সুন ফেই

    সুন ফেই চীনের একজন নামকরা নারী আর হু বাদক । সুন ফেই ১৯৬৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন । আর হু ছাড়া তিনি হু ছিন , কুন ছিন আর ফিফাসহ ১৩টি তারের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন , লোকসংগীত মহল সুন ফেইকে লোকসংগীতের রাণীর আখ্যা দিয়েছে ।

  সুন ফেইয়ের বাবা চীনের থিয়েন চিং সংগীত ইন্সটিটিউটের প্রফেসার ও আর হু বাদক । সাত বছর বয়স থেকে সুন ফেই বাবার কাছ থেকে আর হু শিখতে শুরু করেন । ১৯৮১ সাল থেকে সুন ফেই থিয়েন চিং সংগীত ইন্সটিটিউটের অধীনস্থ মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশুনা করেন । ১৯৮৭ সালে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে চীনা সংগীত ইন্সটিটিউট ভর্তি হন , এই ইন্সটিটিউটে তিনি আর হু ও কুন ছিন শিখেন । ১৯৯১ সালে পড়াশুনা শেষ করে তিনি চীনের কেন্দ্রীয় লোকসংগীত বাদ্যদলে আর হু বাদক হিসেবে যোগ দেন । ১৯৯৮ সালে সুন ফেই চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে খোলা লোকসংগীত ও বাদ্যযন্ত্র সংক্রান্ত গ্রাডিওয়েট ক্লাসে ভর্তি হন । এই ক্লাসে সুন ফেইদুই বছর আর হু ও কুন ছিন শিখেন । 

   মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় থেকেই সুন ফেই চীনের বিভিন্ন ধরণের লোকসংগীত প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার পান । তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ও একাধিকবার পুরষ্কার পেয়েছেন । তিনি চীনের সংগীতবিদদের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি হল , অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনা সোনালী কনসার্ট হল ইত্যাদি বিখ্যাত সংগীত হলে চীনের লোকসংগীত বাজিয়েছেন । 

  গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে সুন ফেই চীনের বিখ্যাত সংগীতবিদ চেন সিয়াও ইংয়ের সংগঠিত আই ইউয়ে নারী বাদ্যদলের সঙ্গে চীনের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠান পরিবেশন করে চীনের লোকসংগীত জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা করেন । এই নারী বাদ্যদল ইউরোপে গিয়ে চীনের লোকসংগীত বাজায়। একটি সংগীতানুষ্ঠানে সুন ফেই আর হু দিয়ে সুরকার কোরসাকোভের ‘ উড়ন্ত ভ্রমর ’ নামে একটি সুর বাজিয়ে ইউরোপের দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন । 

  ১৯৯৬ সালে সুন ফেই চীনের নয়জনযুব নারী বাদকের সঙ্গে ‘ হুয়া ইয়ুন চিউ ফান ’ নামে একটি ছোট লোকসংগীত দল প্রতিষ্ঠা করেন । তারা বিভিন্ন জায়গায় সংগীতানুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমেলোকসংগীত জনপ্রিয় ও গবেষনার কাজ করেন । চীনের নয়জন যুব নারী শিল্পীর বাজানো সুরচীনের ঐতিহ্যিক লোকসংগীতে প্রাণশক্তি যুগিয়েছে এবং লোকসংগীত সম্পর্কে নাগরিকদের নতুন উপলব্ধি জাগিয়েছে । 

  ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালের বসন্ত উত্সবের সময় সুন ফেই চীনের লোকসংগীত দলের সঙ্গে দু-দুবার ভিয়েনার সোনালী হলে আর হু বাজিয়েছেন।  

  ১৯৯৯ সালে ত্রিশ বছর বয়সী সুন ফেই যখন তার আর হু বাজানোর মান দিন দিন উন্নত হয় ,তিনি শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের প্রশিক্ষণের কাজে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন । তিনি বলেছেন , আমার বাবা একজন শিক্ষক , আমি তার মতো লোকসংগীত ক্ষেত্রে আরো বেশী প্রতিভাবান ছাত্র প্রশিক্ষণ করতে চাই । তিনি বলেছেন , এখন আমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা জীবনের সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে , আমি যুব ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে চীনের লোকসংগীতের প্রাণ শক্তি ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস চালাবো । 

  ২০০১ সালে সুন ফেই পেইচিংয়ে তার একটি একক সংগীত অনুষ্ঠান আয়োজন করেন । এই অনুষ্ঠানে সুন ফেই আর হু , কাও হু , কুছিন ও ফিফা ইত্যাদি ১৩ ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন । লোকসংগীত ক্ষেত্রে তার প্রতিভা ও সুর বাজানোর চমত্কার নৈপুন্যের জন্যতার একক সংগীতানুষ্ঠান আশানুরুপ সাফল্য অর্জিত হয়েছে । 

   সুন ফেইয়ের প্রতিনিধিত্বকারী সুর :《আরছুয়েন ইনইউয়ে 》、《 খোনসান নিয়াওইয়ু 》、《মহাপ্রাচীরের কল্পনা》 ইত্যাদি  

  [ সুন ফেইয়ের বাজানো সুর ]《থিনসুন 》