লি ত্যলুন চীনের সিন্ফোনি দলের উপদেষ্টা , চীনা সঙ্গীতশিল্পী সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের কারুশিল্প অধিকর্তা ও স্থায়ী কন্ডাক্টর ছিলেন । ১৯১৭ সালে পেইচিংয়ে তাঁর জন্ম হয় । বালককালে তিনি পিয়ানো ও বেহালা শিখেছেন । ফুরেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সময়তিনি শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে অর্কিস্ট্রাল সঙ্গীত দল গঠন করেন এবং পরিবেশন করেন । ১৯৪০ সালে তিনি সরকারী সাংহাই সঙ্গীত কলেজে ভর্তি হন এবং পরপর আই শেভজোভ ও আর দাক্সনের কাছে চেলো শিখেছিলেন । ডাব্লিও ফ্রান্কেলের কাছে তিনি সঙ্গীত-তত্ত্ব শিখেছিলেন ।
১৯৪২ সালে সাংহাইয়ে তিনি সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে “ চীনা যুব সিন্ফোনি দল ” গঠন করে পরিবেশন করেন । ১৯৪৩ সালে তিনি সাংহাই সঙ্গীত কলেজ থেকে স্নাতক হবার পর ইয়েন আনে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্কিস্ট্রাল সঙ্গীত দলের কন্ডাক্টর ও শিক্ষক হন । ১৯৪৯ সালে তিনি পেইচিংয়ে কেন্দ্রীয় অপেরা দলের কন্ডাক্টর হন ।
১৯৫৩ সালে তিনি বিশ্ববিখ্যাত কন্ডাক্টর প্রফেসর এন আনোসোভের স্নাতকত্তোর ছাত্র হন এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মস্কো সঙ্গীত ইনস্টিটিউটের কন্ডাক্টর বিভাগে অধ্যয়ন করেন । ১৯৫৭ সালের শরত্কালে তিনি স্বদেশেপ্রত্যাবর্তন করেন এবং কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের কন্ডাক্টর হন ।
পেইচিং আর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কন্ডাক্ট করা ছাড়া লি ত্যলুন কেন্দ্রীয় সিন্ফোনি সঙ্গীত দল নিয়ে জাপান ,উত্তর কোরিয়া,হংকং ও ম্যাকাও গিয়ে পরিবেশন করেছেন এবং ঘরোয়া-সঙ্গীত দল নিয়ে ন্পেনের বিশাধিক শহরে পরিবেশন করেছেন । অতিথি কন্ডাক্টর হিসেবে তিনিপরপর সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিনগ্রাদ ,মস্কো প্রভৃতি বিশাধিক সঙ্গীত দল পরিচালনা করেছিলেন এবং ফিনল্যান্ড ,চেক ,কিউবা প্রভৃতি দেশে কন্ডাক্টকরেছিলেন । ১৯৫৯ সাল থেকে তিনি অনেকবার কয়েকশ বাদকসম্পন্ন বিরাটাকারের বাদ্যযস্ত্রীদলের পরিবেশনায় কন্ডাক্ট করেছিলেন । ১৯৮৭ সালে পেইচিং“সিন্ফোনির বসন্ত”শিরোনামে বিরাটাকারের সঙ্গীতানুষ্ঠানে তিনি ৮৯০জনের এক যুক্ত সঙ্গীত দলকে কন্ডাক্ট করেছিলেন ।
১৯৮৫ সালের পর লি ত্যলুন পরপর লোক্সেনবার্গ,স্পেন , জার্মানী , পর্তুগাল , কানাডা আর যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশন করেছিলেন । ১৯৯৫ সালে তিনি তাইওয়ান গিয়ে বিংশশতাব্দীতে চীনা বংশোদ্ভূত মানুষের রচিত সঙ্গীতের পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ।
তিনি পরপর হো লুতিন , মাসিছুং , লো চুংরোং, উ চুছিয়াং, ছেন পেইস্যুন প্রমুখ চীনা সুরকারের দশ-বারোটি সিন্ফোনির পরিবেশনায় কন্ডাক্ট করেছিলেন , বিদেশে “ হুয়াং হো নদীর মহত্ ঐকতান সঙ্গীত ” , “ বনের গান ” সহ বিশাধিক চীনা সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন এবং বিশ্ববিখ্যাত বাদক ওইস্ট্রাখ,মেনুহিন,স্টেম, মা ইউইউ , নিকোলাইয়েভা,স্টকমান এবং চীনের ফু ছুং, লিউ সিখুন ,সেন সিয়াং , কো সুচেন , হু খুন , ল্যু সিছিং , স্যুয়ে উই প্রমুখ কয়েক ডজন চীনা সঙ্গীত শিল্পীর সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন ।
লি ত্যলুন ১৯৮৫ প্যারিসে আন্তর্জাতিক মেনুহিন বেহালা প্রতিযোগিতা যাচাই কমিটির সদস্য এবং ১৯৮৬ সালে মস্কোয় ছাকোভস্কি আন্তর্জাতিক চেলো প্রতিযোগিতাবিচারক কমিটির সদস্য ছিলেন ।
দীর্ঘকাল ধরে লি ত্যলুন সিন্ফোনির জনপ্রিয়তা ও উন্নয়নের জন্যে প্রয়াস করেছেন । তিনি পেইচিং, থিয়েনচিন, কুয়াংচৌ প্রভৃতি বিশাধিক শহরে বাদ্যযন্ত্রঈ দলের প্রশিক্ষণ ও পরিবেশনে সাহায্য করেছেন । পেইচিং,শানতুং,আন্তমগোলিয়ার বাদ্যযন্ত্রী দল প্রতিষ্ঠা ,পেইচিং সঙ্গীত হল ও কুয়াংচৌ সঙ্গীত হলের নির্মান কাজ তরান্বিত করেছেন এবং বিভিন্ন জায়গার বিশ্ববিদ্যালয়, কারখানা ও সরকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলোতে সিনম্ফোনি কোর্স খুলেছেন ।
১৯৮০ সালে লি ত্যলুন সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের কন্ডাক্টর সাম্মানিক পুরস্কার পেয়েছেন এবং ১৯৮৬ সালে হাঙ্গেরির সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের লিস্ট স্মারক পদক পেয়েছেন । ২০০১ সালের ১৯ অক্টোবর রোগে আক্রান্ত হয়ে লি ত্যলুন মারা যান । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর ।
[
সঙ্গীত উপভোগ
]:
《 বসন্ত উত্সবের ওভারচার 》
|