লেই চেনপাং(১৯১৬-১৯৯৭)চীনের বিখ্যাত চলচ্চিত্র সঙ্গীতের সুরকার , রাষ্ট্রের এক শ্রেণীর সুরকার । তিনি চীনা সঙ্গীতজ্ঞ সমিতির সদস্য ,চীনা চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ সমিতির সদস্য, চীনা চলচ্চিত্র সঙ্গীত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান এবং ষষ্ঠ জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য ছিলেন ।
১৯১৬ সালের মে মাসে লেই চেনপাং পেইচিংয়ে জন্মগ্রহন করেন , তিনি মান জাতির লোক ।পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল বলে ছোটো বেলা থেকেই তিনি পেইচিং অপেরা শিখতেন । ৭-৮ বছর বয়সে তিনি কিছু পেইচিং অপেরা গাইতে পারতেন এমন কি তিনি আরহু নামক বাদ্যযন্ত্র দিয়ে পেইচিং অপেরা ও কিছু গানের সুর বাজাতে পারতেন ।১৯৩৯ সালের জানুয়ারী মাসে লেই চেনপাং জাপানে লেখাপড়া করতে যান। টোকিওতে তিনি জাপানের উচ্চ সঙ্গীত বিদ্যালয়ের সুর রচনা বিভাগের প্রস্তুতি কোর্সে ভর্তি হন ।আধা বছরের কম সময়ের মধ্যে লেই চেনপাং প্রস্ততি কোর্সের লেখাপড়া সম্পন্ন করেছেন বলে বিদ্যালয়ের প্রধান তাকে সরাসরি সুর রচনা বিভাগে ভর্তি হতে অনুমোদন দেন ।
১৯৪৩ সালে লেইচেনপাং মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন ।তিনি পরপর পেইপিং মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুল ও হুইচুং মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে সঙ্গীত শিক্ষকের কাজ করেন ।জাপ বিরোধী যুদ্ধে জয় লাভের পর তিনি অবসর সময়ে ৫০জনবিশিষ্ট এক অপেশাদার সিম্ফনি দল গঠন করেছেন ।
লেই চেনপাং চীনের প্রাচীন সঙ্গীত “শোকাকুল সুর ”অর্কিস্ট্রা সঙ্গীতের সুরে রূপান্তর করে অপেশাদার সিম্ফনি দলকে পরিবেশন করতে দিয়েছিলেন । এটা তার প্রথম সুর যে সুর প্রকাশ্যে পরিবেশিত হয় ।
১৯৪৯ সালের জুন মাসে লেই চেনপাং চীনা চলচ্চিত্র সঙ্গীতদলে সুর রচনার কাজে নিয়োজিত হন । এ থেকে তিনি চলচ্চিত্র জগতে পদার্পন করেন ।
১৯৫৫ সালের এপ্রিল মাসে লেই চেনপাং ছাংছুন চলচ্চিত্র স্টুডিওর সুরকার হন । এরপর তার রচনা এক নতুন স্তরে উন্নীত হয় ।ত্রিশাধিক বছরে তিনি শতাধিক চলচ্চিত্র সঙ্গীত রচনা করেছেন । তিনি জনসাধারনের মধ্যে গিয়ে লোকশিল্পীদের কাছ থেকে শিখেন ।এভাবে তিনি বিপুল গান ও বিভিন্ন জাতির স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সঙ্গীত রচনা করেছেন । এসব রচনায় তার নিজস্ব চারুশিল্প রীতি অভিব্যক্ত হয় । উদাহরণ,“পাঁচটা চিনহুয়া মেয়ে ”, “দিদি লিউ সানচিয়ে ”, “ বরফে আবৃত পাহাড়ে অতিথি ” , “ চিনপো জাতির মেয়ে” , “ লুসেং বাদ্যযন্ত্রে বাজানো প্রেমের গান”প্রভৃতি সংখ্যালঘূজাতির দৈনিক জীবন প্রতিফলিতকারী ছায়াছবির জন্যে তিনি যে সুর রচনা করেছেন সেসবই উপরোল্লেখিত সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ।
১৯৬০ সালের দ্বিতীয় শতফুল পুরস্কারে তিনি “দিদি লিউ সানচিয় “ছায়াছবির জন্যে যে সুর রচনা করেছেন তা শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পুরস্কার পেয়েছে। এর পর তিনি “বরফে আবৃত পাহাড়ের অতিথি”,“চি হোংছাং ”ও “যুবসম্প্রদায়”প্রভৃতি ছায়াছবির জন্যে তিনি যে সুর রচনা করেছেন সেগুলোও পৃথকপৃথকভাবে ১৯৬৪সালে ও ১৯৮০ সালে ছাংছুন ফিল্ম স্টুডিওর আয়োজিত প্রথম ও দ্বিতীয়“ক্ষুদ্র শতফুল পুরস্কারে”শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পুরস্কৃত হয়েছে ।
কয়েকডজন বছরে লেই চেনপাং যে ছায়াছবিগুলোর জন্যে সুর রচনা করেছেন সেগুলোর মধ্যে আছে,“তুং ছুনরুই”,“মালান ফুল ফুটে”,“লুসেং বাদ্যযন্ত্রে বাজানো প্রেমের গান”,“কুসুমিত ফুল ও পূর্ণচন্দ্র”,“পাঁচটা চিনহুয়া মেয়ে”,“চিন ইয়ু-চি”,“তাচি ও তার বাবা”,“দিদি লিউ সানচিয়ে”,“বরফে আবৃতপাহাড়ের অতিথি”,“চিনপো জাতির মেয়ে”,“বন্যা প্রতিরোধে সংগ্রামরত লোকেরা”,“ইস্পাত-দৈত্য”, “জলমগ্ন শিলা”, “চি হোংছাং”, “ গভীর ও নির্জন উপত্যকায় প্রেমের গান” ইত্যাদি ইত্যাদি । তাছাড়া তিনি “ চার বংশের পরিবার” প্রভৃতি টিভি নাটকের সুর রচনাও করেছেন ।
[
সঙ্গীত উপভোগ
]:
《ফুল কেন এত লাল হয় 》
|