থান চুন ছিয়াও চীনের একজন যুব নারী বাঁশিবাদক , তিনি এখন সাংহাইয়র লোকসংগীত দলে শীর্ষ বাঁশিবাদক ।
থান চুন ছিয়াও ছোট বেলা থেকেই বাবার কাছ থেকে বাঁশি বাজানো শিখেন এবং একাধিকবার ছোটদের বাদ্যযন্ত্র বাজার প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার পান । ১৯৮৬ সালে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব চীনের সেন ইয়াং সংগীত ইন্সটিটিউটের অধীনস্থ মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হন , এই ইন্সটিটিউটে তার শিক্ষক ছিলেন প্রফেসার খোং ছিং সান । ১৬ বছর বয়সে তিনি তার প্রথম একক সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করেন । পরে থান চুন ছিয়াও সাংহাই সংগীত ইন্সটিটিউটে নামকরা বাঁশি শিক্ষক চাও সুন থিন ও ইয়ু সুন ফার কাছ থেকে বাঁশি বাজানো শিখেন । সাংহাই সংগীত ইন্সটিটিউটে অধ্যয়নকালে থান চুন ছিয়াও ‘ কুলফুলের তিন স্তবক ’ , ‘ পশুপালকের নতুন গান ’ আর ‘ খাদ্যশস্য বহনকারী ঘোড়ার পিঠে চাবুক মারি ’ ইত্যাদি বিখ্যাত সুরের সি ডি ও ক্যাসেট রেকর্ড করেন । ১৯৯৬ সালে থান চুং ছিয়াও ইন্সটিটিউটের পড়াশুনা শেষ করে সাংহাই লোকসংগীত দলে ভর্তি হন । তিনি সাংহাই লোকসংগীত দলের শীর্ষ বাঁশিবাদক হন , চীনের লোকসংগীত দলগুলোতে থান চুন ছিয়াও হলেন প্রথম নারী শীর্ষ উইন বাদ্যযন্ত্রের বাদক ।
থান চুন ছিয়াওয়ের বাঁশি বাজার নৈপুন্য বিশেষজ্ঞদের স্বীকৃতি পেয়েছে । তার বাজানো বাঁশির স্বর শুনতে মধুর , তিনি সুরগুলোর নানা ধরনের মমতা প্রকাশ করতে পারেন । তিনি প্রায়ই নানা ধরনের বিরাট সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজান । তিনিনতুন সহস্র বত্সর উপলক্ষে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত দাতব্য সংগীতানুষ্ঠান , সাংহাই থিয়েটারের ২০০০ সালের নববর্ষ সংগীতানুষ্ঠান , ১৯৯৯ সালের বসন্ত উত্সবের সংগীতানুষ্ঠান , হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংগীতানুষ্ঠানআর ২০০১ সালের সাংহাইয়ের বসন্ত সংগীতানুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়েছেন ।
থান চুন ছিয়াও বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক লি আন আর সুরকার থান তুনের তৈরী চলচ্চিত্র ‘ উও হু ছান লুন ’তে বাঁশি ও বাউ বাজিয়েছেন । তার বাজানো সুর অস্কার পুরষ্কারসহ গোটা পৃথিবীর ১৮টি চলচ্চিত্রের সংগীত পুরষ্কার ও কেলাইমেই সংগীত পুরষ্কার পেয়েছে । চীনের নারী বাঁশি বাদক থান চুন ছিয়াওয়ের বাজানো এই সুর আন্তর্জাতিক সংগীত মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । তিনি আমন্ত্রিত হয়ে ব্রিটেনের লন্ডনের পাবিক্যান শিল্পকলা কেন্দ্রেবিশ্ববিখ্যাত ভায়োলিনসেলিস্ট মা ইউ ইউর সঙ্গে সাফল্যের সঙ্গে থান তুনের রচিত এই সুর বাজিয়েছেন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে এই বিখ্যাত সুর বাজিয়েছেন । তিনি চীনের বিখ্যাত সুরকার চা তা ছুনের সঙ্গে সহযোগিতা করে বিশেষভাবে তার জন্য রচিত সুর ‘ সীমান্তের স্বপ্ন ’ বাজিয়েছেন , সুরকার হো সুন থিয়েনের সঙ্গে সহযোগিতা করে ‘ আচিয়ে কু ’ , ইয়ানচিনমা ’ আর ‘পোলোমিতো ’ ইত্যাদি সিডিতে বাঁশি বাজিয়েছেন ।
২০০১ সালের বসন্ত উত্সবের সময় থান চুন ছিয়াও সাংহাইয়ের লোকসংগীত দলের সঙ্গে ভিয়েনারসোনালী হোলে অনুষ্ঠিত সাপ বর্ষের বসন্ত সংগীতানুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়েছেন। একই বছরের জুলাই মাসে থান চুন ছিয়াও আমন্ত্রনক্রমে ম্যাকাওয়ে তার একক বাঁশি বাজানো সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করেছেন ।
থান চুন ছিয়াও নামকরা সংগীতবিদ হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন সংগীত উত্সব বা শিল্পকলা উত্সবে অংশ নিয়েছেন । তিনি জাপানের ওসাকা আন্তর্জাতিক শিল্পকলা উত্সব , ফ্রান্সের সংগীত উত্সব , লন্ডনের ‘ পানির উপর আগুন ’ সংগীত উত্সব , পেইচিং আন্তর্জাতিক সংগীত উত্সব , সাংহাই আন্তর্জাতিক শিল্পকলা উত্সব , সাংহাইয়ের বসন্ত আন্তর্জাতিক সংগীত উত্সব আর ম্যাকাও আন্তর্জাতিক সংগীত উত্সবে অংশ নিয়েছেন , তার পরিববেশন করা বাঁশি বাজানো দশর্ক ও বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা পেয়েছে । তা ছাড়া তিনি চীনের লোকসংগীতের অন্যান্য দুজন শ্রেষ্ঠ নারী সংগীতবিদের সঙ্গে সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত এপেকে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের শীর্ষনেতাদের জন্য বাঁশি বাজিয়েছেন এবং তাদের আন্তরিক সমাদর পেয়েছেন।
থান চুন ছিয়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নামকরা বাদ্যদলের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন । তিনি লন্ডনের সিম্ফোনী অক্যাস্ট্রা দল, ফ্রান্সের জাতীয় সিম্ফোনী অক্যাষ্ট্রা দল , হেমবার্গার সিম্ফোনী অক্যাস্ট্রা দল , হংকংয়ের অক্যাস্ট্রা দল , থাইপে পৌর সিম্ফোনী অক্যাস্ট্রা দল ,চীনে আইইউয়ে বাদক দল , সাংহাই সিম্ফোনী অক্যাস্ট্রা দল ও সাংহাইয়ের বেতার সিম্ফোনী অক্যাস্ট্রা দলের সঙ্গে সহযোগিতা করে বাঁশি বাজানো পরিবেশন করেন । তিনি যুক্তরাস্ট্র , জার্মানী , জাপান , ব্রিটেন , অষ্ট্রিয়া , বেলজিয়াম , ফ্রান্স , ইতালী , তাইওয়ান , হংকং ও ম্যাকাও প্রভৃতি দেশ ও অঞ্চল সফর করেছেন । থান চুন ছিয়াও চীনের সর্বশ্রেষ্ঠ যুব নারী বাঁশিবাদক ।
|