লিউ মিং ইউয়ান

     লিউ মিং ইউয়ান চীনের গত অর্ধ শতাব্দী সময়ে চীনের অন্যতম সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ লোকসংগীত বাদ্যযন্ত্র বাদক । চীনের ও আন্তর্জাতিক সংগীত মঞ্চে তিনি চীনের শ্রেষ্ঠতম তারের বাদ্যযন্ত্র বাদক । লিউ মিং ইউয়ান বাদযন্ত্র পান হু , কাও হু , আর হু , চুন হু , চিং হু আর চুই হু বাজাতে পারেন , বিশেষ করে পান হু ও চুন হু বাজানোর নৈপুন্য সবচেয়ে ভালো । তিনি এই সব তারের বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মাধ্যমে অপেরা ও স্থানীয় লোকসংগীতের রীতি নিঁখুতভাবে প্রকাশ করতে পারেন । 

  লিউ মিং ইউয়ান ১৯৩১ সালে থিয়েন চিংশহরে জন্মগ্রহণ করেন । ছয় বছর বয়স থেকেতিনি বাবার কাছ থেকে পান হু ও চিং হুশিখতে শুরু করেন । ১১ বছর বয়স লিউ মিং ইউয়ানথিয়েন চিং শহরের ‘ পাই লিন বাদ্যদল ’ ও ‘ মিং ইউয়ে হুই কুয়ান ’ প্রভৃতি সংগীত দলে যোগ দেন , এই সব সংগীতদলে তিনি ঐতিহ্যিক তারের বাদ্যযন্ত্র ও কাঠের বাঁশি বাজানো , কুয়াং তুং সংগীত , পিকিং অপেরা , ফিংচু অপেরা ও হোপেই অপেরা শিখেন । ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫২ সালে পর্যন্ত তিনি থিয়েন চিং শহরের শেন লি , হুয়ান কুন , ইয়োন আন ও হুই চুন নৃতসংগীত দলে আর ফিংচু অপেরা দলে বাদ্যদলের সদস্য হিসেবে যোগ দেন । ১৯৫৭ সালে তিনি চীনের যুব শিল্পী হিসেবে ষষ্ঠ বিশ্ব যুব মহাসম্মিলনীতেলোকসংগীতের বাজনা প্রতিযোগিতায়স্বর্ণ পুরষ্কার পান । প্রথম ত্রিশ বছরের লোকসংগীত বাজানোর অভিজ্ঞতালিউ মিং ইউয়ানের জন্য তারের বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং হু ছিন পরিবেশনে শীর্ষস্থানে পদার্পণ করতে সাহায্য করেছে ।  

  দীর্ঘ দিন বিভিন্ন ধরনের অপেরা দল ও স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বাদ্যদলে হু ছিন পরিবেশনে করেন বলে লিউ মিং ইউয়ান বিভিন্ন অপেরার গান ও সুরেরবৈশিষ্ট্য প্রকাশ করতে পারেন । হু ছিন ছাড়া লিউ মিং ইউয়ানের পিয়ানো বাজানোর নৈপুণ্যও প্রশংসনীয় । তিনি জ্যাজ বাদ্যদলের পিয়ানো বাদক ছিলেন । তিনি শিক্ষকের কাছ থেকে মঙ্গোলীয় জাতির সংগীত শিখেন , তাই তিনি মঙ্গোলীয় সংগীতের সুর বাজাতে নিপুণ । লিউ মিং ইউয়ানসুর তৈরী ও সংশোধনের কাজও করেন । তার সৃষ্ট ও শোধিত সুরগুলোতে চীনের ঐতিহ্যিক রীতি ও শৈল্পীক নৈপুন্য শ্রোতাদের মুগ্ধ করে । তার বাজানো লোকসংগীত ‘ শি ইয়ান ইয়ান ’ ও ‘ সুখী জীবন ’ , আর হুর সুর ‘ হোনান সুর ’ আর চুন হুর সুর ‘ তৃণ্যভূমিতে ’ ও ‘ পশুপালকের প্রত্যাবর্তন ’ সবচেয়ে জনপ্রিয় ।  

  লিউ মিং ইউয়ান তারের বাদ্যযন্ত্র সংস্কার ও ছাত্র প্রশিক্ষণেও বিরাট অবদান রেখেছিলেন । তার সৃষ্ট নতুন ধরনের পান হুশিল্পীরা মঞ্চেএককভাবে বাজাতে পারেন , তাই তিনি প্রাচীণ বাদ্যযন্ত্র পান হুকে নতুন জীবন দিয়েছে । পঞ্চাশের দশক থেকে লিউ মিং ইউয়ান সংগীতবিদ প্রশিক্ষণের কাজ করতে শুরু করেন । ১৯৮২ সালে তিনি চীনের সংগীত ইন্সটিটিউটের বাজনা বিভাগের প্রফেসার হন । ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসেলিউ মিং ইউয়ান মৃত্যুবরণ করেন ।

  [ লিউ মিং ইউয়ানের বাজানো সুর ]《সুখী জীবন 》