পেন সিউওয়েন

     কন্ডাক্টর ও সুরকার পেন সিউওয়েন (১৯৩১-১৯৯৬ ) পেন সিউ ওয়েন চীনের হুপেই প্রদেশের উহান শহরের লোক । তিনি চীনের শ্রেষ্ঠ জাতিসত্তা সঙ্গীত গ্রেট মাষ্টার, চীনা জাতীয় বেতার সঙ্গীত দলের প্রধান কন্ডাক্টর ছিলেন । তিনি কেন্দ্রীয় বেতার জাতিসত্তা অর্কিস্ট্রাল সঙ্গীত দলের অনত্যম প্রতিষ্ঠাতা ।  

  ছোটবেলা থেকেই পেন সিউওয়েন আরহু ও পিফা প্রভৃতি ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্র শিখতে শুরু করেছেন । ১৯৪৯ সালে তিনি বাণিজ্য কলেজ থেকে স্নাতক হন এবং ১৯৫০ সালে ছোংছিং শহরের গণ বেতারে কাজ করেন । 

  ১৯৫২ সালে পেন সিউওয়েন কেন্দ্রীয় জাতিসত্তা বেতার সঙ্গীত দলে যোগ দেন এবং এর পরের বছর তিনি দলটির কন্ডাক্টর ও রচয়িতা হন । তার এবং গোটা সঙ্গীত দলের মিলিত প্রচেষ্টায় চীনের নতুন জাতিসত্তা অর্কিস্ট্রাল দলের প্রাথমিক সংস্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হয় । 

  ১৯৫৭ সালে মস্কোর ষষ্ঠ বিশ্ব যুবসম্প্রদায়ের সম্প্রীতি উত্সবের প্রতিযোগিতায় পেন সিউওয়েনের পরিচালনায় জাতিসত্তা সঙ্গীত দল তার সংস্করণ “বাসন্তীনদী তীরে সুন্দর জ্যোত্স্নারাত ”,“সোনালী সাপের নাচ ”আর “সীমান্ত পাহাড়ের চাঁদ ”স্বর্ণ পদক পেয়েছে । এ কয়েকটি সঙ্গীত চীনা জাতিসত্তা অর্কিস্ট্রাল দলের ঐতিহ্যিক সুরে পরিণত হয়েছে । 

  ১৯৮১ সালে হংকংয়ের চীনা সঙ্গীত দলের আমন্ত্রণে পেন সিউওয়েন দলটির কন্ডাক্টর হন । একই সালে তিনি চীনা বেতার চারুশিল্পী দলের জাতিসত্ত্বা সঙ্গীত দলের শিল্পকলা ইনস্পেক্টর হন । পরের বছর তিনি হংকংয়ে দলটির পরিবেশনায় কন্ডাক্ট করেছেন । 

  ১৯৮৩ সালে পেন সিউওয়েন চীনা বেতার চারুশিল্পী দলের জাতিসত্ত্বা সঙ্গীত দলের নেতা হন । 

  “ আবেগের সঙ্গে সুর সমন্বিত করা এবং সুরের মাধ্যমেআবেগ ব্যক্ত করা ” পেন সিউওয়েনের কন্ডাক্টের এক বৈশিষ্ট্য । তাঁর কন্ডাক্টে চীনা বেতার চারুশিল্পী দলের জাতিসত্তা সঙ্গীত দলের মান অত্যন্ত উচ্চ পযায়ে উন্নীত হয়ে চীনের শ্রেষ্ঠতম জাতিসত্ত্বা অর্কিস্ট্রাল দলে পরিণত হয়েছে । 

  পেন সিউওয়েন চীনের জাতিসত্তা সঙ্গীতব্রতের জন্যে বিরাট অবদান রেখেছেন । তিনি ৪০০-৫০০টি সঙ্গীত রচনা করেছেন বা সংস্করণ করেছেন । এগুলোর মধ্যে রয়েছে “ বাসন্তী নদী তীরে সুন্দর জ্যোত্স্নারাত ” , “ মেই হুয়া সাননোং ”, “উচু আকাশের চাঁদ”, “ চিয়াংজুন লিং ”,“লিউশুই ছাও”,“ বুবুকাউ”, “ চাঁদের রঙিন মেঘ অনুসারী ”,“প্রস্ফুটিত ফুলওপূর্ণচন্দ্র”,“ফসলেরঢাকঢোলেরসুর”,“ঝরণারপানিতেচাঁদ”,“আসিরচাঁদ-নাচ”,“ইয়াওজাতিরনাচ-সঙ্গীত ”,“মেঘেরনাচ ”ইত্যাদি। তাছাড়া তিনি চীনের ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্রে বিখ্যাত বিদেশী সঙ্গীত বাজানোর প্রচেষ্টাও করেছেন । যেমন তিনি “সুন্দর সোলো নদী ”,“হোরো ”আর “কাঠ কাটার গান ”প্রভৃতি বাজিয়েছেন । তিনি বিটুফেনের “এথেন্সের ধ্বংসাবশেষ ”ও মুসোরস্কির “আঁকা ছবির প্রদর্শনী ”এবং ইউরোপের দেবাস্সির “মেঘ ”আর স্ট্রাভিস্কির “অগ্নি পাখি ”প্রভৃতি সাম্প্রতিক ও আধুনিক সঙ্গীতকে বিরাটাকারের জাতিসত্তা অর্কিস্ট্রাল সঙ্গীতে রূপান্তর করেছেন । এভাবে জাতিসত্তা বাদ্যযন্ত্র দলের পরিবেশনার ক্ষমতা বেড়েছে । 

  বিংশ শতাব্দীর আশির দশকের পর পেন সিউওয়েন আরহুর চেলো কন্সার্টো“অদম্য সুউ”,সিমফোনিক কবিতা “লিউশুই ছাও”,“হুয়াই ”ও “ছিন রাজবংশের সৈনিক ও ঘোড়ামূর্তীর কাল্পনিক সুর ”সহ অনেক সুর বানিয়েছেন । 

  ১৯৯৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর পেন সিউওয়েন রোগাক্রান্ত হয়ে পেইচিংয়ে মারা যান । 

  [ সঙ্গীত উপভোগ ]《সুনামের সুর 》