্রদেশ ও স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলে থাকেন । ই জাতি ই ভাষা ব্যবহার করে , এই ভাষা হান-তিব্বত ভাষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত । যারা হান জাতির লোকদের সংগে থাকেন আর বেশি যোগাযোগ বজায় রাখেন , তারা হান ভাষায় কথা বলেন । চীনে ই জাতি এমন এমন একটি সংখ্যালঘুজাতি , যার লোকসংখ্যা বেশি , থাকার জায়গা বিভিন্ন অঞ্চলের আর ইতিহাস সুদীর্ঘকালের । দু’হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে উত্তরাংশ আর দক্ষিণাংশের উপজাতি নিরন্তর মিলনের ফলে একটি নতুন জাতি-- ই জাতিতে পরিণত হয় । ইতিহাসে ই জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলোঃ দাস ব্যবস্থা বজায় রাখা । ১৯৪৯ সালে নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হবার পর গণতান্ত্রিক সংস্কার চালাবার পর ই জাতির সমাজে অবশিষ্ট দাস ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যায় । আগে ই জাতির লোকেরা বহু দেব-দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন । ছিং রাজবংশের প্রথম দিকে ওখানে তাও ধর্ম খুব প্রচলিত ছিলো । উনবিংশ শতাব্দির শেষ নাগাদ ক্যাথলিক ধর্ম আর খ্রীষ্টান ধর্ম ই জাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রচলিত হয় । কিন্তু তখন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা খুব কম ছিলো । 



মঙ্গোলিয় জাতি  

       মঙ্গোলিয় জাতির লোকসংখ্যা ৫৮ লক্ষেরও বেশি। তারা প্রধানত: অন্তঃমঙ্গোলিয়া স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চল, সিনচিয়াং, ছিনহাই, কানসু, হেইলুংচিয়াং, চিলিন, লিয়াও নিন প্রভৃতি প্রদেশ, স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলের মঙ্গোলিয় জাতির স্বায়ত্ত শাসিত বিভাগ, জেলাগুলোতে বাস করেন। মঙ্গোলিয় জাতি মঙ্গোলিয় ভাষা ব্যবহার করে। যা আরথাই ভাষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত। মঙ্গোলিয়ার নাম দেখা গেছে চীনের থাং রাজবংশ থেকে। তখন মঙ্গোলিয়া বহু উপজাতির উত্পত্তিস্থল এরকুনা নদীর পূর্ব তীরে ছিল। পরে তা পশ্চিমে স্থানান্তরিত হয়েছে। তাদের উপজাতিতে উপজাতিতে লোকসংখ্যা, গবাদিপশু আর সম্পত্তি লুট করা নিয়ে অবিরাম যুদ্ধ বেধে থাকতো। ১২০৬ সালে তৈমুর লং মঙ্গোলিয়ার রাজা নির্বাচিত হন, তাঁকে ডাকা হয় চেংগিস খান। সেসময় মঙ্গোলিয়া রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে চীনের উত্তরাংশে প্রথম বারের মতো একটি শক্তিশালী , স্থিতিশীল আর ক্রমাগত উন্নয়নশীল জাতি -মঙ্গোলিয় জাতি দেখা গেছে। তারপর চেংগিস খানের রাজত্বে মঙ্গোলিয় জাতির বিভিন্ন উপজাতি ও চীন একীভূত হয়েছে এবং ইউয়ান রাজবংশও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গোলিয় জাতির বেশির ভাগ লোক লামা ধর্ম বিশ্বাস করে। মঙ্গোলিয় জাতি চীনের রাজনীতি, সামরিক কাজ, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্যালেন্ডার, সংস্কৃতি ও শিল্পকলা, চিকিত্সা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছে।