চাইম ঘন্টা হচ্ছে চীনের প্রাচীনকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ মারার বাদ্যযন্ত্র এবং ঘন্টার অন্যতম । চাইম ঘন্টা ছোট বড় কিছু সংখ্যক ঘন্টা সুশৃংখলভাবে কাঠের ফ্রেমের উপর টাংগিয়ে এক গ্রুপ বা কয়েকটি গ্রুপ নিয়ে গঠিত । প্রতিটি ঘন্টা থেকে বেরুনো সুর আলাদা আলাদা রয়েছে । যুগের ভিন্নতার কারণে চাইম ঘন্টার আকারো নানা ধরণের । তবে ঘন্টার গায় সুন্দর ছবি আঁকা আছে । সাড়ে ৩ হাজার বছর আগেকার শাং আমলে চীনে চাইম ঘন্টার উদ্ভব হয় । তবে তখনকার চাইম ঘন্টা অধিকাংশ হ্মেত্রে ৩টি ঘন্টা নিয়ে গঠিত হতো । পরে যুগের বিকাশের সংগে সংগে ঘন্টার সংখ্যাও বাড়তে থাকে । প্রচীনকালের চাইম ঘন্টা সাধারণত দরবারে বাজানো হতো । জনসাধারণের মধ্যে তার প্রচলন কম ছিল । যুদ্ধ অভিযান , রাজাদের সংগে সাহ্মাত আর বলিদানের তত্পরতায় চাইম ঘন্টা বাজানো হতো ।
চীনের প্রচীনকালে চাইম ঘন্টা ছির উচ্চতর স্তরেরসমাজের জন্যে বিশেষভাবে ব্যবহার্য্য বাদ্যযন্ত্র। তা ছিল স্তর আর হ্মমতার প্রতীক । আধুনিককালে চীনের ইয়ুন নান , শান সি , হু পেই প্রভৃতি জায়গার প্রাচীনকালের রাজা আর অভিজাত পরিবারের কবর থেকে পর পর বহু প্রচীন চাইম ঘন্টা উদ্ধান করা হয় । সেগুলোর মধ্যে হু পেই প্রদেশের সুয়ে সিয়ান জেলার চেন হৌ ইর কবর থেকে উদ্ধানকৃত চেং হৌ ই চাইম ঘন্টা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য । এই চাইম ঘন্টা নির্মাণের কলাকৌশল অত্যন্ত সুন্দর ।
তার সুরের হ্মেত্র ৫টি অষ্টক ধ্বনিতে উন্নীত হতে পারে । সুরের স্তরের কাঠামো আধুনিক সি সুরের ৭টি সুরের স্তরের কাছাকাছি । তাছাড়া এই চাইম ঘন্টায় লেখে রয়েছে সংগীতের ছন্দের সংগে জড়িত ২৮০০ শব্দবিশিষ্ট লিখন । এতে সংগীত সম্পর্কিত অনেক পরিভাষা লিপিবদ্ধ রয়েছে । তাতে চীনের প্রচীন সংগীত সংস্কৃতির উন্নত মান প্রমাণিত হয় । চেং হৌ ই চাইম ঘন্টা হচ্ছে বর্তমানে চীনে উদ্ধারকৃত সংখ্যাগরিষ্ঠ, বৃহতম মাত্রাবিশিষ্ট আর সুরহ্মিত চাইম ঘন্টা । তাকে মানব জাতির সাংস্কৃতিক ইতিহাসে একটি বিস্ময় । চাইম ঘন্টা দিয়ে বাজানো সংগীত উদাত্ত আর পরিষ্কার এবং মনোরম আর শ্রুতিমধুর । তা দিয়ে গানের মত ছন্দ বাজানো যায় । তাই তার অন্য নাম হচ্ছে গানের ঘন্টা ।
১৯৮২ সালে উ হান জাতীয় বাদ্যযন্ত্র কারখানা এবং উ হান সূহ্ম উপচার নির্মাণ কারখানা চেং হৌ ই চাইম ঘন্টার অনুকরণে একটি নতুন চাইম ঘন্টা তৈরি করেন । মঞে অভিনয় আর আধুনিক সংগীতের চাহিদা অনুসারে এই নতুন চাইম ঘন্টাকে কতকগুলে সংস্কার করা হয় । গোটা চাইম ঘন্টা ২৪টি ঘন্টা নিয়ে গঠিত । প্রতিটি ঘন্টা দিয়ে দুটো সুর বাজানো যায় এবং ৩টি সারিতে টাংগানো হয় ।
চেং হৌ ই চাইম ঘন্টা দিয়ে বাজানে সুর
《ছু শাং》সুরে চীনের প্রাচীন কবি ছু ইউয়ান নির্বাসিত হোয়ার সময়ে ছু ইউয়ানের বেদনা আর রোষের ভাব প্রকাশ পায় ।
|