হু পিংস্যুই চীনের সঙ্গীত মঞ্চের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কন্ডাক্টর । ১৯৫৫ সালে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইনস্টিটিউটের বালক-বালিকা ক্লাসে ভর্তি হন, ১৯৫৮ সালে তিনি ইনস্টিটিউটের অর্কিস্ট্রাল সঙ্গীত বিভাগে উন্নীত হন । ১৯৫৯ সালে পড়াশুনার শ্রেষ্ঠ ফলাফল পাওয়ার কারণে তাকে চেক ওবোয়ে বিশেষজ্ঞ ক্লাসে পড়তে পাঠানো হয় । ১৯৬৩ সালে তিনি উত্তম ফলাফল সহ স্নাতক হয়ে কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের সিন্ফোনি দলে ওবো বাজান ।
হু পিংস্যুই পরপর কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দল,সাংহাইয়ের পেইচিং অপেরা হাউস,পেইচিংয়ের পেইচিং অপেরা হাউস,কেন্দ্রীয় অপেরা হাউস ,প্রাচ্য নৃত্য-সঙ্গীত দল ,কেন্দ্রীয় ব্যালে নৃত্য দল,কেন্দ্রীয় জাতিসত্তা সঙ্গীত দল সহ সাতটিজাতীয় দলের স্থায়ী কন্ডাক্টর ও চারুশিল্পের পরিচালক হয়েছিলেন ।
তিনি বিরাটাকারের সিন্ফোনি “ সাচিয়া পাং ” এবং আধুনিক পেইচিং অপেরা “বুদ্ধি দিয়ে টাইগার পাহাড় দখল ” ও “ তুচুয়েন পাহাড় ” দুটির মহড়ার কাজে অংশ নিয়েছেন । তিনি সিন্ফোনি দলকে জাতিসত্তা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে যে সমন্বিত করেছেন তা চীনের অপেরা চারুশিল্পের ইতিহাসে এক বিরাট উদ্ভাবণ ও বিকাশ ।
কন্ডাক্টের ব্যাপারে হু পিংস্যুইর শ্রেষ্ঠ সাফল্যের জন্যে চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় তাকে শ্রেষ্ঠ কন্ডাক্টর পুরস্কার দান করেছিল । তিনি বহুবার গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশনায় বিশেষ কন্ডাক্টর পুরস্কার পেয়েছিলেন । যেমন একাদশ এশিয়া গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত “ আজকের তারকা-উজ্জ্বল রাত ” শিরোনামেবিরাটাকারেরর সান্ধ্য অনুষ্ঠান । তিনি ১৯৯৫ সালে চীনের ফোনোগ্রাফ রেকর্ড কোম্পানির স্বর্ণ ফোনোগ্রাফ রেকর্ড বিশেষ কন্ডাক্টর পুরস্কার পেয়েছেন ।
কন্ডাক্টর ও বাদ্যযন্ত্রের বাদক,সঙ্গীত ও শ্রোতাদের মধ্যে আদানপ্রদানে তার কন্ডাক্ট চমত্কার ভূমিকা পালন করে । ফিলিপস কোম্পানি প্রথমবারের মতো চীনের মুলভূভাগে যে তিনটি ফোনোগ্রাফ রেকর্ড প্রকাশ করেছে তার মধ্যে “পেইচিং আরহু সিন্ফোনি কনসার্ট ” ও “ল্যু সিছিংয়ের বেহালা একক সঙ্গীত ”শিরোনামে দুটো ফোনোগ্রাফ রেকর্ডের সবই সঙ্গীত কন্ডাক্ট করেছেন হু পিংস্যুই । তিনি যে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন-সঙ্গীত কন্ডাক্ট করেছেন তার মধ্যে আছে : “ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদযাপনী অনুষ্ঠান ”, “ লাল মহলের স্বপ্ন ”, “ সিয়াংইয়ুর উপপত্নী ” , “ লাল লন্ঠন উপরে টাঙানো ”, “ ছিন রাজবংশের প্রশস্তি” আর “ তিন রাজ্যের রোমান্স ” ইত্যাদি ।
হু পিংস্যুই অভিনায়কের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সক্ষম । পরিবেশনের সময় তিনি চীনের জাতিসত্তা বাদ্যযন্ত্রের অভিব্যক্তি এক নতুন পযায়ে উন্নীত করার প্রচেষ্টা চালান । জাতিসত্তা বাদ্যযন্ত্রী দলের মহড়া ও বাজানোকে এক নতুন পযায়ে উন্নীত করা এবং জাতিসত্তা সঙ্গীতের কন্ডাক্ট-শিল্পের মানকে বিশ্ব- সঙ্গীতের কন্ডাক্টশিল্পের সারিতে আনার জন্যে তিনি যে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন তা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিসত্তা সঙ্গীতের কন্ডাক্ট শিল্পে তার এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং তার সংগ্রামের এক লক্ষ্য ।
১৯৯৯ সালে তিনি চীনের কেন্দ্রীয় জাতিসত্তা সঙ্গীত দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি শহরে ভ্রাম্যমান পরিবেশনাকরেছেন এবং বিশ্ব চেলো মাষ্টার মা ইউইউর সঙ্গে সহযোগিতা করে কার্নেগি কন্সার্ট হলে চেলো কন্সার্টো “বসন্তের স্বপ্ন ” বাজিয়েছেন এবং অত্যন্ত সালফ্যমন্ডিত হয়েছেন ।
১৯৯৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পযন্ত সময়ের মধ্যে তিনি আমন্ত্রিত হয়ে সিঙ্গাপুরে গিয়ে সিঙ্গাপুরের চীনা সঙ্গীত দলের প্রথম সঙ্গীত-চীফ ইনস্পেক্টর ও মুখ্য কন্ডাক্টর হয়েছেন । তার কাযমেয়াদে তিনি দলটি নিয়ে পেইচিং,সাংহাই,সিয়ামেন ,তাইওয়ান প্রভৃতি অঞ্চলে গিয়ে পরিবেশন করেছেন এবং অত্যন্ত সাফল্যমন্ডিত হয়েছেন ।