চীনের পররাষ্ট্রনীতি


  চীন অবিচলিতভাবে স্বাধীন আর স্বতন্ত্র শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরন করে।এই নীতির মৌলিক লক্ষ্য হলো চীনের স্বাধীনতা,স্বার্বভৌমত্ব ও ভূভাগের অখন্ডতা রক্ষা করা, চীনের সংস্কার , উন্মুক্ততা আর আধুনিক গঠনকাজের জন্য একটি চমত্কার আন্তর্জাতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং বিশ্বশান্তি রক্ষা করা ও অভিন্ন উন্নয়ন তরান্বিত করা । এর প্রধান প্রধান বিষয় হলো :

  শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বাধীন ও স্বতন্ত্রের নীতি অনুসরণ করা, যে কোনও বড় দেশ বা দেশ-গোষ্ঠির সঙ্গে মিত্র না করা,অস্ত্রসজ্জার প্রতিযোগিতায় অংশ না নেওয়া,সামরিক সম্প্রসারন না করা । 

  আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করা, বিশ্বশান্তি রক্ষা করা ,দেশ বড় হোক ছোট হক, শক্তিশালি হোক দুর্বল হোক, গরিব হোক ধনি হোক, সবাই আন্তর্জাতিক সমাজের একই মর্যাদাপ্রাপ্ত সদস্য ।রাষ্ট্রেরাষ্ট্রে পরামর্শের মাধ্যমে শান্তিপূর্নভাবে পরস্পরের দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষ নিস্পতি করা উচিত, বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের দ্বারা হুমুকি প্রদর্শন করা উচিত নয়,যে কোনও ওজুহাতে অন্য দেশের অভ্যতরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় । 

  সক্রিয়ভাবে ন্যায় ও যুক্তিযুক্ত আন্তর্জাতিক রাজনীতি আর অর্থনীতির নতুন শৃঙখলা প্রতিষ্ঠার কাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতি আর অন্যান্য গণ-স্বীকৃত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মানদন্ড আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির নতুন শৃঙখলা প্রতিষ্ঠা করার ভিত্তি হওয়া উচিত। 

  পরস্পরের সার্বভৌমত্ব আর ভূভাগের অখন্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন , পারস্পরিক অনাক্রমন, পরস্পরের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা, সমতা আর পারস্পরিক উপকারিতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতির ভিত্তিতে সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারন করতে চীন ইচ্ছুক। 

  সার্বিকক্ষেত্রে বৈদেশিক উমুক্তদ্বার নীতি প্রচলন করে সমতা আর পারস্পরিক উপকারিতার নীতির ভিত্তিতে বিশ্বের সকল দেশ আর অঞ্চলের সঙ্গে ব্যাপকভাবে বানিজ্য আদানপ্রদান,অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি যোগাযোগ করবে এবং অভিন্ন সমৃদ্ধি তরান্বিত করবে । 

  সক্রিয়ভাবে বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক তত্পরতা চালানো বিশ্বশান্তি আর অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষা করার দৃঢ শক্তি । 

  নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গত পঞ্চাশাধিক বছরে সমৃদ্ধ ,পুনর্বিনাস ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠার পর চীনের পররাষ্ট্রনীতি আরও পরিপূর্ণভাবে চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কূটনৈতিক রীতিতে পরিনত হয়েছে । ভবিষ্যতের দিকে তাকালে বিশ্বের বহুমেরুকরন আর অর্থনীতির বিশ্বায়নের প্রবনতা অব্যাহতভাবে বিকাশ লাভ করেছে ,আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গভীর ভাবে পুনবিন্যাসের মধ্য দিয়ে উন্নীত হচ্ছে । শান্তি প্রত্যাশা ,সহযোগিতা অন্বেষন , আর উন্নয়ন তরান্বিত করার মাধ্যমে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের জনগনের অভিন্ন আশাআকাঙক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে । একবিংশ শতাব্দীতে চীনের কূটনীতিতে যেমন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তেমনি চ্যালেন্জের মুখোমুখীও হয়েছে । আমাদের উচিত সব সময় সঠিক মানসিকতা বজায় রেখে চিন্তাবোধ,নিরাপত্তাবোধ আর সমস্যা মোকাবেলাবোধ জোরদার করা । আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের দিক থেকে চীনে যে আন্তর্জাতিক পরিবেশে বিরাজ করছে তাকে আরও সঠিকভাবে উপলব্ধি ও আয়ত্ত করতে হবে , সুযোগের য়থায়থ ব্যবহার করতে হবে , চ্যালেন্জের মোকাবেলা করতে হবে , সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে এবং অন্যায়কে এড়াতে হবে । চীন অবশ্যই অব্যাহতভাবে তেন সিয়াওপিংয়ের কূটনৈতিক চিন্তাধারা থেকে শিখাগ্রহন করবে , কমরেড হু চিনথাওকে ঘিরে গঠিত পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে মনোযোগের সঙ্গে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবে, ক্রমাগত কূটনৈতিক ক্ষেত্রের নুতন পরিস্থিতি তৈরি করে চীনের সমাজতন্ত্রের আধুনিক নির্মান কাজের জন্য আরও উন্নত আন্তর্জাতিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করবে এবং বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়ন ব্রতে নিজের অবদান রাখবে ।