প্রফেসর চেন সিয়াওইং চীনের প্রথম নারী কন্ডাক্টর । তিনি কেন্দ্রীয় অপেরা দলের প্রধান কন্ডাক্টর , কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইনস্টিটিউটের কন্ডাক্ট বিভাগের প্রধান ও “ সঙ্গীতপ্রেমী নারী ” নামক সঙ্গীত দলের চারুশিল্পের চীফ ইনস্পেক্টর ছিলেন । এখন তিনি আমন্ত্রিত হয়ে চীন সরকারের অর্থবিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত এবং চীফ ইনস্পেক্টর-ব্যবস্থার প্রথম পেশাদার সিন্ফোনি দল “ সিয়ামেন সঙ্গীতপ্রেমী সঙ্গীত দল”-এর চারুশিল্প চীফ ইনস্পোক্টর , প্রথম কন্ডাক্টর এবং চীনা সঙ্গীত শিল্পী সমিতির স্থায়ী সদস্য । ১৯৮১ সালে তিনিসংস্কৃতিমন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ শিল্পী দলের নিবাচিত প্রথম শ্রেণীর শ্রেষ্ঠ কন্ডাক্টর পুরস্কার পেয়েছেন ।১৯৮৫ সালে ফ্রান্সের সাহিত্য চারুশিল্পের সম্মানিত পদক পেয়েছেন । ১৯৯৭ সালে তিনি “ বৃদ্ধ বয়সে জাতীয় অবদান পুরস্কার ” লাভ করেছেন । বৃটেনের ক্যামব্রীজেরআন্তর্জাতিক জীবনী কেন্দ্র ও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিখ্যাত লোকের নামের তালিকায় তার জীবনী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ।
১৯৪৭ সালে চেন সিয়াওইং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পেইচিং সিয়েহো হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর চিনলিং মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিভাগ ও সঙ্গীত বিভাগে পড়াশুনা করেন ।১৯৪৮ সালের শেষ দিকে তিনি মুক্তি এলাকায় গিয়ে সেখানকার নৃত্য-সঙ্গীত দলে কাজ করেছিলেন । ১৯৫২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইনস্টিটিউটে সুর রচনা শিখেন । ১৯৫৫ সালে তিনি ঐকতান সঙ্গীত কন্ডাক্ট করতে শিখেন । ১৯৬০ সালে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করতে যান । তিনি জাতীয় মস্কো ছাইকোভস্কি সঙ্গীত ইনস্টিটিউটে অপেরা ও ঐকতান সঙ্গীত কন্ডাক্ট বিভাগে পড়াশুনা করেন । ১৯৬২ সালে তিনি জাতীয় মস্কো কন্সার্ট হলে ইতালি অপেরা “ তোস্কা ” কন্ডাক্ট করেছেন এবং সফল হয়েছেন । তিনি দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কন্ডাক্টর বলে স্বীকৃতি পেয়েছেন ।
১৯৭৮ সাল থেকে শুরু করে তিনি সবদাই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কন্ডাক্ট করেছেন । তিনি “ ফুলের রক্ষীদেবতা”, “শততম নব কনে ”, “ পতিতা নারী ” , “ সন্ধ্যাকালীন সারস” , “ কার্মেন” , “ ফিগারোর বিবাহ অনুষ্ঠান ”, “ মাদাম প্রজাপতি ”, “ সাইভিগ্লিয়ার নাপিত ” সহ দেশী-বিদেশী অপেরা কন্ডাক্ট করেছেন । তিনি কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দল , সাংহাই সঙ্গীত দল , চীনা বেতার সিন্ফোনি দল , কেন্দ্রীয় অপেরা দল প্রভৃতি দশাধিক সিন্ফোনি দলের সঙ্গে সহযোগিতা করেসঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন । তাঁর কন্ডাক্ট করা অপেরাগুলো , যেমন “ শততম নব কনে ” , “ তৃণভূমির গান ” , “ কার্মেন ” , “ আইকুলি ” এবং ইউরোপের বিখ্যাত অপেরা , ৩৪তম পাগনিনি প্রতিযোগিতার প্রথম বিজয়ী ল্যু সিছিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করা বেহালা চেলো কন্সার্টো “ লিয়াং চু ” এবং কিছু চীনা সিন্ফোনি ও অপেরা ফোনোগ্রাফ রেকর্ড করা হয়েছে এবং দেশেবিদেশে প্রকাশ করা হয়েছে ।
চেন সিয়াওইং চীনে এক সবচেয়ে অভিজ্ঞ কন্ডাক্টর-প্রফেসরও । সাম্প্রতিক কয়েক বছরে তাঁর অনেক ছাত্রছাত্রী যুক্তরাষ্ট্র , ফ্রান্স, ইতালি , অষ্ট্রিয়া, চেক ও পর্তুগাল প্রভৃতি দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কন্ডাক্টর প্রতিযোগিতায় সবোচ্চ স্থান অধিকার করেছেন বা দেশবিদেশের শ্রেষ্ঠ কন্ডাক্টরের সারিতে প্রবেশ করেছেন । তাছাড়া তিনি একজন আন্তরিক সঙ্গীত-সমাজবিদ ।তিনি নানা পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় হাজার বার করে সরাসরিভাবে দুলক্ষ শ্রোতার মধ্যে সঙ্গীতের সাধারণ জ্ঞান প্রচার করেছেন । ১৯৮০ সাল থেকে তিনি পরপর জাপান,যুক্তরাষ্ট্র,ইতালি ,ফিনল্যান্ড,জার্মানী,ফ্রান্স ,নেদারল্যান্ড,বেলজিয়াম,আইয়ার্ল্যান্ড,থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন,আন্তর্জাতিক শিল্পকলা দিবসে অংশ নিয়েছেন,অপেরাকন্ডাক্ট করেছেন বা বক্তৃতা দিয়েছেন । তিনি প্রথম চীনা কন্ডাক্টর যিনি এখনো আমন্ত্রিত হয়ে বিদেশে গিয়ে বিশ্ব বিখ্যাত অপেরা কন্ডাক্ট করছেন । এ পযন্ত তিনি ছ’বার আমন্ত্রিত হয়ে ফিনল্যান্ড ও সুইজার্ল্যান্ডে গিয়ে মোট ষাটেরও বেশী বার “মাদাম প্রজাপতি ”,“কার্মেন”,“লা বোহেমে ”সহ অপেরা কন্ডাক্ট করেছেন । তাঁর কন্ডাক্ট জনমতের উচ্চমূ্ল্যায়নলাভ করেছে ।
[
সঙ্গীত উপভোগ
]:
《ইয়ালুচাম্পু নদী 》
|