ওয়াং লোপিন (১৯১৩-১৯৯৬ ) । তিনি পশ্চিম চীনের বিখ্যাত লোকসঙ্গীতের প্রচারক , তাকে আধুনিক সঙ্গীতের রাজা বলা হত । ১৯১৩ সালের জানুয়ারী মাসে পেইচিংয়ে ওয়াং লোপিনের জন্ম । ১৯৯১ সালে তিনি প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হন ।এসময় “নব সংস্কৃতি আন্দোলন”চলছিল , সুতরাং উয়াং লোপিন অনেক স্কুল সঙ্গীত ও গান শিখেছেন এবং পাশ্চাত্ত্যের ও জাপানের কিছু সুর শিখেছেন । ১৯২৪ সালে ওয়াং লোপিন পেইচিং থুংসিয়েন জেলার একটি গির্জার মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হন,তিনি গির্জার গায়ক দলে পাশ্চাত্ত্যের সমস্বরে গাওয়ার পদ্ধতি শিখেছেন এবং কর্ড সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন ।১৯৩১ সালে ওয়াং লোপিন পরীক্ষায় পাস করে পেইপিং শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ের কলা-শিল্প বিভাগে ভর্তি হন , তিনি রুশ বংশোদ্ভূত শিক্ষক মাডাম হোরওয়াটের কাছে ভোক্যাল সঙ্গীত ও পিয়ানো শিখেন এবং ধারাবাহিকভাবে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহন শুরু করেন ।
১৯৩৭ সালে ওয়াং লোপিন বিখ্যাত লেখিকা তিংলিনের নেতৃত্বাধীন উত্তর-পশ্চিম চীনের রণক্ষেত্রের পরিসেবা দলে যোগ দেন এবং দলের সঙ্গে গুলিবর্ষণ উপেক্ষাকারী রণক্ষেত্রে পরিসেবার কাজ চালান । এ সময়কালের সংগ্রামী জীবনযাপনে ওয়াং লোপিন “ কাপড় ধুওয়ার গান”, “গ্রামবাসীর রণক্ষেত্রেযাত্রা ”. “ফোংলিং ফেরী-বন্দরের সঙ্গীতধ্বনি”প্রভৃতি গান রচনা করেছেন ।১৯৩৮ সালের বসন্তকালে উত্তর-পশ্চিম চীনের রণক্ষেত্রের পরিসেবা দল উচ্চপদস্থকর্মকর্তারনির্দেশানুযায়ী লেখক সিয়াও জুন কবি সাই খ্য,সঙ্গীতকার ওয়াং লোপিন ও চু নানসিংকে সিনচিয়াংয়ে কাজ করতে পাঠায় ।পশ্চিম অঞ্চলে ওয়াং লোপিন বিপুল পরিমানের লোকসঙ্গীত শুনেছেন । লিরিক ও সুন্দর সুর শুনে ওয়াং লোপিন সুন্দর সঙ্গীত-ধ্বনীতে নিমজ্জিত হন । উইগুরজাতির একজন ড্রাইভারতাকে “তাবানছেন ”নামে থুলুফানের এক লোকসঙ্গীত শোনালেন ।সুন্দর ও চঞ্চল সুর ওয়াং লোপিনকে গভীরভাবে আকর্ষণ করেছে । সঙ্গে সঙ্গে ওয়াং লোপিন গানটির সুর লিখে নিলেন এবং বন্ধুর সাহায্যে গানের কথা অনুবাদ করেন ।তিনি গানটি সংশোধন করে “ঘোড়ার গাড়ির ভাই ”নাম দেন ।তার সম্পাদনায় গানটি আরও সুন্দর হয়েছে । এটা ওয়াং লোপিনের গান রচনার এক সন্ধিক্ষন । গানটি ওয়াং লোপিনের সম্পাদিত প্রথম সংখ্যালঘূজাতির গান ।
এর পর থেকে ওয়াং লোপিন যেখানে যান সেখানে তিনি সুযোগ সৃষ্টি করে লোকসঙ্গীত সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন । অনেক বছরের অধ্যবসায়ের প্রচেষ্টা চালানোর পর ওয়াং লোপিন উইগুরজাতির “তোমার ঘোমটা উঠিয়ে নাও ”,“কাশগর নৃত্য সঙ্গীত ”,“যৌবনকালের নৃত্য সঙ্গীত ”,“আলামু খান ”,“আধা চাঁদ ওঠে ”,“ইরারা”,কাজাখজাতির “উদ্দেশ্যহীন রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর গান ”, “আমি কাল পযন্ত তোমার আপেক্ষা করি ”, “ ভেড়ার পালের মধ্যে তোমাকে মনে করার লোক শুয়ে থাকেন ”, “মাইরা”, “ সন্ধ্যার রান্নার ধোঁয়া ” , “ দু-তারা ও মারিয়া ” প্রভৃতি বিভিন্ন সংখ্যালঘূজাতির সুন্দর সুন্দর গান সংগ্রহ করেছেন। এই সব সুন্দর গান এখনো সমাদৃত ।
লোকসঙ্গীত সংগ্রহের ভিত্তিতে ওয়াং লোপিন আনেক লোকসঙ্গীত রি-মিক্সও করেছেন । যেমন “সেই অনেক দূরের জায়গায় ”গানটি ওয়াং লোপিন কাজাখজাতিরলোকসঙ্গীত “পবিত্র কপাল ”গানের নতুন সংস্করণ ।“সেই অনেক দূরের জায়গায় ”গানটি সবপ্রথমে কানসু ও ছিংহাই প্রদেশে এবং তার পর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে । কয়েক ডজন বছর ধরে গানটি জনসাধারণের সমাদর পেয়ে আসছে ।
[
সঙ্গীত উপভোগ
]:
《যৌবনকালের নৃত্য সঙ্গীত》
|