লিউ ওয়েন-চিন

       লিউ ওয়েন-চিন চীনের বিখ্যাত সুরকার । ১৯৬১ সালে তিনি চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইনস্টিটিউট থেকে স্নাত্তক হন । পরপর তিনি কেন্দ্রীয় জাতিতাত্ত্বিক বাদ্যযন্ত্রী দলের নেতা , প্রধান শিল্প নির্দেশক এবং চীনের অপেরা ও নৃত্য-নাট্য ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক ছিলেন , বর্তমানে তিনি চীনের অপেরা ও নৃত্য-নাট্য ইনস্টিটিউটের শিল্প-পরিচালক । তিনি এখন চীনা সঙ্গীতশিল্পী সমিতির সদস্য , গীতিকর কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান , চীনের সঙ্গীত রচনা স্বত্ব সমিতির স্থায়ী সদস্য , চীনের জাতিতাত্ত্বিক অর্কিস্ট্রাল সঙ্গীত সমিতির উপপরিচালক । ২০০১ সালে তিনি আমন্ত্রিত হয়ে দক্ষিন কোরিয়ার কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত ইনস্টিটিউটের প্রফেসার হন ।  

  যৌবনকালে লেখাপড়ার ফলাফল ভাল বলে লিউ ওয়েন-চিন কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইনস্টিটিউটের সেরা ছাত্র পুরস্কার পেয়েছেন ।পড়াশুনাকালে তার রচিত প্রথম সঙ্গীত“উত্তর হোনান গাথা”ও “তিনগিরিখাতের কল্পনা ”দুটি সুর আরহু ও পিয়ানোর সমন্বিত দুটি শ্রেষ্ঠ সুর বলে আখ্যায়িত হয় ।১৯৯৩ সালে “উত্তর হোনান গাথা”বিংশশতাব্দীতে চীনা বংশদ্ভূত বিদেশীদের ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীত বিবাচিত হয় ।১৯৯৯সালে “ তিনগিরিখাতের কল্পনা ”কে “নয়া চীনের মঞ্চ-শিল্প ও শ্রেষ্ঠ টিভি-নাটক ও চলচ্চিত্র”শিরোনামে চীনের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণে নিবাচিত হয় ।১৯৮২ সালের মে মাসে “মহাপ্রাচীরের অহেতুক কল্পনা ” শিরোনামে আরহু কনসার্ট “সাংহাইয়ের বসন্ত ” সঙ্গীতানুষ্ঠানে সফল হয়েছে এবং তৃতীয় জাতীয় সঙ্গীত-রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম শ্রেণীর পুরস্কার পেয়েছে ।বহু বছর ধরে “ মহাপ্রাচীরের অহেতুক কল্পনা ” সুরটি গোটা দেশের হংকং , ম্যাকাও ও তাইওয়ান সহ অনেক প্রদেশ ও শহরে এবং ইউরোপ, আমেরিকা ওএশিয়ার দশ-বারোটি দেশে বেশ কয়েকবার পরিবেশিত হয়েছে এবং আন্তরিক সমাদর পেয়েছে । 

  চল্লিশাধিক বছর ধরে লিউ ওয়েন-চিন জাতীয় বাদ্যযন্ত্রের জোরালো সুর , ভোক্যাল-সঙ্গীত এবং অন্য আকারের শতশত সঙ্গীত রচনা ও রূপান্তরিত করেছেন ।তাছাড়া নৃত্য , নৃত্য-নাটক, ধারাবাহিক টিভি নাটকের জন্যে সুর দিয়েছেন । তিনি “ চীনা বিপ্লবের গাণ” শিরোনামে বৃহদাকারের সঙ্গীত-নৃত্য মহাকাব্যের সঙ্গীত সৃষ্টির কাজে অংশ নিয়েছিলেন । 

  ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতমহল লিউ ওয়েন-চিনকে“লিউ থিয়েনহুয়ার পর ব্যাপকতম প্রতিনিধিত্বসম্পন্ন সুরকার ”বলে আখ্যায়িত করে ।১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হংকংয়ের চুংইয়ো বাদ্যযন্ত্র দল বিশেষভাবে “লিউথিয়েনহুয়া—লিউ ওয়েনচিন ”শিরোনামে এক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে । 

  উত্তর আমেরিকার চীনা সঙ্গীত গবেষনা সমিতি“chese music ”লিউ ওয়েনচিনকে “চীনেরমূলভূভাগে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী সুরকার ” বলে আখ্যায়িত করে এবং ধারাবাহিক প্রবন্ধ প্রকাশ করে তার রচিত জাতীয় সঙ্গীত বিশ্লেষণ করে ।  

  লিউ ওয়েনচিন বহুবার আমন্ত্রিত হয়ে ইউরোপ , আমেরিকা আর এশিয়ার কয়েক ডজন দেশ এবং চীনের হংকং , ম্যাকাও ও তাইওয়ান অঞ্চলে সফরকরেন । তিনি বহুবারহংকং, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানের চুংইয়ো , হুয়াইয়ো আর কোইয়ো বাদ্যযন্ত্রীদলের তার জন্যে আয়োজিত ব্যক্তিগত বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিচালনা করেন । তিনি জাপান আর দক্ষিন কোরিয়ার সুরকারের সঙ্গে মিলে এশিয়া বাদ্যযন্ত্রী দল প্রতিষ্ঠা করেন ।  

  লিউ ওয়েনচিনকে চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় শ্রেষ্ঠ অবদানকারী শিল্পী নিবাচিত করে । তিনি চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের বিতরণ করা সম্মানজনক সার্টিফিকেট ও সরকারের বিশেষ ভাতা গ্রহন করেন ।  

   [ সঙ্গীত উপভোগ ]《মহাপ্রাচীরের অহেতুক কল্পনা》